গান পছন্দ করে না এমন লোক পাওয়া যাবেনা। কম বেশী সবাই গান শুনে, ব্যস্ততার কারণে অনকে্ই হয়ত আমার মতো সপ্তাহে ১দিন গানগুলো ঝালাই করেন। গানের সাথে গানের কথা হাতের কাছে থাকলে আরও মজার, নিজেকে তখন গায়ক মনে হবে।
আমার পছন্দের কিছু গানের কথা নিচে দিলাম। আপনিও আপনার গানের পছন্দের লিষ্ট জানাতে পারেন।
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
শাহ আব্দুল করিম
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
আমরা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান
মিলিয়া বাউলা গান আর মুর্শিদি গাইতাম
হিন্দু বাড়িতে যাত্রা গান হইত
নিমন্ত্রণ দিত আমরা যাইতাম
জারি গান, বাউল গান
আনন্দের তুফান
গাইয়া সারি গান নৌকা দৌড়াইতাম
বর্ষা যখন হইত,
গাজির গান আইত,
রংগে ঢংগে গাইত
আনন্দ পাইতাম
কে হবে মেম্বার,
কে বা সরকার
আমরা কি তার খবরও লইতাম
হায়রে আমরা কি তার খবরও লইতাম
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
করি যে ভাবনা
সেই দিন আর পাব নাহ
ছিল বাসনা সুখি হইতাম
দিন হইতে দিন
আসে যে কঠিন
করিম দীনহীন কোন পথে যাইতাম
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম….
+++++++++++++++++++++++
আগে যদি জানতাম
ডাউনলোড
Click This Link
আগে যদি জানতাম তবে মন ফিরে চাইতাম
এই জ্বালা আর প্রাণে সহে না
ও মন রে…
কিসের তরে রয়ে গেলি তুই
বলেছিলি তুই যে আমায়
আমি নাকি ভুলে যাবো
ভুলে আমি ঠিকই তো যেতাম
পোড়া মনে তোরই কথা
বারে বারে বেজে ওঠে
তাই তোকে আর ভোলা হলো না রে
এই জ্বালা আর প্রাণে সহে না রে
জানিনা কেনো যে আমায়
একা ফেলে চলে গেলি
ভুলেও কি মনে পড়ে না
তোরই মতো কোনদিনও
আমিও যে ভুলে যাবো
তবু এই জ্বালা প্রাণে সইবো না রে
এই জ্বালা আর প্রাণে সহে না
+++++++++++++++++++
লোকে বলে বলেরে
হাছন রাজা
লোকে বলে বলেরে
ঘর-বাড়ি ভালা নাই আমার
কি ঘর বানাইমু আমি শূণ্যেরও মাঝার।।
ভালা কইরা ঘর বানাইয়া
কয়দিন থাকমু আর
আয়না দিয়া চাইয়া দেখি
পাকনা চুল আমার।।
এ ভাবিয়া হাসন রাজা
ঘর-দুয়ার না বান্ধে
কোথায় নিয়া রাখব আল্লায়
তাই ভাবিয়া কান্দে।।
জানত যদি হাসন রাজা
বাঁচব কতদিন
বানাইত দালান-কোঠা
করিয়া রঙিন।।
++++++++++++++++++
চলো না ঘুরে আসি অজানাতে
শিল্পী- হ্যাপী আখন্দ
চলো না ঘুরে আসি অজানাতে
যেখানে নদী এসে থেমে গেছে
আবার এলো যে সন্ধ্যা
শুধু দু’জনে
ঝাউবনে হাওয়াগুলো খেলছে
সাঁওতালি মেয়েগুলো চলছে
লাল লাল শাড়ীগুলো উড়ছে
তার সাথে মন মোর দুলছে
ঐ দুর আকাশের প্রান্তে
সাত রঙা মেঘ গুলো উড়ছে ।।
আবার এলো যে সন্ধ্যা
শুধু দু’জনে
এই বুঝি বয়ে গেল সন্ধ্যা
ভেবে যায় কি জানি কি মনটা
পাখিগুলো নীড়ে ফিরে চলছে
গানে গানে কি যে কথা বলছে
ভাবি শুধু এখানেই থাকবো
ফিরে যেতে মন নাহি চাইছে ।।
আবার এলো যে সন্ধ্যা
শুধু দু’জনে
++++++++++++++++++++++++++++
এই রুপালি চাঁদে
শিল্পীঃ তপন চৌধুরী, শম্পা রেজা
এই রুপালি চাঁদে
তোমারই হাত দুটি
মেহেদি লালরঙে আমি
সাজিয়ে দিতে চাই
আহা কী শোনালে মন রাঙালে
এভাবে সারাজীবন যেন
তোমাকে কাছে পাই
শুধু একটি গোলাপ চেয়ে
পাঠালে চিঠি শুনে
