somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার নির্বাসন! পর্ব দুই-যাত্রা

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব এক এইখানে!

নাইরোবি

বিমান থেকে বাইরে পা রাখতেই গরম বাতাসের ঝাপটা লাগলো চোখে মুখে। আকাশে কোন মেঘ নেই, সকাল ১০ টায় এত প্রখর রৌদ্র! নাইরোবি ঠিক বিষুব রেখা থেকে ১ ডিগ্রি দক্ষিনে।অক্টোবর এর শেষ, তাই সূর্যটা আসলেই অনেক বেশি কাছে আমাদের।দ্রুত টার্মিনাল বিল্ডিঙের দিকে এগুলাম। দুবাইতে যে এলাহি কারবার ছিল, এখানে এসে মনে হল বাংলাদেশে ফিরে এসেছি, ঠিক আমাদের চিটাগং এয়ারপোর্টের মত লাগলো দেখতে অনেকটা।রানা স্যার বললেন, ব্যাটা, ব্যাগ সাবধান! এই খানে ব্যাগ চুরি নাকি খুব সাধারন ব্যাপার। প্রমান অবশ্য পেলাম কিছুক্ষণের মধ্যেই। এক ডেনিশ বুড়ো আকুতি করছে বিরস বদনে কাউন্টারে বসে থাকা এক মহিলার কাছে, কেবা কাহারা বুকিং কাউন্টারের কাছ থেকে মেরে দিয়েছে তার হাত ব্যাগ!কাধের ব্যগটাকে জাপটে ধরে বসে থাকলাম, বাকিটা সময়। নাইরোবির মানুষ গুলোকে দেখে মনে হল আমাদের গ্রামের “আকবর চাচা” টাইপ। মানে আকার আকৃতি অনেকটা মিলে যায়।কালো বলতেই সব যে একরকম তা নয়; বরং বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য আছে। রানা স্যার আমার ক্লাস নিতে শুরু করলেন; এবং আমার কান আবার গরম হতে শুরু করল!স্যারের এটা তৃতীয় শান্তি রক্ষা মিশন, আফ্রিকা এবং এর মানুষ তিনি বেশ ভাল করেই চেনেন।তবে ক্লাসের শেষে আমি ‘পম গানা’ তরুণী আর লাইবেরিয়ান তরুণীকে আলাদা করতে পারলাম!আমার দ্রুত শেখার গতি দেখে স্যার মাথা নেড়ে বললেন, “তর হবে”। আমি দাত কেলাইলাম শুধু বিব্রত ভঙ্গিতে।
বিমানে উঠবার ডাক এলো, এবার দেখি আরও ছোট একটা বিমান।তিন জনের সিট, আমি জানালার পাশে বসলাম। পাশে বসলো গানার এক মোটাসোটা মহিলা আর তার পাশে লাইবেরিয়ার এক তরুণী। বাঙালি ভদ্রতা বসতও আমি যতটা সম্ভব স্পর্শ এড়ানোর চেস্টা করছিলাম; গানার মহিলার দেখি ঐসব কোন বালাই নেই।তার ঠ্যাং দিয়ে আমাকে প্রায় কোণঠাসা করে আরকি! আমিও ভাবলাম, যস্মিন দেশে যদাচার, Excuse me বলে নড়ে চড়ে নিজের জায়গা করে নিলাম। গানার মহিলাটা খুব সুইট একটা হাসি উপহার দিল আমাকে।

গানার পথে



বিমান উড়বার সাথে সাথে বাহিরে মন দিলাম, নিচে আফ্রিকার বিশাল প্রান্তর। কিছু ছবি তুলতে চেষ্টা করলাম এইবার।



আফ্রিকা মহাদেশে সম্পর্কে আমার পূর্বের ধারণা পালটাচ্ছিল একটু একটু করে। আফ্রিকা মানেই মনে হত সবুজ তৃণভূমি, যেমনটা ‘ডিসকভারি’ চ্যানেলে দেখায় আরকি। বাস্তবে তা নয়; বরং আমার মনে হল আফ্রিকা সূর্যের আগুনে জ্বলতে থাকা এক মরু প্রান্তর, যেখানে বেঁচে থাকা একটা যুদ্ধ। একটা জ্বালা মুখ দেখলাম, আমার দেখা প্রথম, ছবি তুলে রাখলাম



পাশের মহিলাটিকে বললাম Do you know the name of it? সে প্রায় আমার উপর হুমড়ি খেয়ে দেখতে গেল কি জিনিস! আমি মনে বললাম, হে ধরনী দ্বিধা হও, মুখে বললাম, thanks a Lot! সে বলল, No problem, ANYTIME!

হটাত নিচে দেখি বিশাল এক নীল সমুদ্র, এমন নীল দেখেছিলাম বঙ্গোপসাগরের অনেক গভীরে। যে নীল মনে হাহাকার জাগায়! মনে হয়, এমন নীলে মিশে যাওয়া যায়!আমার নিচে আটলান্টিক মহাসাগর!



দু'চোখে গিলছিলাম, অস্ফুটে বলে উঠলাম, Its beautiful! পাশের জন আবার হুমড়ি খেল, “What is it?”, আমি বললাম “হে ধরনী দ্বিধা হও”; সে বলল স্মিত হেসে, No problem, ANYTIME!

চলবে...।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১২:২৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×