somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি কি আওয়ামীলীগার না বিএনপি?

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি কি আওয়ামীলীগার না বিএনপি? আমি ভূলে যাই আমার জাতীয়তা কি? আমি যদি বাংলাদেশী হতাম তা হলে আজকে আর এই ভাবে মানূষ মারা যেত না। কেন আমাকে বাংলাদেশী না হয়ে আওয়ামীলীগ অথবা বিএনপি হতে হবে? অবশ্যই যে কোন বাংলাদেশী যেকোন দলের সমর্থক হতে পারে এতে অন্যায় কিছু নেই অন্যায় তখন ই হয় যখন আমরা দেশ প্রেম ভূলে যেয়ে দলপ্রেমে মত্ত হয়ে যাই।

আমি আতংকিত হই যখন দেখি সরকারী কর্মচারীরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করে। তাহলে আমরা সাধারনরা কার কাছে আমাদের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করব? আমি অবাক হয়ে যাই যখন দেখি সরকার দলীয় একজন নেতা তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জামাতে যোগ দেয়। সাতক্ষীরায় মামুন কে ইট দিয়ে থেতলে হত্যা করে ’৭১ এর ঘাতকরা, কেউ তার ডাকে সাড়া দেয়না। কেন?

শরীরের মধ্যে বেড়ে উঠছে এক মরনব্যাধী। যার নাম ক্যান্সার। এই ক্যান্সার ধীরে ধীরে বিএনপির সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। জামাত নামের এই ক্যান্সার যত তাড়াতাড়ি বিএনপির শরীর থেকে অপারেশন করে বের করা যাবে তত তাড়াতাড়ি বিএনপি সূস্থ্য হবে।

শাহবাগের গনআন্দোলনে বিএনপি যখন ই সমর্থন দিয়েছিল তখন ই জামাতের মাথা খারাপ হয়ে যায়। তৈরী হয় রাজীব হত্যাকান্ডের মত নাটক। দেখুন শাহবাগে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল সেখানে রাজীবের ভুমিকা ছিল স্রেফ শারিরীক উপস্থিতি আর রাজীব যে মাপের ব্লগার ছিল তাতে তার নাম কোন অবস্থায় আসে না, এই অবস্থায় রাজীব কে খুন করে। খুন করার আধাঘন্টা এক ঘন্টার মধ্যে রাজীবের কুৎসিত লেখনী তারা জনগনের সামনে হাজির করে আর শাহবাগে আন্দোলনে কলঙ্ক লেপনের সুযোগ পায়।

আজকে ৩৪/৩৫ বছর ধরে জামাত বিএনপি আশ্রয় করে যেভাবে সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায়, আর্মি, পুলিশ, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তার করছে তাতে আমার মনে হয় একদল হিসাবে জামাত সব চেয়ে ক্ষমতাশালী। শিবির সংগঠন করে কেউ মাদ্রাসা বা কলেজ পাশ করে বের হয়ে বেকার আছে আমার ধারনা এরকম উদাহরন কেউ দিতে পারবেন না। এক ইসলামী ব্যাঙ্কের হিসাবে দেখুন তাদের কাছে আছে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশী মূলধন।

সারা দেশে সমস্ত প্রতিষ্ঠান যখন দূর্নিতীর বেড়াজালে আবদ্ধ সেখানে জামাত আত্যান্ত সূচারু রূপে তাদের নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান গুলোকে একটা মানদন্ডে নিয়ে গেছে সাধারন মানূষের আস্থা অর্জন করেছে, সেটার প্রমান তাদের পরিচালিত কোচিং সেন্টার গুলো। শাহবাগ আন্দোলনের আগে ঢাকা থেকে শিবির পরিচালিত কোচিং সেন্টারগুলো এক নাম্বারে ছিল।

ওদিকে আওয়ামীলীগ যখন দেখল এই গনআন্দোলন এক সার্বজনীন রূপ পেয়ে যাচ্ছে তখন ই তারা একক ভাবে যেয়ে শাহবাগের আন্দোলনে সমর্থন দিল। তারা ভেবেছিল যেহেতু তারা নিজেদের একক ভাবে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হিসাবে দাবী করে তাই জামাত নিধন তাদের একক দাবী। তারা ভূলে গেল স্বাধীন তার ৪২ বছর পর জামাত শুধু বিএনপি না আওয়ামীলীগেও তার থাবা বিস্তার করছে।

