somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার প্রেমে পড়ার কাহিনী পর্ব - ১.

২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ভিটামিন সি; মোটেও লোক ভালো নই। কি বিশ্বাস হলো না তো? আচ্ছা বিশ্বাস করাচ্ছি। এক ফোঁটা লেবুর রস আপনার ধারে-কাছে থাকা কোন বাচ্চার মুখে দিন তো, দেখেন তো কেমন তার অভিব্যাক্তি হয়?? কি বুঝলেন? আমি আসলেই লোক ভালো না। ভালো না হলেই যে জীবনে প্রেম আসবে না এমন তো নয়। প্রেম প্রেমের মতো। সে তার আপন কক্ষপথে আপন গতিতে চলতে থাকে। কোন কোন প্রেম চলে সরলরেখায়, কোনটা আবার বক্র রেখায়। তো আমার জীবনের প্রথম প্রেম এসেছিলো সরল রেখায়। সেই গল্পই তো লিখছি। মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

কাকাতো, ফুফাতো, মামাতো, খালাতো ভাই-বোন ছিলাম একদঙ্গল। একসাথে ফুটবল টিম তো হবেই তারপরে আবার অন্য কোন টিমও গঠন করা যাবে আর দুই-একজন আউট থেকে নিলে। আমার বাবার বাড়ি আর দাদার বাড়ি পাশা-পাশি দুটি ইউনিয়নে। হেটে যেতে লাগে ৪ মিনিট। কলেজে গেলে কাকাদের উঠোন দিয়েই যেতে হয়। কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েই কেমন যেন মনের দখিনা দুয়ার খুলে গিয়ে হিমেল হিমেল একটা সুখানুভুতি মনের কোন দিয়ে বয়ে চলল। কি যেন একটা নেই নেই ভাব মনের কোনে অবস্থান করে আছে। ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। এরই মধ্যে অনেক উপন্যাস পড়ে ফেলা হয়ে গেছে আর বাংলা, হিন্দী সিনেমা তো আছেই। দু চারজন সিনিয়র ভাইয়া-আপুর জটিলজ প্রেম কাহিনী ও জানা হয়ে গেছে। তখনও মোবাইল ফোনের বিস্ফোরণ গ্রাম বাংলায় ঘটে নি। তাই তারা চিঠি-পত্তরের মাধ্যমে অথবা আমাদের মতো বিশ্বস্ত পিয়নের মাধ্যমে তাদের মনের উষ্ণ আবেগ বিনিময় করতো। আমাদের দেখে যাওয়া বা দু/চার/দশ টাকা বকশিস নেয়া ছাড়া আর কোন ফায়দা ছিল না। তো যা বলছিলাম, দাড়ি-গোঁফ ভালোভাবে না উঠলেও জিলেট ব্লেড চালিয়ে দিয়েছি যাতে করে তাদের আত্মপ্রকাশের গতি ত্বরান্বিত হয়। একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখি মাথার চুলও ব্যাক ব্রাশ হয়ে গেছে। যাহ, বড় তাহলে হয়েই গেছি। তবে গায়ে গতরে না, টিঙটিঙে গড়নের হালকা পাতলা বডি, লম্বায় মাশাল্লাহ। তার উপর একখান ফনিক্স সাইকেল চালাই। ধানক্ষেত, কলাক্ষেত, মুলাক্ষেত, সবজিক্ষেত আর ক্ষেতের আইল সবকিছুর উপর দিয়েই আমার দ্বি-চক্র যান আপন গতিতে চলে। গ্রামে এমন একখান দ্বি-চক্রযান যার আছে সে-ই নিজেকে হিরো মনে করে, তো আমি ভাবতে দোষ কি? ভালো রেজাল্ট করার কারণে এলাকার ভাবী, কাকা, কাকী বা ভাই সম্পর্কের সবাই আমাকে ঘিরে ধরলো তাদের ছেলে মেয়েকে পড়ানোর জন্য। আমি সবাইকে না করে দিলাম। কিন্তু একদিন আমার কাকা বললো বিকেলে তো বসেই থাকিস। তো বাড়িতে মেয়েগুলিকে তো একটু অঙ্ক-টঙ্ক দেখিয়ে দিলেই পারিস। না হয় তারা তোদের বাড়িতেই গিয়ে পড়ে আসবে। আমিও কিছুই না বোঝে বলে দিলাম আচ্ছা ঠিক আছে। তো সব মিলিয়ে আমার ছাত্রঅ সংখ্যা হলো ৬ জন। ক্লাশ সেভেন থেকে ক্লাশ নাইন পর্যন্ত। তাদের মধ্যে রানী আর সুরাইয়া ক্লাশ এইটে পড়ে। কিছুদিন পড়ানোর পর মনে হলো আমার শূন্যতাটা কেমন যেন কেটে যাবার উপক্রম হলো। কেউ যেন আমাকে লক্ষ্য রাখে, জামা-কাপড় ধোয়া আছে কিনা, খোজ খবর নেয় কলেজে কি করি, মেয়েদের সাথে গল্প করি কিনা ইত্যাদি। এই বিষয়ে দুইজনই সমান সমান কাজ করে।
আমি তো মনে মনে বলেই ফেলি, "আমি পাইলাম, আমি তাহদেরই পাইলাম।" কিন্তু সমস্যাটা হলো তারা দুজনেই আমার দাদা বাড়িতে থাকে; আমরা তিনজনই কাকাতো ভাই-বোন। এখন কাকে রেখে কাকে কি বলি??? তো এই ব্যাপারে সিদ্ধান্তে না আসতে পেরে আমার চার বছরের ভাগ্নে কে জিজ্ঞেস করি "বলোতো মামা, কে তোমাকে বেশি আদর করে? তোমার রানী আন্টি না সুরাইয়া আন্টি"। ভাইগ্না বলে নানি আন্টি। আমাকে চকলেট, চানাচুর দেয়। তারপর আর আমার সিদ্ধান্ত নিতে দেরী হয় না কাকে কি বলব। কিন্তু সমস্যা হলো বলবটা কি? আমি তো তাকে তুই বলে ডাকি। যার সাথে প্রেম করবো তাকে কি আর তুই বলে ডাকা যায়? হঠাত করে তুমি ডাকতে শুরু করলে তো আবার আমার ছাত্রী সকল মাইন্ড খাবে।
তারপর কোন কিছু বলাবলী ছাড়াই শুরু হল দুজনের পথ চলা। কোথাও বেড়াতে গেলে সে আমাকে নিয়ে যায়। সেখানে একসাথে বসে গল্প করি। গাছ থেকে ফল-টল পেড়ে দিই। পুকুরে যখন জাল দিয়ে মাছ ধরি সে পেছনে ঘুর ঘুর করে। রাতে তাদের বাড়িতে টিভি দেখি। সে আমার জন্য খাবার নিয়ে অপেক্ষা করে ডেকে নিয়ে খাওয়ায়। আবার কোনদিন যদি বাড়ি ফিরতে বেশী রাত হয়ে যায় তাহলে সুরাইয়াদের ঘরে তার ছোট ভাইয়ের সাথে ঘুমাই। এভাবেই না বলে প্রথম প্রেম তার গতিতে চলতে থাকল।
একটা কলেজ ব্যাগ কিনেছি নিউমার্কেট থেকে কাধে ঝোলানো। সেটা কাধে ঝুলিয়ে কলেজে যাই। সাইন্সে পড়ি। পদার্থ, রসায়ণ, জীব, গণিত সব বিষয়েই প্রাইভেট পড়ি। তবে মেয়েদের ব্যাচে। মেয়েরা আমাকে নিরাপদ মনে করে তাদের ব্যাচে নিয়ে নেয়। এখানে আছে তন্দ্রা, ন্যান্সি, পলি, শারমিন, ঝুমা, সোমা, নাদিয়া ও আমি কেবলাকান্ত। ব্যাগ ঝুলানোর কারণে আমার নাম হয় কবি। শুরু হয় নতুন জগতের সন্ধান কাব্য জগত। প্রতিদিন পড়া ফেলে রেখে মন দিই কাব্য জগতে। প্রসব করি নতুন নতুন কবিতা। কবিতা পড়ে খুশি হয় সুতন্নী ছিপছিপে গড়নের তন্দ্রা।

বাকিটুকু আসবে পর্ব ২ এ। ভালো থাকবেন সবাই।
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×