অভিজ্ঞতা চাই ৫ বছরের।
অভিজ্ঞতা চাই ১০ বছরের।
আচ্ছা আমরা যখন স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি পড়ে অনেক চড়াই উৎরাই পার করে পাশ করে আসি তখন আমাদের কি কোন 'অভিজ্ঞতা' শেখানো হয়েছিল কস্মিনকালেও?
চাকরি খালি নাই নাই করেও যখন খুঁজতে খুঁজতে কোন একটা জব মিলে যায় কোয়ালিফিকেশনের সাথে, তখন আমরা আটকা পড়ে যাই 'অভিজ্ঞতা' নামক ওই বিশেষণটার সাথে।
যারা তথাকথিত অভিজ্ঞ তারা কি চাকরিটা না পেয়েই খুব অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন? এরকম হাজারও প্রশ্ন হাজারও বেকারের স্ট্যাটাসেই বোধয় শোভা পায় আজকাল।
চাকরির খবর নামক পত্রিকাটা কিনতে কিনতে যখন টেবিলে পত্রিকার স্তূপ হয়ে যায় তখন হোটেল থেকে পুরি এনে তা থেকে তেল নিংড়ানো ছাড়া ওই পত্রিকা দিয়ে আর কোন কাজ হয় নাহ।
একটা সিভি দোকান থেকে বানাতে পঞ্চাশ টাকা করে নেয়। এরকম নতুন খামে ভরা কতো বেকারের কতো পঞ্চাশ টাকা যে নর্দমায় শোভা পায় তাকি বেকার ছেলেটা কখনও জানতে পারে?
সকালে দুটো সিঙ্গারা আর দুপুরে মেসের হলুদ পানি খেতে খেতে বেকার ছেলেগুলোর যে পেটে গ্যাস্ট্রিক আর জিহ্বা হলুদ হয়ে থাকে সে খবর বুঝি প্রেমিকা ছাড়া আর কারও চোখে পড়ে না এদেশে।
আজীবন আমরা 'Your Aim In Life' অথবা 'Your Hobby' নামক যে কম্পোজিশনগুলো পরীক্ষার খাতায় লিখতাম সেখানে কি কখনও আমাদের জীবনের লক্ষ্য অথবা আমাদের শখগুলোই কি লিখতে পারতাম?
আজীবন আপনাদের ঠিক করে দেয়া জীবনের লক্ষ্য, শখ গলাধঃকরণ করে গেছি। যদি অভিজ্ঞতা নামক পুস্তকটাও সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করে দিতেন অথবা ব্ল্যাক বোর্ডে চক দিয়ে এঁকে এঁকে পাঠ করাতেন তাহলে হয়তো সেটাও পড়ে মুখস্থ করে ফেলতে পারতাম। কিন্তু আমাদের সেটা পড়ানো হয়নি। আবারও বলছি 'অভিজ্ঞতা' নামক কোন পুস্তক আমাদের পড়ানো হয়নি। আমরা পড়িনি। তবু কেন চাকরি পেতে হলে অভিজ্ঞতা লাগবে? এই অভিজ্ঞতা আমরা কোথা থেকে পাব?
ওই যে, বেকারদের এরকম হাজারও প্রশ্ন, আর্তনাদ আজকাল ফেসবুকের স্ট্যাটাসেই শোভা পায়।
কিন্তু একবার বলে দেখুন তো, 'বেকারত্ব' নিয়ে একটা রচনা লিখতে...
দেখবেন পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা শেষ হয়ে যাবে তবু আমাদের লেখা থামছে না। এই যে 'থামছে না' এইটাই আমাদের সারা জীবন থেকে শেখা অভিজ্ঞতা। আর কোন অভিজ্ঞতা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় শেখানো হয়নি।