এক পর্যায়ে শাহবাগ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবী করে যে লিষ্ট তৈরী হল তাতে দেখা গেল জামাতের নেতা আর বিএনপির কতিপয় নেতার নাম আছে। ব্যাস আর যায় কোথায় বিএনপি লোকজন আবার একটা লিষ্ট ছেড়ে দেয় নেটে, যাতে দেখা যায় আওয়ামীলীগের ২৫ জনের নাম। ব্যাস এই বার ভাসুরের নাম মুখে নিতে হয়না এই থিওরীতে আওয়ামীলীগ বিএনপির মধ্যে যে যুদ্ধাপরাধী আছে তাদের নিয়ে বাড়াবাড়ি করা বন্ধ করে দিল। পুরা ফোকাস এসে গেল জামাতের ওপর। জামাত নিষীদ্ধকরন আওয়াজ উঠল চারিদিকে।

জামাত নিষিদ্ধ করন হলে আওয়ামীলীগ বিএনপিতে যে যুদ্ধাপরাধী আছে তাদের কি বিচার হবে না? আমি খুব একটা রাজনীতি সচেতন না, ছিলাম ও না। ভাল লাগত না। যখন রাজাকারের ফাসির দাবীতে গনআন্দোলন তুঙ্গে তখন কিছু পাড় বিএনপি মাইন্ডের ব্লগার যুক্তি তুলছিলো রাজাকার দের ফাসির দাবীর পাশাপাশি বিগত ৫ বছরে দেশে যে বড় বড় কিছু অন্যায় হয়েছিল সে গুলোর বিচার হোক, যেমন শেয়ার বাজার কেলেংকারী, পদ্মাসেতু, কিছু গুম খুন ইত্যাদি। কিন্তু খেয়াল করে দেখুন অল্প কিছুদিনের মধ্যে কিন্তু ওই সব পোষ্ট আসা বন্ধ হয়ে যায়।

আওয়ামীলীগ কেন তখন বিএনপির কাছে একটি শক্তিশালী দল পাঠাল না যারা এই বিচার নিয়ে আওয়ামীলীগ বিএনপির ঐক্যসাধন করবে? আমার কথা হল সাধারন মানূষ জন কিন্তু এই সব কথা খুব ভাল ভাবে বোজে কিন্তু আওয়ামী নীতিনির্ধারক রা কেন বুজল না? তারা কি মনে করে এই বিচার তারা একারা করতে পারবে?

একটু ভাবুন, আমরা এখনো কোন দুনিয়ায় আছি এখানে কেউ একজন বলল সাঈদীকে চাদে দেখা গেছে ওমনি হাজার হাজার মানূষ এসে রাস্তায় হাজির হল এই ঈমানদার বান্দা কে বাচানোর জন্য। থানা অবরোধ থেকে শুরু করে জীবন পর্যন্ত দিচ্ছে। এরা কি জামাত? জামাত যারা করে তারা কেউ কিন্তু বিশ্বাস করেনা সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে।

এর মানে হল জামাতের হয়ে সাধারন মানূষরা প্রান দিচ্ছে। এই নিয়ে খুব একটা উৎফুল্ল হবার কিছু নাই। আমার আগের পোষ্টে আমি বলছিলাম যারা মারা গেছে তাদের ষ্ট্যাটিস্টিক নেয়া হোক দেখুন কয়জন সাধারন মানূষ আর কয়জন জামাতের কর্মী? এর মানে কি হল? বর্তমান সরকার জেনে শুনে জামাতের পাতানো ফাদে পা দিচ্ছে।

এখানে আপনার আমার খুশী হবার কিছু নাই কারন আপনি যদি ভাবেন গেলে আওয়ামীলীগের গেছে আমার কি আমিতো বিএনপি করি। বোকার স্বর্গে বাস করছেন আপনি। জামাত যদি আওয়ামীলীগ থেকে বিজয়ী হয়ও বিএনপির ছত্রছায়ায়, নিশ্চিত থাকুন আর কয়দিন পর বিএনপির নাম ও থাকবে না। সাধারন মানূষের চাওয়া পাওয়াকে মূল্য না দিয়ে দুই দলের উচ্চ পর্যায় যদি তাদের কোন হিসাব নিকাশ মিলানোয় ব্যাস্ত থাকে তবে এর মূল্য ও তাদের কড়ায় গন্ডায় দিতে হবে।