মনেরই আকাশে ভাসে
তারা মিটিমিটি
তুমি কাছে এসে এ-হৃদয়
রাঙালে যদি
তাতে আমারই নাম লিখে যাও
আমি তোমাকে পেয়ে
সুখেই আছি যেন
ফুলেরই বুকে অলি
কত কাছাকাছি
এই মেহেদিরাতে
সাথে আছ তুমি
যেন তুমি বিনে কিছু নাই
শুধু তোমাকে কাছে পাই
+++++++++++++++++++++++++++++++
আমি বাংলায় গান গাই
প্রতুল মুখোপাধ্যায়
আমি বাংলায় গান গাই, আমি বাংলায় গান গাই,
আমি আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই
আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন, আমি বাংলায় বাঁধি সুর
আমি এই বাংলার মায়াভরা পথে হেঁটেছি এতটা দূর
বাংলা আমার জীবনানন্দ বাংলা প্রাণের সুখ
আমি একবার দেখি, বারবার দেখি, দেখি বাংলার মুখ |
আমি বাংলায় কথা কই, আমি বাংলার কথা কই
আমি বাংলায় ভাসি, বাংলায় হাসি, বাংলায় জেগে রই
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় চিত্কার
বাংলা আমার দৃপ্ত স্লোগান ক্ষিপ্ত তীর ধনুক,
আমি একবার দেখি, বারবার দেখি, দেখি বাংলার মুখ |
আমি বাংলায় ভালবাসি, আমি বাংলাকে ভালবাসি
আমি তারি হাত ধরে সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে আসি
আমি যা’কিছু মহান বরণ করেছি বিনয় শ্রদ্ধায়
মেশে তেরো নদী সাত সাগরের জল গঙ্গায় পদ্মায়
বাংলা আমার তৃষ্ণার জল তৃপ্ত শেষ চুমুক
আমি একবার দেখি, বারবার দেখি, দেখি বাংলার মুখ |
++++++++++++++++++++++++
এই পদ্মা এই মেঘনা
এই পদ্মা, এই মেঘনা,
এই যমুনা সুরমা নদী তটে।
আমার রাখাল মন, গান গেয়ে যায়
এই আমার দেশ, এই আমার প্রেম
আনন্দ বেদনায়, মিলন বিরহ সংকটে।।
এই মধুমতি ধানসিঁড়ি নদীর তীরে
নিজেকে হারিয়ে যেন পাই ফিরে ফিরে
এক নীল ঢেউ কবিতার প্রচ্ছদ পটে।।
এই পদ্মা, এই মেঘনা,
এই হাজারো নদীর অববাহিকায়।
এখানে রমণীগুলো নদীর মতন
নদী ও রমণীগুলো শুধু কথা কয়।।
এই অবারিত সবুজের প্রান্ত ছুঁয়ে
নির্ভয় নীলাকাশ রয়েছে নুয়ে
যেন হৃদয়ের ভালোবাসা হৃদয়ে ফুটে।।
+++++++++++++++
সায়ানের গান
একটা কোন বিশ্বাসী মন
ধরবে আমার হাত...
ঘর সাজাবে গান শোনাবে
ভোর করে দেবে রাত ...
কোলে আমার ঘুমন্ত এক
সুস্থ শিশুর মুখ...
বন্ধু আমার ওইটুকুতে
ভরবে না যে বুক...
একটা ভাঙ্গা কুটির
একটা বেলজিয়াম এর আয়না...
বর্ষা এলে খিঁচুড়ি আর
আলমারিতে আয়না...
বারান্দাতে ঝুলবে খাঁচায়
কথা বলা ময়না
বন্ধু আমার এতো অল্প-
-সল্পে কিছু হয় না...
একটা ভালো চাকরীটার
বলার মতন বেতন...
বছর শেষে বোনাস
তারপরেই- বিদেশ ভ্রমণ
একটা ভালো চাকরীটার
নাদুস-নুদুস বেতন...
বছর শেষেই বোনাস
তারপরেই বিদেশ ভ্রমণ
একটা ভালো গাড়ির সঙ্গে
বারিধারায় বাড়ি...
তাও যদি দাও
থামবে না তো
আমার আহাজারি...
হ্রিদয় যার দরিদ্র
তার অভাবটুকুই আপন...
আমি সচ্ছল তাই
এঁকেছি দু'চোখে
সচ্ছলতার স্বপন...
ছোট্ট যাদের হ্রিদয়
তারা অল্প পেলেই খুশি
আমার হ্রিদয় সবার জন্য
সব চায় বেশি বেশি...
আমার তো নেই দেবার অনেক
পারছি না তো দিতে
পারবো না তো না দেবার
এ লজ্জ্বা মেনে নিতে...
আমার ও ঠিক তোমার মত
জীবন জড়া দৈন্য
কিন্তু আমার চাওয়ার বেলায়
নেই কিছু কার্পণ্য.............
