“আমাকে কোন হাফেযে দাওয়াত দেয় নাই, আলেমে দাওয়াত দেয় নাই। আমাকে তাবলীগের দাওয়াত দিছে এক শসা-বিক্রেতা, যে বিসমিল্লাহ ঠিকভাবে পড়তে পাড়ত না। এর কারনেই আমি হুযুর, মুখে দাড়ি-টুপি। কাজেই ৫০০ মাইল দূর থেকে কে কি বলল (দেওবন্দের ফতোয়া দিকে ইঙ্গিত করে), তার দিকে আমাদের তাকানোর দরকার নেই। আমরা আমাদের কাজ করব”। সম্প্রতি একজন সাধারন (দ্বীনী এলেমবিহীন) সাথির এই বয়ান আমার নিজ কানে শুনা। এভাবেই ওলামা হযরতদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলছে তাবলীগি ভাইয়েরা।
যত বিদ’আতি পীর আছে, তাদের বড় শত্রু হচ্ছে মাদরাসা। কোন বিদ’আতি পীর তার এরিয়াতে মাদরাসা করতে দেয় না। তার এরিয়াতে কোন মাদরাসা হতে দেখলে নানান গন্ডগোল পাকায়। কারণ, মাদরাসা যদি হয়ে যায়, আর মানুষজন যদি ইলম পেয়ে যায়, তাহলে ওর ব্যবসা চলবে না, মানুষ ওকে গরু-ছাগল দেবে না। যদি ইলম না থাকে, তাহলে দিবে।
সেজন্য বিদ'আতি পীরেরা তার অনুসারীদেরকে বোকা বানায়, যাতে তাদের কোন বুদ্ধি কাজ না করে, মাসলা-মাসায়েল কাজ না করে। আমাদের দেশে অসংখ্য পীর আছে যাদেরকে তার মুরিদরা সিজদাহ করে। সেই মুরিদ যদি একটু ইলম পেয়ে যায়, তাহলে আর সিজদা করবে না। আর সিজদা যদি না করে, তাহলে পরে আর টাকাও দিবে না। এজন্য তাকে জেহালতের মধ্যে রাখতে চায়, আর বুঝায় যে, ‘এগুলো তোমরা বুঝবে না, বুঝার কাজ এগুলো আমার, তোমার জান্নাতে যাওয়া- এটা আমার দায়িত্ব’।
একই ভাবে তাবলীগের মোবারক দ্বীনী মেহনতের মুবাল্লিগ সাথীদেরকেও 'আহলে ইলম' থেকে বিচ্ছিন্ন করার চক্রান্ত চলছে। এই বিচ্ছিন্নতার মাধ্যমে উম্মতের বড় একটি অংশকে কতিপয় ব্যক্তি বিশেষের প্রতি অন্ধ এতা'আতের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। 'আহলে ইলম' থেকে বিচ্ছিন্ন করাতে পারলে ব্যক্তি বিশেষের নিজস্ব মতাদর্শ উম্মতের মাঝে চালিয়ে দেয়াও সহজ। এর পরিণতিতে উম্মত বাহ্যিকভাবে সেই ব্যক্তি বিশেষকে 'সিজদাহ' না করলেও, আক্বীদাগতভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবে, এবং হচ্ছে। এই মহাসংকটের হাত থেকে তাবলীগকে হেফাযতের ব্যাপারে সবাই ফিকিরবান হই।
তাবলীগ আমাদের দরকারী কাজ। কিন্তু ওলামা হযরত ব্যতীত দ্বীনের সঠিক নির্দেশনা সম্বব না। এজন্য ওলামাদের বিচ্ছিন্ন করা হলে এই দ্বীনী কাজে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:০৬