('মধুশালা' হরিবংশ রয় বচ্চন - এর প্রসিদ্ধতম কবিতা। এই বিখ্যাত হিন্দি কবি বলিউড অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন-এর বাবা)
অনুবাদঃ ভানু ভাস্কর
সাকি তো নয় সন্ন্যাসিনী হাতের সুরায় গঙ্গার জল,
জপমালার তপস্যাতে ঘুরতে থাকে পাত্র সকল।
‘একটু পিয়ো, আরও একটু’ -মন্ত্রমধুর এ বাক্যালাপ,
দেবদূতেরা আসতে থাকে মধুশালায় শুনতে ও জপ।
বছর ঘুরে একটি দিনেই হঠাৎ জ্বলে হোলির আলো,
সেদিন শুধু আলোর রাশি এই পৃথিবী জ্বললো ভালো।
কিন্তু ওরে পথহারা প্রাণ আয় না মনে যে দিন চাহে,
পানশালাটা হোলির রঙে দিন ও রাতে নৃত্য গাহে।
ওষ্ঠাধরের আর কি উপায় যা ছুঁতে যায় ভাবছে সুরা,
হাতের কাছে আসলে যেন সকলি পানপাত্র তারা।
চোখের নেশায় যাকেই দেখি আর কিছু নয় বোধ হয় সাকি,
পানশালাতেই জগত জীবন কি এক নেশায় ভাবতে থাকি।
হে সুন্দর, আয়ত মুখের ঝলক যেন মুক্তো দানা,
মানসরূপের জন্য তোমার শরাব পিতে নেই আর মানা।
আমিই হলাম শরাব-সাকি নিজেই হন্যে মদ পিয়াসী,
আমার মাঝেই বসত করে পানশালাটা-ই দিবস নিশি।
শরাব দিয়ে অল্প ক’দিন এখন সেও লজ্জা পায়,
প্রাণের সাকী একটু এসেই লুকায় আবার খড়-গাদায়।
রসের অনেক শিল্পকলার বিদায় ঘন্টা বাজলো বুঝি,
মদ্যশালার নিয়মকানুন ছলচাতুরিটা-ই কি পূঁজি?
ছোট্ট আমার এই জীবনে কি-ই বা প্রেম আর কতই সুরা,
জন্ম হতেই মৃত্যু এলো আসার আগেই ফির যাত্রা।
এই জীবনের অভিষেক যার বিদায় সুরেই রইলো লেখা,
পানশালাটার দরজা তেমন খোলার আগেই বন্ধ করা।