++++++++++++++++++++++++++++++
কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
(সুরঃ সুপর্ণ কান্তি ঘোষ, শিল্পীঃ মান্না দে)
কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
আজ আর নেই
কোথায় হারিয়ে গেল
সোনালী বিকেলগুলো সেই
আজ আর নেই ।
নিখিলেশ প্যারিসে, মঈদুল ঢাকাতে
নেই তারা আজ কোন খবরে
গ্র্যাণ্ডের গীটারিস্ট গোয়ানীস ডিসুজা
ঘুমিয়ে আছে যে আজ কবরে
কাকে যেন ভালোবেসে আঘাত পেয়ে যে শেষে
পাগলা গারদে আছে রমা রায়
অমলটা ধুঁকছে দুরন্ত ক্যানসারে
জীবন করে নি তাকে ক্ষমা হায় ।
সুজাতাই আজ শুধু সবচেয়ে সুখে আছে
শুনেছি তো লাখ্ পতি স্বামী তার
হীরে আর জহরতে আগাগোড়া মোড়া সে
গাড়ীবাড়ী সবকিছু দামী তার
আর্ট কলেজের ছেলে নিখিলেশ সান্যাল
বিজ্ঞাপনের ছবি আঁকতো
আর চোখ ভরা কথা নিয়ে
নির্বাক শ্রোতা হয়ে
ডিসুজাটা বসে শুধু থাকতো ।
একটা টেবিলে সেই তিন চার ঘন্টা
চারমিনারটা ঠোঁটে জ্বলতো
কখনো বিষ্ণু দে কখনো যামিনী রায়
এই নিয়ে তর্কটা চলতো
রোদ ঝড় বৃষ্টিতে যেখানেই যে থাকুক
কাজ সেরে ঠিক এসে জুটতাম
চারটেতে শুরু হয়ে জমিয়ে আড্ডা মেরে
সাড়ে সাতটায় ঠিক উঠতাম ।
কবি কবি চেহারা কাঁধেতে ঝোলানো ব্যাগ
মুছে যাবে অমলের নামটা
একটা কবিতা তার হোল না কোথাও ছাপা
পেলনা সে প্রতিভার দামটা
অফিসের সোশালে ‘অ্যামেচার’ নাটকে
রমা রায় অভিনয় করতো
কাগজের রিপোর্টার মঈদুল এসে রোজ
কি লিখেছে তাই শুধু পড়তো ।
সেই সাত জন নেই আজ
টেবিলটা তবু আছে
সাতটা পেয়ালা অজোও খালি নেই
একই সে বাগানে আজ
এসেছে নতুন কুঁড়ি
শুধু সেই সেদিনের মালী নেই
কত স্বপনের রোদ ওঠে এই কফি হাউসে
কত স্বপ্ন মেঘে ঢেকে যায়
কত জন এল গেলো
কতজনই আসবে
কফি হাউসটা শুধু থেকে যায় ।
কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
আজ আর নেই
কোথায় হারিয়ে গেল
সোনালী বিকেলগুলো সেই
আজ আর নেই ।
++++++++++++++++++
এই গানটি প্রত্যেকটি সন্তানের ভালো ভাবে শোনা উচিত
বৃদ্ধাশ্রম
শিল্পীঃ নচিকতা
ছেলে আমার মস্ত মানুষ,মস্ত অফিসার
মস্ত ফ্ল্যাটে যায় না দেখা এপার ওপার।
নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামী দামী
সবচেয়ে কম দামী ছিলাম একমাত্র আমি।
ছেলের আমার আমার প্রতি অগাধ সম্ভ্রম
আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম !
আমার ব্যবহারের সেই আলমারি আর আয়না
ওসব নাকি বেশ পুরনো,ফ্ল্যাটে রাখা যায় না।
ওর বাবার ছবি,ঘড়ি-ছড়ি,বিদেয় হলো তাড়াতাড়ি
ছেড়ে দিলো, কাকে খেলো, পোষা বুড়ো ময়না।
স্বামী-স্ত্রী আর আ্যালসেশিয়ান-জায়গা বড়ই কম
আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম!
নিজের হাতে ভাত খেতে পারতো নাকো খোকা
বলতাম আমি না থাকলে কি করবি রে বোকা?
ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদতো খোকা আমার কথা শুনে-
খোকা বোধ হয় আর কাঁদে না,নেই বুঝি আর মনে।
ছোট্টবেলায় স্বপ্ন দেখে উঠতো খোকা কেঁদে
দু’হাত দিয়ে বুকের কাছে রেখে দিতাম বেঁধে
দু’হাত আজো খুঁজে,ভুলে যায় যে একদম-
আমার ঠিকানা এখন বৃদ্ধাশ্রম!
খোকারও হয়েছে ছেলে,দু’বছর হলো
তার তো মাত্র বয়স পঁচিশ,ঠাকুর মুখ তোলো।
একশো বছর বাঁচতে চাই এখন আমার সাধ
পঁচিশ বছর পরে খোকার হবে ঊনষাট।
আশ্রমের এই ঘরটা ছোট,জায়গা অনেক বেশি-
খোকা-আমি,দু’জনেতে থাকবো পাশাপাশি।
সেই দিনটার স্বপ্ন দেখি ভীষণ রকম
মুখোমুখি আমি,খোকা আর বৃদ্ধাশ্রম!
