খালাতো ভাইয়ের সাথে বেশি আলাপ জমানোয় বউকে খোঁচা মেরে দুটো কথা শোনালেন আবুল সাহেব। তারপর থেকে বউও ওৎ পেতে আছে কখন উনাকে অফিসের সুন্দরি কলিগকে জরিয়ে দুটো কথা শোনানো যায়।
এর মধ্য বিরতিতে ঝাল ঝাড়লেন কলেজ ফেরত মেয়ে লিসার উপর- “বাসায় ফিরতে এত দেরী হইল কেন্? খুব পাংখা গজায় গ্যেছে না? ভাবছস কোন খবর রাখি না? ” বেচারী এদিকে সারাদিন পরীক্ষার সাজেশন আর নোট জোগারে ব্যস্ত ছিল। মায়ের কথায় তার জেদ চেপে যায়;বলে “ কিছু না কইরাও যখন সন্দেহ কর তেইলে কইরাই দ্যেখামু”। ফোন দেয় তার পিছনে সদ্য ঘুরঘুর করা মকবুলকে। মকবুলের আবার আজি দুবাই যাবার ভিসা হয়েছে। সেই আনন্দে সবাইকে ফোন করে খবরটা দিচ্ছে । ফোন ওয়েটিং পেয়ে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে লিসা।
রাতে বাড়ী ফিরে তপু দেখে মা ভাত রাধে নাই, বাসার কেউ কারো সাথে কথা বলে না। এই গুমোট পরিস্থিতি থেকে একটু সস্তি পেতে ফেসবুকে ঢ়ুকলো, তার প্রানপাখি সীমা অনলাইনে। ‘হাই বাবু' লিখল; কোন রিপ্লাই নাই। পাঁচ মিনিট পর ‘হ্যালো জান’ লিখল; কোন রিপ্লাই নাই। তার পাঁচ মিনিট পর লিখলো ‘কুচিপুচি তুমি কি বিজি?’ তাও কোন রিপ্লাই নাই। তার পাঁচ মিনিট পর লিখলো, এত ভাব নাও কেন? কার সাথে চ্যটিং কর? দুনিয়ার সব মেয়েই ছলনাময়ী। যাও ব্রেকআপ। সারারাত মেয়র নামের পাশের সবুজ বাতির দিকে চেয়ে ঘুমই হলনা। সকালের দিকে চোখে ঘুম লেগে উঠতেই প্রেমিকার ফোন- ভ্যা.... জানু তুমি আমার সম্পর্কে এমনটা ভাবতে পারলে? আমি তো অনলাইন থেকেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ভ্যা.... । ঠিক আছে, তুমি যখন বলেছ ব্রেকআপ তাহলে ব্রেকআপ, হুহ্ । মেয়েকে কোন কিছুতেই কিছু বোঝানো যায় না । তারপর বলে, ‘বাবু আমি তোমাকে ভালবাসি বলেইতো হারানোর ভয় পাই। তাই তো এমন করি।’এই কথায় মেয়ে গলে যায়। আমি রাজি আছি এক শর্তে, রিনিকে তোমার আনফ্রেন্ড করে দিতে হবে। বাবু বিশ্বাস করো ওর সাথে আমার কিচ্ছু নেই আমরা শুধু বন্ধু । তাহলে তোমার পাসওয়ার্ড দাও। তুমি তো আগে এমন ছিলে না? জা..ন ‘আমি তোমাকে ভালবাসি বলেইতো হারানোর ভয় পাই, তাই তো এমন করি। ’ এমন কথার পর তো আর না দিয়ে থাকা যায় না । অগত্যা দিতেই হল।
এদিকে সীমা আবার ফেসবুক সেলিব্রেটি। নিজের সন্দেহ দোষ ব্যকাপ দেয়ার এই মহাওষুধি ডায়লগ তার খুব মনে ধরে যায়। সে “ যে আপনাকে কখনো সন্দেহ করে না সে আপনাকে ভালইবাসেনা ” এই টাইপ স্ট্যটাস দিয়ে দেয়। সেই স্ট্যটাস লাইক, শেয়ার, কপিপেষ্ট এসব হয়ে সেই 'মকবুলের' চোখে পড়ে। মকুল আবেগে আপ্লুত হয়ে যায়। তাহলেকি লিসাও আমাকে ... ! আবার নতুন উদ্দমে লিসাকে পটাতে লেগে যায় সে। সফলও হয়।
বিযের পর প্রথম মকবুলকে অফিসে পাঠাচ্ছে লিসা। হুট করে তার মনে হল বাবার অফিসের সুন্দরি কলিগকে নিয়ে না বাবা-মায়ের মধ্যে অনেক ঝমেলা হয়েছিল, ওকে চোখে চোখে রাখতে হবে ....... ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৮