মাননীয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী যখন ‘ডিজিটাল নিষেধাজ্ঞা’ আরোপের মাধ্যমে পুরো দেশ ও দেশের মানুষকে নিরাপদ করে তুলছিলেন ঠিক তখনই বাংলাদেশের জলসীমা নিরাপত্তায় সমুদ্র সৈকতে ভ্রমনার্থীদের ভ্রমনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে ‘বিএনএস সমুদ্র অভিযান’ নামক বিশাল এক যুদ্ধ জাহাজকে নৌ-বাহিনীতে যুক্ত করা হল। খুবই আশার কথা। ১৯৬৮ সালে মার্কিন কোস্টগার্ডের বহরে জন্ম নেয়া জাহাজটি পরিচিতি ছিল ‘কার্টার রাশ’ নামে। বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর দ্বিতীয় বৃহত্তম জাহাজ এটি।
স্বার্থ তথা কেনা-বেচা কিংবা দখলের ক্ষেত্রে এই যুক্তরাষ্ট্র নামক দেশটা মানবতা, বৈধতা-অবৈধতার বিন্দু মাত্র তোয়াক্কা করে না- সেটা অস্ত্র, যুদ্ধ জাহাজ আর তেল যাই হোক না কেন। এরপর ও আমাদের মত মুষ্টিমেয় উন্নয়ন শীল রাষ্ট্র গুলো তাদের জিএসপি সুবিধা-অসুবিধার আরোপ- প্রত্যাহারের দিকে তাকিয়ে থাকি। আমার যদ্দুর জানাজানি, যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা হারানোর কারনে দেশে রপ্তানী বাণিজ্য বিশেষত গার্মেন্টস শিল্প বেশ বিপর্যয়ের মুখেই পড়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও প্রভাবিত করেছে যার ফলাফল গার্মেন্টস শিল্পে নতুন বাইয়ার পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে । মোদ্দা কথা হল যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধার জন্য মুখিয়ে আছে দেশ ও জাতি। তবে মাননীয় মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আজ সামান্য আশার বানী শোনালেন। বেশ ঠান্ডা মেজাজেই তিনি বললেন, খুব শিঘ্রই জিএসপি ফেরত দিবে যুক্তরাষ্ট্র। এটার দরকার আমাদের, আসলে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কিছুই আমাদের দরকার।
আশার বানী যে শুধু তোফায়েল সাহেব ই শোনাবেন তা কি হয়? দেশে সাম্প্রতিক হামলা এবং যুক্ত্রাষ্ট্রের আইএস ট্যাগিং এর জের ধরে খাদ্য মন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলামও ইমাম সম্মেলনে দু-কথা না বলে পারলেন না। শুধু বলা নয়, তিনি তো যুক্তরাষ্ট্রকেও এক হাত নিয়ে আইএস এর জন্মদাতা পিতা বানিয়ে ছেড়ে দিলেন। দেশের এহেন পররাষ্ট্রনীতি দেখে সত্যি আমার স্যালুট জানানোর ইচ্ছা হয়।
কিন্তু এখন কথা হচ্ছে এই পররাষ্ট্র নীতি কার জন্য প্রযোজ্য আর কার জন্য নয়? যুক্ত্রাষ্ট্রের জন্য আমাদের যদি স্ট্রেইট পররাষ্ট্র নীতি থাকে তবে সেটা ভারতের জন্যও হওয়া উচিত। নতজানু পররাষ্ট্র নীতি কোন ভাবেই কাম্য নয়।
মুসলিম বিশ্বের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে একটা পাগলা কুকুরের নাম সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই পাগলা কুকুর যে কখন কাকে কামড়ে দেয় তা আসলে ঠাহর করে বলা যাবে না। লড়াই করে টিকতেও পারব না আমরা। ১৯৬৮ সালে মার্কিন কোস্ট গার্ড যে যুদ্ধ জাহাজ ব্যবহার করত তা আমরা করছি ২০১৫ তে এসে। তাও আবার তাদের ৪৭ বছরের পুরোনো জাহাজটা। পার্থক্যটা বেশ পরিস্কার। আর যুদ্ধে তারা না জড়ালেও অন্য কোন দিক দিয়ে দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়ে ছেড়ে দিতে বিন্দুমাত্র সময় নেবে না। চৌধুরী সাহেবের সাথে হুদা বিবাদে যেচে গিয়ে জড়ানোর কি দরকার? টেকসই একটা অর্থনীতি এখন আমাদের জন্য অপরিহার্য্য। জিএসপি আমাদের দরকার, এবং একই সাথে রাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরাপদ থাকাটাও জরুরী। তবে কেন খালি খালি বাঘের লেজ দিয়ে কান চুলকানো? মাননীয় খাদ্যমন্ত্রীর কোন স্বাক্ষ্য প্রমান ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকে আই এসের জন্মদাতা বলাটা চরম অপেশাদার এবং কূটনীতি পরিপন্থী একটি মনোভাব। গুটি কয়েক ভিক্টিম রাষ্ট্র ছাড়া আর কোন রাষ্ট্র তো বলছে না এমন কথা। এটা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এক ধরনের উস্কানী হলে হতেও পারে। আর যদি হয়, তবে সেই উস্কানীর মূল্য কিন্তু দেশের জনগনকে আরো স্পষ্ট করে বললে তাদের ভাষায় মুসলিমদেরকেই দিতে হবে। খাদ্য মন্ত্রীকে নয়।
সময় টিভির রাত নয়টার সংবাদঃ অপরাধ বিজ্ঞানী শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলছেন, সরকার এবং বিরোধীদল গুলো নিজ স্বার্থে জঙ্গীদল গুলোকে ব্যবহার করছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৬