মুখোমুখি আমি,খোকা আর বৃদ্ধাশ্রম!
মুখোমুখি আমি,খোকা আর বৃদ্ধাশ্রম!
+++++++++++++++++++++
ও আকাশ প্রদীপ জ্বেলো না
ও আকাশ প্রদীপ জ্বেলো না
ও বাতাস আঁখি মেলো না
আমার প্রিয়া লজ্জা পেতে পারে আহা
কাছে এসেও ফিরে যেতে পারে।।
তার সময় হলো আমায় মালা দেবার
সে যে প্রাণের সুরে গান শোনাবে এবার
সেই সুরেতে ঝর্ণা তুমি চরণ ফেলো না।।
ও পলাশ ফিরে চেও না
ও কোকিল তুমি গেও না
লাজুক লতা হয়ত গো লাজ পাবে
তার মুখের কথা মুখে রয়ে যাবে
তার অনেক ভীরু স্বপ্ন জাগে আশায়
আহা হৃদয় মাঝে সুরের খেয়া ভাসায়
দোহাই বকুল ছন্দে তাহার গন্ধ ঢেলো না।।
+++++++++++++++++
আমার সোনার ময়না পাখি (মনপুরা)
কথা *ও সুর: মোহাম্মদ ওসমান খান কন্ঠ: অর্ণব
আমার সোনার ময়না পাখি
কোন দেশেতে গেলা উইড়া রে
দিয়া মোরে ফাঁকি রে
আমার সোনার ময়না পাখি ।।
সোনা বরণ পাখিরে আমার
কাজল বরণ আঁখি
দিবানিশি মন চায়রে
বাইন্ধা তরে রাখি রে
আমার সোনার ময়না পাখি ।।
দেহ দিছি প্রাণরে দিছি
আর নাই কিছু বাকী
শত ফুলের বাসন দিয়ারে
অঙে দিছি মাখি রে
আমার সোনার ময়না পাখি ।।
যাইবা যদি নিঠুর পাখি
ভাসাইয়া মোর আঁখি
এ জীবন যাবার কালে রে
ও পাখি রে
একবার যেন দেখি রে
আমার সোনার ময়না পাখি ।।
++++++++++++++++++
তোমার ঘরে বাস করে কারা
তোমার ঘরে বাস করে কারা
ও মন জান না,
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা,
মন জান না
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা
এক জনায় ছবি আঁকে এক মনে,
ও রে মন
আরেক জনায় বসে বসে র ংমাখে
ও আবার সেই ছবিখান নষ্ট করে
কোন জনা,কোন জনা
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা
এক জনায় সুর তোলে এক তারে,
ও মন, আরেক জন মন্দিরাতে তাল তোলে
ও আবার বেসুরো সুর ধরে দেখো
কোন জনা, কোন জনা
তোমর ঘরে বসত করে কয় জনা
রস খাইয়া হইয়া মাত, ঐ দেখো
হাত ফসকে যায় ঘোড়ার লাগাম
সেই লাগাম খানা ধরে দেখো
কোন জনা, কোন জনা
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা
+++++++++++++++++++++++++++
সোনা দিয়া বান্ধাইয়াছি ঘর
ব্যান্ড - বাংলা এ্যলবাম - কিংকর্তব্যবিমূঢ়
সোনা দিয়া বান্ধাইয়াছি ঘর
ও মন রে ঘুণে করলো জড়ো জড়
আমি কি করে বাস করিব এই ঘরে রে
তুই সে আমার মন
মন তোরে পারলাম না বুঝাইতে রে
তুই সে আমার মন
তিন তক্তার এ নৌকা খানি
ও মনরে গাঙে গাঙে চুয়ায় পানি
আমি কি করে সেঁচিবো নৌকার পানিরে
তুই সে আমার মন
মন তোরে পারলাম না বুঝাইতে রে
তুই সে আমার মন
আসি রাইতে ভবের মাঝারে
ও মনরে স্বপ্ন দেইখা রাইলি ভুলে
আমার এই স্বপন কি মিথ্যা হইতে পারে রে
তুই সে আমার মন
মন তোরে পারলাম না বুঝাইতে রে
তুই সে আমার মন
+++++++++++++++++++++
দেখা হবে বন্ধু কারণে আর অকারণে
আর্টিস্টঃপার্থ বড়ুয়া, সোলস
দেখা হবে বন্ধু কারণে আর অকারণে
দেখা হবে বন্ধু চাপা কোনো অভিমানে
দেখা হবে বন্ধু সাময়িক বৈরিতায় অস্থির অপাগরতায়
দেখা হবে বন্ধু নাটকীয় কোনো বিনয়ী ভঙ্গিতে
ভালোবাসার শুভ্র ইঙ্গিতে
দেখা হবে বন্ধু নিয়ত প্রতিদিন পাশ কেটে যাওয়া
সন্ধ্যার হিমেল হাওয়ায়
দেখা হবে বন্ধু
শ্লোগান মুখর কোনো এক মিছিলে
ব্যস্ততা থেকে ধার দিলে
দেখা হবে বন্ধু
ভীষণ খেয়ালী মনের আতিথেয়তায়
উচ্ছাসে প্রনয় প্রাক্কালে
