somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সরকারের শুরু হওয়া এ্যাকশন ধারাবাহিকতা রাখা জরুরি

২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৮:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেছেন, নিজ দলের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকারের যে ‘অ্যাকশন’ দেখতে পাচ্ছি, তা শান্তিকামী মানুষের জন্য ভালো উদ্যোগ। কেননা দলের বেপরোয়া নেতা-কর্মীরা যেভাবে টেন্ডারবাজি, নিয়োগবাণিজ্য, ভর্তিবাণিজ্য এবং আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া হয়ে উঠেছিল, তাতে সাধারণ মানুষ এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্যে ছিল। তাদের কাছে সরকারের এই সক্রিয়তা বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। তবে যে পন্থায় সরকার সক্রিয় হয়েছে বা হচ্ছে- সেটি অবশ্যই বিচারিক নিয়মে হতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রখ্যাত এই সাহিত্যিক এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অথবা ক্রসফায়ারে যারা নিহত হয়েছে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে শত শত মামলা রয়েছে। তারা টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে কলেজে শিক্ষক নিয়োগ, ভর্তি নিয়ে জালিয়াতি, আধিপত্য বিস্তার ও শিশুদের ওপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে তারা দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছিল। সেই জায়গা থেকে শান্তিকামী মানুষের কাছে সরকারের এই সক্রিয়তা ভালো উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক মনে করেন, সরকার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিলেও গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে তা অবশ্যই বিচারিক প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত। সেটি না হলে এই অস্বস্তি অপরাধী এবং নিরপরাধী দুপক্ষের মধ্যেই থাকবে। তিনি বলেন, দলের নেতা-কর্মী নিহতের ঘটনায় দেখেছি অনেক মন্ত্রী-এমপিও বিভিন্ন কথা-বার্তা এবং বিবৃতি দিয়েছেন। কেউ বলেছেন, এবার অ্যাকশন শুরু, আবার কেউ বলেছেন, এটি ঠিক নয়। আমি বলব, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন যদি বিচারিক প্রক্রিয়ায় হয় তাহলে আর নিরপরাধদের মনে ভয় বা অস্বস্তি থাকবে না। তাদের মধ্যে শঙ্কা কাজ করবে না যে, এই বুঝি আমাকেও ক্রসফায়ারে দিল বা শত্রুতা করে আমাকেও কেউ ফাঁসিয়ে দিল। সুতরাং বিচারিক প্রক্রিয়ায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সবাই আশ্বস্ত থাকতে পারবে। অর্থাৎ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হলে সন্ত্রাসীরাও যেমন অপরাধ করতে ভয় পাবে, তেমনি নিরপরাধীরাও কোনো অস্বস্তিতে থাকবে না। আর সে কারণেই ভালো-মন্দ সব পক্ষের জন্যই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ছাড়া বিকল্প দেখছি না। ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল বলেন, সন্ত্রাস নির্মূলে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ এবং ‘ক্রসফায়ার’ দুটি ভার্সনই আমাদের জন্য বিপজ্জনক। আর এই দুটো বিষয়ই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অত্যন্ত নেতিবাচক। কারণ, প্রথমত, বিচার-বহির্ভূত কোনো হত্যাকাণ্ডই গণতন্ত্রের নীতিতে পড়ে না। আর দ্বিতীয়ত, যদি সত্যিকার অর্থেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়, সেটিও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য অশনি সংকেত। তার মানে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের উচিত এখনই সন্ত্রাসীদের একটি তালিকা তৈরি করা। ‘সন্ত্রাসীরা যে দলেরই হোক...’ যুগ যুগ ধরে রাজনৈতিক নেতাদের মুখে শুনে আসা এ কথার সত্যিকার প্রতিফলন ঘটানো দরকার। এটি যাতে কথার কথা হয়ে না থাকে সে জন্য সরকারকে আরও কঠোর হওয়া উচিত। আর তাহলেই জনমনে স্বস্তি ফিরে আসবে। বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদের মতে, আওয়ামী লীগে অনেক ভালো মানুষ আছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তাদের সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিরোধী দলের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির আজ গলা উঁচু করে কথা বলার মতো মুখ বা শক্তি নেই। কীভাবে বলবে? কারণ তারাও যে এই একই পথের পথিক। তারাই তো ক্রসফায়ারের রীতি চালু করেছিল। এমনকি তারা যদি তৃণমূলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারত, তাহলে আজ তাদের এই দশা হতো না। তৃণমূলকে গুরুত্ব না দিয়ে কেবল হাইকমান্ডের মতে দল চললে সেখানে কখনো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হলে সেখানে আইনের শাসনও প্রতিষ্ঠিত হয় না। তাই বলব, সর্ব ক্ষেত্রে আইনের শাসনের বিকল্প নেই।


সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৮:১০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×