প্রিয়দেশ অনলাইন, ঢাকা:
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে দেশটির প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির সদস্যের সমালোচনামূলক একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশের দায়ে মিয়ানমার হেরাল্ড পত্রিকার দুই সম্পাদককে জরিমানার খবরে অনলাইনে সারা বিশ্বে তোলপাড় চলছে। সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বাকস্বাধীনতার পক্ষের লোকজনের সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে।
লন্ডনের জন স্মিথ নামের একজন বিস্ময় প্রকাশ করে টুইটারে বলেন, 'মিয়ানমারের এ ঘটনায় সারা বিশ্বের মানুষের সঙ্গে আমিও মর্মাহত, বিস্মিত। এটা বিশ্বের সাংবাদিকতার ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়, খারাপ উদাহরণের সৃষ্টি করলো।'
মিয়ানমারের প্রতিবেশি দেশ ভারতের কুন্তল ভট্টাচার্য নামের একজন ব্লগার লিখেছেন, 'পাকিস্তানের সামরিক জান্তার মতো আচরণ মিয়ানমারেও? আবারো প্রমান হলো, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা আর সামরিক জান্তা একসঙ্গে চলতে পারে না। এ বিষয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী বিশ্বের সব মানুষকে প্রতিবাদ করতে হবে। মিয়ানমার হেরাল্ডের সঙ্গে আছি...।'
আহসান কামরুল নামের বাংলাদেশের একজন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে বলেন, 'বিবিসির প্রতিবেদনে জানলাম, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির সদস্যের সমালোচনামূলক একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছিলো মিয়ানমার হেরাল্ড পত্রিকা। এতে প্রেসিডেন্টকে অবমাননার দায়ে দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয় গত নভেম্বরে একটি মামলা করে। ওই মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মিয়ানমার হেরাল্ডের সাবেক প্রধান সম্পাদক কিয়াও সোয়া উইন, উপপ্রধান সম্পাদক আর্নট খাউং মিনকে দেশটির একটি আদালত গত মঙ্গলবার ৮০০ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অঙ্কের জরিমানার দণ্ড দেন।
দু:খের বিষয় হলো, আজ্ঞাবহ আদালতের কাছে স্বৈরশাসকের সম্মানের মূল্য মাত্র ৮০০ ডলার! এই ডলার দিয়ে তো দুবাই, বা সিঙ্গাপুরের অভিজাত হোটেলের একজন পতিতাকেও খুশি করা যায় না। এটা কি প্রেসিডেন্টকে অবমাননার পর্যায়ে পড়ে না? রায় দেয়ার আগে আদালতের বিচারক কি একবারের জন্যও বিষয়টা ভাবেননি?'
উল্লেখ্য, মিয়ানমার হেরাল্ড পত্রিকা দেশটির প্রেসিডেন্টকে নিয়ে সমালোচনামূলক একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছিলো। এতে দেশটির গণমাধ্যম আইন লঙ্ঘন ও প্রেসিডেন্টের অবমাননা হয়েছে, এমন অভিযোগ করে তথ্য মন্ত্রণালয় গত বছরের নভেম্বরে মামলা করে। সেই মামলার জেরে পত্রিকাটির সাবেক প্রধান সম্পাদক কিয়াও সোয়া উইন, উপপ্রধান সম্পাদক আর্নট খাউং মিনের ৮০০ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অঙ্কের জরিমানা হয়েছে। এ খবর সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে সারা বিশ্বে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে মিয়ানমারের সামরিক সরকার ও দেশটির আদালত।
অন্যদিকে মিয়ানমারভিত্তিক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, 'দেশটিতে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনের আগে সংবাদমাধ্যমকে ভয় দেখানোর অশুভ চেষ্টা হিসেবে দুই সাংবাদিককে শাস্তি দেয়া হয়েছে।'
সূত্র: প্রিয়দেশনিউজ
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:৫৯