++++++++++++++++++
মন শুধু মন ছুঁয়েছে
ব্যান্ড - সোলস
মন শুধু মন ছুঁয়েছে
ও সেতো মুখ খুলেনি
সুর শুধু সুর তুলেছে
ভাষা তো দেয় নি
চোখের দৃষ্টি যেন
মনের গীতি কবিতা
বুকের ভালোবাসা
যেথায় রয়েছে গাঁথা
আমিতো সেই কবিতা পড়েছি
মনে মনে সুর দিয়েছি
কেউ জানে নি
যখনি তোমার চোখে
আমার মুখ খানি দেখি
স্বপনও কুসুম থেকে
হৃদয়ে সুরভি মাখি
তুমি কি সেই সুরভি পেয়েছো
স্বপনের দ্বার খুলেছো
কিছু জানিনি
মন শুধু মন ছুঁয়েছে
ও সেতো মুখ খুলেনি
সুর শুধু সুর তুলেছে
ভাষা তো দেয় নি
++++++++++++++++++++
ঐ দুর পাহাড়ের ধারে
উইনিং
ঐ দুর পাহাড়ের ধারে
দিগন্তেরই কাছে
নিঃসঙ্গ বসে একটি মেয়ে
গাইছে
আপন সুরে আপন সুরে আপন সুরে
ঐ দুর পাহাড়ের ধারে
দিগন্তেরই কাছে
নিঃসঙ্গ বসে একটি মেয়ে
গাইছে
আপন সুরে আপন সুরে আপন সুরে
আমি সেই সুরেরই টানে
ছুটে চলেছি তার পানে
তার বেদনার সঙ্গি হতে
সে সুর আমায়
শুধু ডাকে শুধু ডাকে শুধু ডাকে
ঐ দুর পাহাড়ের ধারে
দিগন্তেরই কাছে
নিঃসঙ্গ বসে একটি মেয়ে
গাইছে
আপন সুরে আপন সুরে আপন সুরে
মনে হয় তার সেই সুরে
কত বেদনা আছে লুকিয়ে ।।
শত দুঃখের রজনী পেরিয়ে
সেই সুর যেন
ভেসে আসে ভেসে আসে ভেসে আসে
ঐ দুর পাহাড়ের ধারে
দিগন্তেরই কাছে
নিঃসঙ্গ বসে একটি মেয়ে
গাইছে
আপন সুরে আপন সুরে আপন সুরে
++++++++++++++++++++++++
বাংলাদেশ
শিল্পীঃ জেম্স
তুমি মিশ্রিত লগ্ন মাধুরীর জলে ভেজায় কবিতায়
আছো সরোয়ার্দী,শেরেবাংলা, ভাসানীর শেষ ইচ্ছায়
তুমি বঙ্গবন্ধুর রক্তে আগুনে জ্বলা জ্বালাময়ী সে ভাষন
তুমি ধানের শীষে মিশে থাকা শহীদ জিয়ার স্বপন,
তুমি ছেলে হারা মা জাহানারা ঈমামের একাত্তরের দিনগুলি
তুমি জসীম উদ্দিনের নকশী কাথার মাঠ, মুঠো মুঠো সোনার ধুলি,
তুমি তিরিশ কিংবা তার অধিক লাখো শহীদের প্রান
তুমি শহীদ মিনারে প্রভাত ফেরীর, ভাই হারা একুশের গান,
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি,
জন্ম দিয়েছ তুমি মাগো, তাই তোমায় ভালোবাসি।
আমার প্রানের বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি
প্রানের প্রিয় মা তোকে, বড় বেশী ভালোবাসি।
তুমি কবি নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা উন্নত মম্ শীর
তুমি রক্তের কালিতে লেখা নাম, সাত শ্রেষ্টবীর
তুমি সুরের পাখি আব্বাসের, দরদ ভরা সেই গান
তুমি আব্দুল আলীমের সর্ব্নাশা পদ্মা নদীর টান।
তুমি সুফিয়া কামালের কাব্য ভাষায় নারীর অধিকার
তুমি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের, শাণীত চুরির ধার
তুমি জয়নুল আবেদীন, এস এম সুলতানের রঙ তুলীর আছড়
শহীদুল্লা কায়সার, মুনীর চৌধুরীর নতুন দেখা সেই ভোর।
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি,
জন্ম দিয়েছ তুমি মাগো, তাই তোমায় ভালোবাসি।
আমার প্রানের বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি
প্রানের প্রিয় মা তোকে, বড় বেশী ভালোবাসি।
তুমি মিশ্রিত লগ্ন মাধুরীর জলে ভেজায় কবিতায়
তুমি বাঙ্গালীর গর্ব, বাঙ্গালীর প্রেম প্রথম ও শেষ ছোঁয়ায়,
তুমি বঙ্গবন্ধুর রক্তে আগুনে জ্বলা জ্বালাময়ী সে ভাষন
তুমি ধানের শীষে মিশে থাকা শহীদ জিয়ার স্বপন
তুমি একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে বেজে উঠ সুমধুর,
