দ্রুতই খুলবে ফেসবুক!
২৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০
সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক দ্রুতই আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনও (বিটিআরসি) এ বিষয়ে প্রস্তুত রয়েছে। যদিও গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিটিআরসির কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশ পাওয়া মাত্রই ফেসবুক খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও বিটিআরসির খুলে দেওয়ার অপেক্ষায় না থেকে অনেকেই বিকল্প পথেই ফেসবুক ব্যবহার করছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বিকল্প পথে যারা ফেসবুকে ঢুকছে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে।
জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে গত ১৮ নভেম্বর সরকার ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ট্যাঙ্গো, লাইন, হ্যাংআউটস, ইউ-স্ক্রিন টিভি, কমোয়া ও কমোসহ সামাজিক যোগাযোগের ১০টি মাধ্যম বন্ধের নির্দেশনা দেয়। মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর নিয়ে নাশকতার আশঙ্কায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনা দেয়, যা কার্যকর করে বিটিআরসি। একপর্যায়ে ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৮ নভেম্বর দুপুরে সারা দেশে দেড় ঘণ্টা ইন্টারনেট সংযোগ ছিল না। পরে ইন্টারনেট চালু হলেও ফেসবুকসহ অন্য মাধ্যমগুলো বন্ধ রাখা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের কারণে ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল বলে দাবি করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পেলে ফেসবুকসহ অন্য অ্যাপগুলো খুলে দেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
ইতিমধ্যে ফেসবুক খুলে দেওয়ার আভাস পাওয়া গেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা কেটে গেছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতিও স্বাভাবিক রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বক্তব্যেও উঠে এসেছে বিষয়টি। গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী জানান, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তাই বন্ধ থাকা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো শিগগিরই খুলে দেওয়া হবে। বুধবার লালমনিরহাটে গ্রামীণফোনের থ্রিজি সেবার উদ্বোধন করতে গিয়ে একই আভাস দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
তবে এ বিষয়ে বিটিআরসি এখনো কোনো নির্দেশ পায়নি। বিটিআরসির সচিব ও মুখপাত্র সরওয়ার আলম কালের কণ্ঠকে জানান, বিষয়টি নিয়ে কমিশনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে এখনো নির্দেশনা আসেনি। সরকারের নির্দেশনা পাওয়া মাত্র তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, ফেসবুক দ্রুত খুলে দেওয়া হলেও অন্য অ্যাপগুলো আরো কিছুদিন বন্ধ রাখা হবে। কারণ নাশকতার পরিকল্পনায় ওই মাধ্যমগুলো বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা সরকারের নজরদারির বাইরে থেকে যায়। তাই এ বিষয়ে সরকার আরো সময় নিতে চায়। একই সঙ্গে ফেসবুকের ওপর নজরদারি বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশে ফেসবুকের অফিস চালুর জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ চলছে বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।