somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিএসএফআইসি’র উৎপাদিত প্যাকেট জাত আখের চিনি বাজারজাত জাতে চাই সুষ্ঠু বিপণন কার্যক্রম।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চিনি শিল্পকে লাভজনক করতে সরকার বেশ কিছু সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং তার বাস্তবায়নও শুরু করেছে। যার একটি হল, “নর্থ বেঙ্গল চিনিকলে অমৌসুমে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং 'র'-সুগার থেকে বছরে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন সুগার রিফাইনারি স্থাপন প্রকল্প যার কাজ এগিয়ে চলছে। আরেকটি প্রকল্প হল- ঠাকুরগাঁও চিনিকলে পুরনো যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপনের পাশাপাশি সুগারবিট থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে চিনি উৎপাদনের প্রকল্প বাস্তবায়ন।
গত ২৯ মে বিএসএফআইসি’র উৎপাদিত প্যাকেট জাত আখের চিনি বাজারজাতের উদ্যোগ নেয় প্রতিষ্ঠানটি। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু রাজধানীর দিলকুশায় চিনি শিল্প ভবনে সেই বিক্রয় কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

যদিও সরকার তখন বলেছে সবে বরাত ও রমজানে ন্যায্যমূল্যে মানসম্পন্ন চিনি সরবরাহ নিশ্চিত করতেই প্যাকেট জাত আখের চিনি বিক্রির এই উদ্যোগ। কিন্তু আমাদের কথা হল ভয়াবহ রুগ্ন হয়ে পরা এই শিল্পটিকে বাচাতেই তো বিএসএফআইসি’র উৎপাদিত প্যাকেট জাত আখের চিনি বাজারজাতের জন্য সুষ্ঠু বিপণনের ব্যবস্থা করা দরকার।

আমাদের দেশে সরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের মুল সমস্যাই বিপণন ব্যবস্থায়। আমাদের মানসম্পন্ন পন্ন রয়েছে আমরা তার সঠিক প্রচারণা চালাতে পারি না। আমরা আমাদের পণ্যের সঠিক বিপণন করিনা বা করতে পারি না। ফলে একেকটি প্রকল্প ভেস্তে যায়। আসলে একে বলা উচিৎ একেকটি প্রকল্পের গলা চেপে ধরে হত্যা করা হয়।

বাজারে একই পণ্যের হাজারটা ব্র্যান্ড থাকবে। তার মাঝেই আমার ব্র্যান্ড মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। সিদ্ধান্তটি এমনই থাকা উচিৎ। বিএসএফআইসি’র তো অর্থের সমস্যা নেই তাদের উচিৎ ছিল এই পণ্যটির আকর্ষণীয় টিভিসি তৈরি করে প্রতিটি টেলিভিশন চ্যানেলে বেশী বেশী প্রচার করা। তারা টিভিসি ঠিকই তৈরি করেছে যা মাত্র একবারই কোন একটি চ্যানেলে আমি দেখেছিলাম।

যে কারণে অধিকাংশ মানুষ জানেনই না বিএসএফআইসি’র উৎপাদিত আখের চিনি বাজারজাত করা হচ্ছে। অথচ এই চিনিটির বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বহুদিন যাবত আখের চিনির বাজারে অনুপস্থিতির কারণে এখন আর এই চিনিটির খোঁজও কেউ করেনা এটা ঠিক, কিন্তু তার মানে এই নয় যে এর ভোক্তা নেই। আসল কথা হল ভোক্তার কাছে তার উপস্থিতির খবরটি পৌঁছুতে তো হবে?

একজন বিপণন কর্মী হিসেবে আমি নিজে যেটা জানি তা হল, একটি নতুন পণ্য বাজারজাত করতে হলে প্রথমেই বাজারে তার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হয়। সেটা যদি পঞ্চাশ ভাগ সম্ভব হয় তার ফলও হবে পঞ্চাশ ভাগ। আর তার পরেই যেটা জরুরী তা হল পণ্যের ডিসপ্লে। যেখানে পণ্য নিজেই নীরব বিপণন কর্মীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। সব শেষে ডেপথ তৈরি করে ফেলা যাতে সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী পন্য প্রবেশের সুযোগই কমে যায়। অথচ এই চিনিটি বাজারজাতের ক্ষেত্রে এমন কোন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে মনে হল না।

এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ করার মত আর তা হল ফরমালিন যুক্ত মাছ বা ফলে যেমন মাছি বসে না ঠিক তেমনি বাজারে বর্তমানে প্রচলিত চিনির উপরেও মৌমাছি বসে না। অথচ আখের চিনির একটি বস্তা খুলে রেখে দেখুন সেখানে কি পরিমাণ মৌমাছির আনা গোনা হয়। প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি বলেই যে আখের চিনির উপরে মৌমাছিরা নির্ভয়ে বিচরণ করে সেটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

এই বিষয়টিও উৎপাদককে ভোক্তার নিকট তুলে ধরতে হবে। বিএসএফআইসি’র এমন একটি স্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাওয়া উচিৎ যেখানে তারা বলবে, আসুন আমরা স্বাস্থ্য সচেতন হই দেশীয় চিনি ব্যবহার করি। আসুন আমরা দেশপ্রেমী হই কৃষি নির্ভর অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করি। দেশের উন্নয়নে অবদান রাখি।

বিএসএফআইসি যদি বিপণন খরচ ছারাই এই পন্যটি বাজারজাত করতে চায় তাহলে তো অন্তত ব্যবসায়ীদের আকর্ষণীয় মুনাফার ব্যবস্থা করবে, যাতে তারা স্ব উদ্যোগেই পণ্যটি বিক্রির চেষ্টা করে। সম্ভবত তারা সে উদ্যোগটিও গ্রহণ করেন নি কারণ আজ পর্যন্ত কোন দোকানদারের কাছেই এই চিনিটি নাম ধরে না চেয়ে পাই নি। তাদের আচরণে স্পষ্টতই বোঝা যায় এটা তারা বিক্রিতে আন্তরিক নন। আর ব্যবসায়ীর আন্তরিকতা যে লাভের সাথে সম্পর্কযুক্ত সেটা কে না জানেন।

কোন বিপণন ব্যবস্থা ছারাও এই পণ্যটি টিকে থাকবে। অনেকটা মিল্ক ভিটা তরল দুধের মত। যা এ দেশের মানুষের দেশপ্রেমের একটি উদাহরণও বটে। তবে সেটা একটি প্রতিষ্ঠানকে খুব বেশী যে লাভজনক অবস্থানে নিয়ে যেতে সক্ষম হয় না। তার প্রমান তো মিল্ক ভিটা নিজেই। সব শেষে বলব, চিনি শিল্পকে রাষ্ট্রায়ত্ত সবচেয়ে বড় শিল্পে পরিণত করার এটা একটি অনেক বড় সুযোগ। আর সেই সুযোগটি কাজে লাগাতেই প্রয়োজন সুষ্ঠু বিপণনের ব্যবস্থা গ্রহন। যার মাধ্যমে প্যাকেট জাত আখের চিনি বাজারে একটি ভাল অবস্থান তৈরি করে নিতে সক্ষম হবে।

[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×