তুমি রাগে অনুরাগে মুক্তি সংগ্রামের সোনা ঝরা সেই রোদ্দুর
তুমি প্রতিটি পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার, অভিমানের সংসার
তুমি ক্রন্দন, তুমি হাসি, তুমি জাগ্রত শহীদ মিনার
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি,
জন্ম দিয়েছ তুমি মাগো, তাই তোমায় ভালোবাসি।
আমার প্রানের বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি
প্রানের প্রিয় মা তোকে, বড় বেশী ভালোবাসি
+++++++++
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো, একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।।
ছেলে হারা শত মায়ের অশ্রু
গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী।।
আমার সোনার দেশের
রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী।।
জাগো নাগিনীরা জাগো জাগো
জাগো কাল বোশেখীরা
শিশু হত্যার বিক্ষোভে আজ
কাপুক বসুন্ধরা।।
+++++++++++++++
রিমঝিম রিমঝিম
শিল্পীঃ পার্থ বড়ুয়া ব্যান্ডঃ সোল্স
রিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি পড়ে
মন ধরিয়ায় তুফান উঠে,
উড়ু উড়ু হাওয়াতে আজ ধুম লেগেছে পাগলা তালে।
মনের মানুষ এমন দিনে মনে পড়ে যায়,
মনের খবর তাকে কি করে জানায়।
আকাশ হলে তোমার চোখে হারাতাম
মেঘ হলে তোমায় উড়িয়ে নিতাম
নদী হলে ঠিকি খুজে পেতাম
হয়তো হৃদয়ের মোহনায়।
রাত্রি হলে কাছে যেতাম
দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হতাম
ভোর হলে ঠিকি খুজে পেতাম
হয়তো তোমারি ঠিকানা।
++++++++++++
আমি তোমাকে বলে দেব
সঞ্জীব চৌধুরী
আমি তোমাকেই বলে দেব
কিযে একা দীর্ঘ রাত,
আমি হেটে গেছি বিরান পথে।
আমি তোমাকেই বলে দেব,
সেই ভুলে ভরা গল্প
কড়া নেড়ে গেছি ভূল দরজায়
ছুয়ে কান্নার রং, ছুয়ে জোছনার ছায়া। ২ (ঐ)
আমি কাউকে বলিনি সে নাম
কেউ জানেনা, না জানে আড়াল।২
জানে কান্নার রং, জানে জোছনার ছায়া। ২
তবে এই হোক ফিরে জাগুক প্লাবন
দিন হোক লাবন্য হৃদয়ে শ্রাবণ।২
তুমি কান্নার রং তুমি জোছনার ছায়া। ২ ঐ
++++++++++++++++++++++++
শাহ আঃ করিমের কালজয়ী একটি গান
গাড়ি চলে না , চলে না , চলে না রে
গাড়ি চলে না।
চড়িয়া মানবগাড়ি
যাইতেছিলাম বন্ধুর বাড়ি
মধ্য পথে ঠেকলো গাড়ি
উপায় বুদ্ধি মিলে না ।
মহাজনে যত্ন করে
পেট্রোল দিলো টেংকি ভরে
গাড়ি চালায় মন ড্রাইভারে
ভালো - মন্দ বোঝে না।
গাড়িতে পেসিন্জারে
অযথা গন্ডগোল করে
হেন্ডিম্যান , কন্ডেকটারে
কেউর কথা কেউ শোনে না।
পার্স সবগুলো ক্ষয় হয়েছে
ইন্জিনে ময়লা জমেছে
ডায়নমা বিকল হয়েছে
লাইটগুলো ঠিক জ্বলে না।
ইন্জিনে ব্যতিক্রম করে
কন্ডিশন ভালো নয় রে
কখন জানি ব্রেক ফেইল করে
ঘটায় কোন দুর্ঘটনা ।
আব্দুল করিম ভাবছে এবার
কন্ডেম গাড়ী কি করবো আর
সামনে বিষম অন্ধকার
করতেছি তাই ভাবনা ।
+++++++++++++++++++++++++
স্বপ্ন দেখবো বলে
মৌসুমী ভৌমিক
আমি শুনেছি সেদিন তুমি সাগরের ঢেউ-এ চেপে
নীলজল দীগন্ত ছুঁয়ে এসেছ,
আমি শুনেছি সেদিন তুমি নোনাবালি তীর ধরে
বহুদূর বহুদূর হেঁটে এসেছ|
আমি কখনও যাইনি জলে,
কখনও ভাসিনি নীলে,
কখনও রাখিনি চোখ,
ডানামেলা গাঙচিলে|
আবার যেদিন তুমি সমুদ্রস্নানে যাবে
আমাকেও সাথে নিও,
নেবে তো আমায় ?
বল, নেবে তো আমায় !
