আজ স্বাধীনতা দিবস । লাখো কণ্ঠে গাইবে সবাই “আমার সোনার বাংলা”, আমারও ইচ্ছে ছিল আজ আমিও গাইব, কিন্তু সময় সেটা আর দিলো না। আজও অফিস … তাই আমাকেও আমার ডেস্ক এর পাশে দাঁড়িয়ে থেকে গাইতে হবে । আমি জানিনা আমি যখন আমার সোনার বাংলা গাই আমার চোখ দিয়ে কেন যেন জল পড়ে । আমি জানিনা কিসের জন্য সেটা । হয়তো এটা ভেবে যে, আমার দেশের সত্যিকারের মানুষগুলো এখনো স্বাধীন হয়নি । আমার দেশের অগনিত মানুষ এখনো সেই জানোয়ারদের পতাকার প্রতি ভালোবাসা দেখায় খেলার অজুহাত দিয়ে।আমার দেশের কিছু বেজন্মা মানুষ এখনো ভাবে শেখ মুজিব নামের মানুষটি কোন দেশের কোন জাতির “ জাতির পিতা” ? লজ্জা লজ্জা … ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম বুলেটটি ছোড়া হয় রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে এস আই শাহজাহান মিয়া এর বন্দুক থেকে । আমার দেশের লাখো মায়ের সতীত্ব নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে ওই পাক পতাকার নিচের সেনারা । যখন দেখি সেই পাক পতাকার নিচের খেলোয়াড়গুলোর দেহের আলিঙ্গন চাইছে আমার দেশের কিছু নারী ম্যরি মি আফ্রিদি জার্সি পড়ে তখন ভাবি পাক বাহিনীর নগ্ন হাসি ওরা দেখেনি।এ লজ্জা আমার, এ লজ্জা প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার ।মুক্তিযুদ্ধ কোন বানানো গল্প নয় । আমার দেশের ওই ছেলেগুলো অথবা মেয়েগুলো আজও বুঝেনি খেলার মাঠে তাদের সাপোর্ট দিয়ে পাকিস্তানকে গর্বের সাগরে ভাসাচ্ছে তারা আর পাকিস্তানের প্রতিটি মানুষকে উপলদ্ধি করাচ্ছে সত্যি ১৯৭১ এ পাকিস্তানের হাজার সাপোর্ট ছিল কিন্তু ভারতের কিছু দালাল “ শেখ মুজিব, মুক্তিযোদ্ধারা” পূর্ব পাকিস্তান কে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আলাদা করেছে । আমরা যারা স্বাধীনতার কথা বলি তারা পাকিস্তানের কাছে হয়েছিলাম ভারতের দালাল।আজ আমরা খেলার মাঠে পাকিস্তানের সাপোর্ট কে যখন না বলানোর চেষ্টা করছি তখন আমাদের কে শুনতে হচ্ছে আমরা ভারতের সাপোর্টার। পাক ভক্তদের যখনই বলা হয় পাক সাপোর্ট করোনা তখনি তারা ভারতের অজুহাত দেখায়। আচ্ছা আপনাদের কি মনে হয় না যে ডি এন এ শব্দটির একটি মারাত্মক ভুমিকা আছে।মানুষের জিন তাঁর পূর্ব পুরুষদের অনেক কিছু বহন করে ? তাহলে আপনারাই বলুন তো ১৯৭১ সালের পাকিস্তান বিরোধী কথা বললেই ভারত এর দালাল,২০১৪ তে পাক খেলার সাপোর্টের বিরুদ্ধে কথা বললে ভারতের সাপোর্টার দুটো জিনিস কি একই সুতায় গাঁথা নয় ?তার মানে তাদের জিনগত কিছু সমস্যা রয়ে গেছে । আমি আগেও বলেছি এখনো বলছি আমার দেশের অধিক মানুষ এখনো পাক খেলার সমর্থন দেয় শুধু মাত্র ধর্মের ভাই বলে, এছাড়া আর কোন কারন নেই তাদের সাপোর্ট দেয়ার।পাক আমাদের ইতিহাসের কালো অধ্যায়ের নোংরামি অথচ সেই পাকদের ভক্ত এই বাংলায় এতো বেশি ? আজও মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা কেঁদে ফেলেন তাদের চোখের জলের কি কোন দাম নেই? মুক্তিযুদ্ধের কথা হলে সবাই কেন মুখ বন্ধ করে রাখতে চায় ? ৪২ বছরের ঘা আজও মেটে নাই কেন ? আমাদের দেশের মানুষগুলো কখনো মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারবে না। তারা সবসময় নিজের ভালো কিছু করাতো থাক দুরের কথা ভালো কোন কাজের প্রশংসা করতেই পারেনা।নিজের অস্তিত্ব বলে যেই জিনিসটা আছে সেটার বিসর্জন দেয়া ছাড়া আর কিছুই পারেনা।ধর্মের নোংরা দোহাই তাদের কাছে অনেক প্রিয় ।হিন্দুদের মালায়ন বলে গালি দেওয়াটা তাদের কাছে গর্বের বিষয় অথচ একবার ভাবেনা এই বাংলায় অধিকাংশ মানুষের আদি ইতিহাস কি ছিল? আমার দেশের স্বাধীনতা আজ শুধু পেপারের বিজ্ঞাপন আর টিভি চ্যনেল এর অনুষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ ।আমার দেশের স্বাধীনতা মানে বন্ধের দিনে কে এফ সি আর পিজা হাটের আড্ডা। আমি জানিনা স্বাধীনতা দিবসে আজ কয়জন তাঁর মায়ের আঁচল ধরে মায়ের কাছে আকুতি করে একবার বলেছে “ মাগো তোমায় আমি অনেক ভালবাসি” কজন আজ পতাকার দিকে তাকিয়ে সালাম দিয়েছে শ্রদ্ধাভরে?কেও দিক আর না দিক আমার ঘরের ছোট্ট পতাকাটিকে আমি সালাম দিয়ে ক্ষমা চাইছি,আর মায়ের কাছে প্রতিজ্ঞা করছি আরও একবার স্বাধীনতার স্বাদ নিতে চাই,চাই আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ ।যেখানে খুজে পাব সত্যিকারের স্বাধীনতা ।
“আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি”