somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র -- চতুর্থ পর্ব

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অভ্যন্তরীন অভিবাসন

এই শতাব্দীর আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীন অভিবাসন। প্রায় ১০ লক্ষ ৪০ হাজার কালো আমেরিকান দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে উত্তর ও মধ্যে-পশ্চিম অঞ্চলের রাজ্যগুলিতে চলে আসে। বিশেষ করে এই রাজ্যগুলির বড়বড় শহরগুলিতে তারা বসবাস শুরু করে। এই অভ্যন্তরীন অভিবাসনের পিছনে মূলত দুইটা কারণ ছিল, যথা- (১) বর্ণবাদী ঘৃণা থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখা, এবং (২) ভালো কর্মসংস্থান লাভ করা। দুই দফায় এই অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, প্রথম দফা ১৯১০ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফা ১৯৪০ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত। এই প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে শতকরা ৯০ ভাগ আফ্রিকান-আমেরিকান গ্রাম অঞ্চল থেকে শহর অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়। অর্থাৎ বর্তমান শতকরা ৯০ ভাগ আফ্রিকান-আমেরিকান শহরে বাস করে। ১৯০৯ সালে কালোদের উন্নয়নের জন্য জাতীয় সংস্থা (The National Association for the Advancements of Colored Peoples) গঠন করা হয়। এতদসত্ত্বেও ১৯১৯ সালে কয়েকটা শহরে বর্ণ দাঙ্গা সংঘটিত হয়।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনকে সীমিত করার জন্য ১৯২১ সালে একটা আইন পাস করা হয়। যা Emergency Quota Act বা Emergency Immigration Act of 1921 বা Immigration Restriction Act of 1921 নামে পরিচিত। এই আইন পাশের মাধ্যমে আমেরিকার অভিবাসন নীতির ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এই আইনের মাধ্যমে প্রতি বছরের জন্য অভিবাসীদের একটা সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়া হয় এবং একটা কোটা পদ্ধতি চালু করা হয়।

ইমার্জেন্সি কোটা আইনে বিধান রাখা হয়, ১৯১০ সালের আদমশুমারি অনুসারে যে দেশের যত সংখ্যক মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে বাস করে তার শতকরা ৩ ভাগ ওই দেশ থেকে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হিসাবে আসতে পারবে। এরফলে পূর্ব ও দক্ষিণ ইউরোপের বা ইউরোপের বাইরের দেশগুলির তুলোনায় উত্তর ইউরোপ থেকে অধিক সংখ্যক মানুষ প্রতি বছর অভিবাসী হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে পারবে। তবে পেশাজীবীদের জন্য দেশ নির্বিশেষে কোনো কোটা থাকবে না। তারা যে কোনো সংখ্যায় আসতে পারবে। এই আইনে ল্যাটিন আমেরিকান দেশগুলির জন্য কোনো সংখ্যা সীমা নির্ধারণ করা হয় নাই। আবার যেসমস্ত দেশের সাথে অভিবাসনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্টের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি আছে, সে ক্ষেত্রেও এই আইন প্রযোজ্য হবে না।

ইমার্জেন্সি কোটা আইনের কারণে অভিবাসীর সংখ্যা কমে আসতে থাকে। ১৯২০ সালে যেখানে ৮,০৫,২২৮ জন অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে আসে, সেখানে ১৯২১-২২ সালে আসে ৩,০৯,৫৫৬ জন। পূর্ব ও দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলি থেকে অভিবাসীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপ ও আমেরিকা উভয়েই অর্থনৈতিক মন্দা ও সামাজিক অস্থিরতা দেখা দেয়। ইউরোপে যুদ্ধের ক্ষয়-ক্ষতি, রুশ বিপ্লব, অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের পতন, ওসমানীয় খিলাফতের পতন ইত্যাদি কারণে ওই সময় অনেক মানুষ অভিবাসী হিসাবে আমেরিকাতে আসে। এতে আমেরিকাতে বেকারত্বের সংখ্যা বেড়ে যায়।

বেকারত্ত্ব বেড়ে যাওয়ার কারণে আমেরিকাতে অভিবাসন বিরোধী আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠে। এর পরিপ্রেক্ষেতে নতুন অভিবাসন আইন, ১৯২৪ (Immigration Act of 1924) পাস হয়। নতুন আইনের ফলে অভিবাসী আগমনের সংখ্যা আরো কমে যায়। এর পর অভিবাসনের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধা এবং পরিবার ভিত্তিক নতুন আইন, অভিবাসন এবং জাতীয়তা আইন, ১৯৬৫ (Immigration and Nationality Act of 1965) প্রণয়ন করা হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৩২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×