আমি শুনেছি সেদিন নাকি তুমি তুমি তুমি মিলে
তোমরা সদলবলে সভা করেছিলে,
আর সেদিন তোমরা নাকি অনেক জটিল ধাঁধাঁ
না-বলা অনেক কথা, কথা তুলেছিলে :
কেন শুধু ছুটে ছুটে চলা
একই একই কথা বলা
নিজের জন্য বাঁচা নিজেকে নিয়ে ?
যদি ভালবাসা না-ই থাকে
শুধু একা একা লাগে
কোথায় শান্তি পাব, কোথায় গিয়ে ?
বল, কোথায় গিয়ে ?
আমি শুনেছি তোমরা নাকি এখনও স্বপ্ন দ্যাখো,
এখনও গল্প লেখো, গান গাও প্রাণ ভরে,
মানুষের বাঁচা মরা এখনও ভাবিয়ে তোলে,
তোমাদের ভালবাসা এখনো গোলাপে ফোটে|
আস্থা-হারানো এই মন নিয়ে আমি আজ
তোমাদের কাছে এসে দুহাত পেতেছি,
আমি দু’চোখের গহ্বরে শূণ্যতা দেখি শুধু
রাতঘুমে আমি কোনো স্বপ্ন দেখিনা,
তাই স্বপ্ন দেখবো বলে
আমি দু’চোখ পেতেছি|
তাই তোমাদের কাছে এসে
আমি দু’হাত পেতেছি|
তাই স্বপ্ন দেখবো বলে
আমি দু’চোখ পেতেছি|
++++++++++++++++
সমাজকে দেখাতে তুমি পড়ো যে নামাজ
নকুল কুমার বিশ্বাস
সমাজকে দেখাতে তুমি পড়ো যে নামাজ
সে নামাজে হবে নাকো পরকালের কাজ
তুমি জালেম হয়ে ধরো যদি আলেমরই সাজ
সে নামাজে হবে নাকো পরকালের কাজ
রোজা রেখে সোজা কভু না হয় যদি মন
লোক দেখানো বোঝা টেনে লাভ কি অকারণ
যদি বন্ধ না হয় রিপুর তাড়ন
কু-স্বভাবের রেওয়াজ
সে নামাজে হবে নাকো পরকালের কাজ
ঈমান ঠিক করিয়া করো হজ্ব আর যাকাত
নইলে বিফল হবে কালাম-কলমা হাজারো রাকাত
যদি না পৌঁছায় তোর ওই মোনাজাত
পাক দরবারের মাঝ
সে নামাজে হবে নাকো পরকালের কাজ
আরাম করে হারাম খেয়ে হারালি ঈমান
অমান্য করিলি আল্ কোরাআনের বিধান
আসলে হাশরের ময়দানের নিদান
সাজাবিরে ঠকবাজ
সে নামাজে হবে নাকো পরকালের কাজ
নকুল বলে জীবনে তোর গুনা সীমাহীন
মক্কা গেলেও রক্ষা নাইরে কেয়ামতের দিন
তুই দোজখবাসী হবি সেদিন
পড়বে গজবেরই বাজ
সে নামাজে হবে নাকো পরকালের কাজ
++++++++++++++
দেখ না মন ঝাঁকমারি এই দুনিয়াদারী ।
পরিয়ে কৌপণি ধ্বজা মজা উড়ালো ফকিরী। ।
বড়ো আশার বাসা এ ঘর
পড়ে রবে কোথারে কার
ঠিক নাই তারি,
পিছে পিছে ঘুরছে শমন
কোনদিন হাতে দেবে ডুরি । ।
বড়ো দরদের ভাই বন্ধুজনা
ম'লে সঙ্গে কেউ যাবে না
মন তোমারই,
খালি হাতে একা পথে
বিদায় করে দেবে তোরি । ।
যা করো তাই কররে মন
পিছের কথা রেখো স্মরণ
বরাবরই,
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয় শোনরে লালন
হোসনে কারো ইন্তেজারী।
দুনিয়াটা একটা ঝাঁকমারি, কোনকিছুর তাল থাকে না, মায়ার কারণে যখন যেরকম হবার কথা সেরকম হয় না। পরিবর্তনশীল এ জগতে তাই আস্হা রাখা যায় না।
আমাদের এ মলমূত্রময় শরীরটা শেয়াল কুকুরের খাবার, কবর দিলে পোকামাকড়ে খায়।এ শরীর নশ্বর, কোনদিন কার ডাক আসবে তার কোন ঠিক নেই।
মরে গেলে ভাই-বোন, বন্ধু কেউ সাথে যাবে না, খালিহাতে নিজেকেই শুধু চলে যেতে হবে। বরং কারো মৃত্যুতে জীবিতরা মনের গভীরে একধরণের তৃপ্তি পায়, মৃতের স্মৃতিচারণ করে আসলে নিজে যে বেঁচে আছে সেটাই উপভোগ করে। মানুষের গড়নটাই এমন আনন্দস্বরুপ যে দুঃখ কখনও চিরস্হায়ী হয় না।
দুনিয়ায় যার যা করতে ইচ্ছা হয় সেটাই করা উচিত কারণ এরকম সুযোগ আবার কখন হয় কে জানে? কিন্তু অতীত ভুলে গেলে চলবে না, আমি কে, কেন দুনিয়ায় এসেছি সেটা সবসময় স্মরণ রাখলে দুনিয়ায় আসা সার্থক হবে। লালন বলছেন এজন্য কারও উপর নির্ভরশীল বা কারও দাসত্ব করার কোন দরকার নেই।
