somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সংযমের মাসে আমরা কি করছি?

২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পবিত্র মাহে রমজান। প্রতি মুসলমানদের কাঙ্খিত একটা মাস। প্রতি বছর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সুযোগ তৈরি করার জন্য এ মাস আসে। তবে বর্তমানে আমরা হয়তো রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের তাৎপর্য ভূলে গিয়ে অন্য কিছু পাওয়ার চেষ্টা করছি।
আত্মসংযম এর মাস মাহে রমজান। কিন্তু আমরা সংযম কোথায় করছি। প্রতিদিন ইফতারিতে হাজার হাজার টাকা খরচ করে কি সংযম পালন করছি। না ইফতার পার্টির নামে ২-৩‘শ লোক (যাদের নিজেদের টাকা ইফতার করার সামর্থ আছে বা সমাজের প্রভাবশালী লোক) খাইয়ে সংযম পালন করছি।
এখন একটি ঘটনা আপনাদের বলব, যা হয়তো অনেকের সাথে মিলতেও পারে। অভিজাত এলাকা ধানমন্ডির রাস্তার পাশে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো ইফতার সামগ্রি বিক্রির দোকান। প্রতিদিনের মত একজন ব্যচলরের যা ইফতার কিনতে হয় তা কিনতে গেলাম। নামকরা রেষ্টোরেন্ট বা ফাষ্টফুডের দোকানগুলোর থেকে সাধারণত কম টাকায় এসব দোকানে ইফতার পাওয়া যায়। ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসছে। সবাই যার যার সামর্থ অনুযায় ইফতার ক্রয় করছেন। দোকানের পাশে দাড়িয়ে একটা বৃদ্ধ মহিলাকে অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে দেখে আমার কৌতুহল জাগে যে তিনি দাড়িয়ে কি করছেন। কাপড়-চোপড় দেখে মন হলনা তিনি বিখারী বা অসহায় কেউ। কৌতুহল মেটানোর জন্য কাছে গিয়ে জিগ্যস করলাম তার কিছু লাগবে কিনা? বৃদ্ধ মহিলা সারাদিন রোজা রাখার ফলে কথা বলতে পারছিলেন না। আমি আবার জিগ্যেস করায় খুব ধীরে ও নরম গলায় আমাকে বললেন তিনি ইফতার কিনতে এসেছেন। আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকে দেখতে লাগলাম আর ভাবলাম হয়তো বৃদ্ধার কেউ নেই তাই তিনি ইফতার কিনতে এসেছেন। তারপরও তার কাছে জানতে চাইলাম পরিবারে অন্য কেউ আছেন কি না। একটু সময় থেমে বললেন পরিবারে তার সবই আছে। তবে তারা সবাই আজ ইফতার পার্টিতে গেছে। বৃদ্ধা মহিলাকে নিয়ে চলতে অসুবিধা হবে বলে তার ছেলে হাতে ৫০০ টাকা গুজিয়ে দিয়ে স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে পার্টিতে।
শুধু বৃদ্ধ বাবা-মা’কে রেখে ইফতার পার্টিতে যাওয়া নয়, সমাজে ছিন্নমূল বা অসহায়দের সামন্য ইফতার করানোর মানষিকতা হারিয়ে বসেছে মানুষেরা। একজন দিনমজুরের সংসারে ৫ জনের ইফতার আয়োজন করা খুবই কষ্টের। কিন্তু একজন উচ্চবিত্ত লোক প্রতিদিন ৫ টা পরিবারকে ইফতার করানোর আর্থিক সক্ষমতা রাখে।
অনেক দোকানদার একটুও চিন্তা করেন না যে ‘ আমার দোকানের পাশে ছেড়া কাপড়ের এই ছেলেটা কেন দাড়িয়েছে। পকেটে টাকা থাকলে তো এসেই কিনে নিয়ে যেতে পারতো।
আল্লাহ বিত্তশালীদের যাকাত ফরজ করে দিয়েছেন এ জন্য যে গরীব মানুষেরা যাকাতের সম্পদের মাধ্যমে নিজেদের ভগ্যের পরিবর্তন ঘটাবে। কিন্তু এসব কই।
বড় বাপেরে পোলও খায় আর নান্নার বিরিয়ানী দিয়ে ইফতার করলে কি আপনার সংযম পরিপূর্ণ হবে। নাকি আপনি ঐতিহ্য পালনের জন্য এসব করছেন। বা আপনার প্রতিবেশী নান্না নিয়ে এসেছে বলে আপনারও তা নিয়ে আসতে হবে।
যদি এসব আপনি ঐতিহ্য মনে করেন তাহলে গরীব মিসকিনদের ইফতারে আপনার সঙ্গী করুন। আপনার বাবা মা’কে বাসায় রেখে স্ত্রী সন্তান নিয়ে ইফতার পার্টিতে না গিয়ে বা হাজার হাজার টাকা খরচ বিত্তশালীদের নিয়ে ইফতার পার্টি না করে গরীদেরকে ইফতার করান। সেহরীর জন্য তাদের সাহায্য করুন। কারন নান্না বা বড় বাপের পোলাও যাদি একশ বছরের ঐতিহ্য হয় তাহলে গরীবদের সাহায্য করা ১৪০০ বছরের ঐতিহ্য। প্রাচীন ঐতিহ্যকেই আমরা ঐতিহ্য বলব। [img|http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/aahmednur/aahmednur-1435340333-fa0495b_xlarge.jpg
Written By
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:৪৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×