আমরা দেখছি, সব কিছু মাইক্রোস্কোপের নীচে ফেলে দেখছি। চুল ছেড়া বিশ্লেষন করছি। রক্তপাত আমরা কেউ চাইনা এই স্বাধীন দেশে, যেখানে এখনো পরিস্কার বুজা যাচ্ছে দুই দলের ঐক্য হলে এই অহেতুক রক্তপাত খুব সহজে বন্ধ হয়ে যাবে। সেখানে কেন আর কোন মা র বুক খালি হবেনা এই বিশ্বাসে দুই দলের এক হবার জন্য ডাক দিচ্ছিনা।

রক্তপাত সৃষ্টি কারো কাছে কখনো কাম্য হতে পারেনা, আপনাদের দুই দলের অনড় অবস্থান থেকে যে কেউ একটু ছাড় দিলে কিন্তু এই অচল অবস্থার নিরসন হয়। আর যদি নাহয় তাহলে আল্লাহর কাছে হাত তুলে মোনাজাত করব হে আল্লাহ আমাদের জান মালের মালিক তুমি। তুমি আমাদের হেফাজত কোরো।

আজকে যদি বিএনপিকে দোষারোপ করে জামাতের সাথে এক কাতারে ফেলতে চাই সেটা কি সম্ভব? ধরে নেই সারা দেশে ভোটার আছে ৬ কোটি এখন যদি এর ৩০% ও বিএনপি ধরি তবে প্রায় ২ কোটি বিএনপির ভোট আছে আপনি কি মনে করেন এই দুইকোটি জনগন সেটা মেনে নেবে? কোন দিন হবে না। তাই বলছিলাম কি যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইতেই হয় তবে সেটা বিএনপি আওয়ামীলীগ এক হয়েই চাইতে হবে।

ভাল লাগছে অনেক পরে হলেও সরকারের তরফ থেকে এলজিআরডি মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দেশের সঙ্কট নিরসনে বিরোধী দলকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন। আমি আশা করব এই আলোচনা যত তাড়াতাড়ি হবে তত ভাল হবে। আমার পূর্বের একটি পোষ্টে আমি বলছিলাম আপনারা ঠিকই আলোচনায় বসবেন তবে কিছু মৃত্যুর বিনিময়ে ।

জামাত শিবিরের হাত থেকে আমরা পরিত্রান চাই। সে পরিত্রান আসুক দুই দলের হাত ধরে। আর যে ব্যাপারটি আপনারা চাইলেই ভূলে যেতে পারবেন না তা হল এই গনআন্দোলন থেকে যদি আমরা জামাতের টুটি চেপে না ধরতে পারি তবে নিশ্চিত থাকুন সে আচিরেই আপনার টুটি চেপে ধরবে।

জামাতের আজকের এই রমরমা অবস্থানের পিছনে আমি বলব দায়ী হল আজকের মাদ্রাসা শিক্ষানীতি। যেখানে লেখাপড়ার কোন নিয়ম নীতি নেই। কিছু কোরান হেফয করিয়েই এখান থেকে স্বইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক আমরা তৈরী করছি কিছু ধর্মান্ধ মুসলমান যাদের ন্যায় অন্যায় বোধটা বাধা থাকে কিছু স্বার্থান্বেসী মানূষদের হাতে যাদের প্রায় সবাই জামাত দ্বারা চালিত। মাদ্রাসা শিক্ষা অবশ্যই দরকার আছে তবে তা হতে হবে যথাযথ ধর্মীয় চেতনায় যেখানে অন্যায়কে অন্যায় বলে চেনা যাবে, আর যদি না হয় তবে নিশ্চিত থাকুন এই আওয়ামীলীগ বিএনপি রেষারেষীর মধ্যেই কোন একদিন দেখবেন এই দেশ জামাতের করতল গত।

আসুন, আজকে আমি আওয়ামীলীগ করলে বিএনপির দোষ না ধরে আমার নিজের পার্টির নেতাদের সচেতন করি। আর বিএনপি করলে আওয়ামীলীগের দোষ না ধরে বিএনপির নেতাদের বলি কি করলে দেশটা সুন্দর ভাবে এগিয়ে নেয়া যাবে। ঐক্যবদ্ধ ভাবে দেশটাকে হানাহানি আর রাজাকার মুক্ত করি Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×