==========================
বলি মা তোর চরণ ধরে
ননী চুরি আর করবনা
আর আমারে মারিস্নে মা
আর আমারে মারিস্নে মা
ননীর জন্যে আজ আমারে
মারলি মা তুই বেধে ধরে
দয়া নাই মা তোর অন্তরে
স্বল্পেতে সব গেলো জানা।
পরের ছেলে পরে মারে
কেঁদে যেয়ে মা'কে বলে
সেই মা জননী নিষ্ঠুর হলে
কে বোঝে শিশুর বেদনা । (এখন)
ছেড়ে দে' মা হাতের বাঁধন
চলে যাই যেথা যায় আমার মন
পরের মা'কে ডাকবে লালন
তোমার ঘরে আর থাকবে না ।"
==============
++++++++++++++++++++++++++++++++
সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে
লালন কয় জাতের কি রূপ
দেখলাম না এই নজরে । ।
সুন্নত দিলে হয় মুসলমান
নারীলোকের কী হয় বিধান
বামুন চিনি পৈতে প্রমাণ
বামনী চিনি কিসেরে । ।
কেউ মালা কেউ তসবি গলে
তাইতে কি জাত ভিন্ন বলে
আসা কিংবা যাওয়ার কালে
জাতের চিহ্ণ রয় কারে । ।
জগৎ জুড়ে জাতের কথা
লোকে গল্প করে যথতথা
লালন বলে জাতের ফাতা
ডুবিয়েছি সাধ বাজারে । ।
এটা লালনের সাধনপর্বের স্হূলপর্যায়ের গান, অর্থাৎ হিন্দু-মুসলমান ইত্যাদি জাত-পাতের সমস্যা থাকলে সাধনা হবে না, সবার আগে মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। জনশ্রুতি আছে কালীনদীর ঘাটে লালন সাঁইকে অসুস্হ অবস্হায় মলম শাহ খুঁজে পেয়ে বড় করেন, ফলে লালন আসলে কোন জাতের লোক এ নিয়েও জনমনে একটা কৌতুহল কাজ করে। কিন্তু লালন নিজেকে কোন বিশেষ জাত-পাতের অংশের উর্ধ্বে মানুষ হিসেবে ভাবতেন।
মানুষের শরীরে কোন জাতের চিহ্ণ নেই, দুনিয়াতে সব মানুষ সমান, জাত পরিচয় এসব মানুষেরই সৃষ্টি। দৃষ্টান্তস্বরুপ লালন বলছেন, সুন্নত অর্থাৎ খতনা দেখে না হয় মুসলমান পুরুষকে চেনা গেল। কিন্তু নারী কি মুসলমান না হিন্দু কিভাবে বুঝব? একইভাবে পৈতা দেখে না হয় বামুন চেনা গেল কিন্তু বামনীদের কি ধরে চিনব। তাহলে জাত যদি থাকবেই, মেয়েদের ব্যাপারে ধর্মগুলো এত অনুদার কেন, তাদের কেন জাতবিচারের জন্য কোন সিস্টেম নেই। সুতরাং সূক্ষবিচারে ধর্মমতেই জাতের কোন বালাই নেই, সবাই একই মায়ের সন্তান। সুন্নতে খতনা আসলে ট্রাইবাল চিহ্ন যা অনেক আগে থেকে চলে আসছে। আর হিন্দুধর্মে কারও পৈতা বা উপনয়ন দেয়ার মানে হল ব্রক্ষ্মোপদেশ নিয়ে এবার দ্বিতীয় জন্ম হল।
তাই বাহ্যিক আবরণ, আভরণ দেখে আমরা মানুষ বিচার করলে ভুল করব। এছাড়া জন্ম বা মৃত্যুর সময় আমাদের কোন জাত থাকে না। শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্তের সেই বিখ্যাত ডায়ালগ, মড়ার আবার জাত কিসের? মুসলমানদের মৃত্যুর পরে জানাযার নামাজে কোন আযান দেয়া হয় না কারণ এই আযান জন্মের পরপরই নবজাতকের কানে দিয়ে দেয়া হয়। জন্মের আগেই যেখানে জ্যান্তে-মরার আহবান, সেখানে জাতের বড়াই আসে কোথা থেকে?
দুনিয়ায় এই যে জাতের এত সমস্যা লোকে বলাবলি করে, লালন বলেন সেই জাতিভেদকে তিনি সাধের বাজারে, সদানন্দের বাজারে ডুবিয়েছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১১ দুপুর ১:২২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




