somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘আমার দেশের মাটির গন্ধে ভরে আছে সারা মন
শ্যামল কোমল পরশ ছাড়া যে নেই কিছু প্রয়োজন...’

গুনগুন সুরে মন ক্ষণে ক্ষণে গেয়ে ওঠে । কখনো সে সুর আনমনা করে । মন চলে যায় সুদূর অতীতে – দুঃসহ দিন রাত্রির রক্ত রাঙ্গা ডায়রির পাতায় । সেই ডায়রির নাম মুক্তিযুদ্ধ ৭১ ............ বাংলাদেশ ! ‘আমার বাংলাদেশ পাখীর পালক হয়ে স্মৃতির ভিতর ঝরে... স্মৃতির বুকে খোদাই হয়ে আছে এ মাটির শ্রেষ্ঠ সময়ের ইতিহাস ।

আগুন...বারুদ... আর্তনাদ...রক্ত...বিচ্ছেদ ...অশ্রু ... হাহাকার... ক্ষোভ ... ঘৃণা ... আক্রোশ ... জেদ ... প্রত্যয় ... প্রতিজ্ঞা ... যুদ্ধ ... বিজয়... সৃষ্টির প্রেরণা ...

তীরহারা সেই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিয়ে যারা ভালোবাসার স্বদেশকে স্বাধীনতার সূর্যের দিনের কাছে ,সুখী নিরাপদ রাতের কাছে পৌঁছে দেবার স্বপ্ন দেখার সাহস করেছিলেন ; ঝর্ণা থেকে হয়ে উঠেছিলেন এক একজন আগ্নেয় গিরি , কঠিন শপথে সহজ হাসি মাখা স্বচ্ছ চোখের জলে জীবন দিয়ে গেছেন , কিম্বা দিয়েছেন খুব প্রিয় কিছু , দিয়েছেন সোনালি সময় , ইতিহাসের পাতায় স্বাক্ষর করেছেন সেরা মানুষ হিসাবে - তাঁদেরকে সালাম । সর্ব শক্তিমান দয়াময় স্রষ্টার কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ । তিনি এই মাটিতে যুগে যুগে পাঠিয়েছেন স্বপ্নচারী সাহসী মানুষ ।

’৭১ এবং এর পূর্ববর্তী , পরবর্তী দুঃসাহসী যোদ্ধাদের জন্য আমাদের এই শ্রদ্ধাঞ্জলি!!!

পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে যারা চলে গেছেন তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করি । অন্য পৃথিবীতে তাঁরা সম্মানিত হয়ে থাকুন। যারা এখনো আমাদের মাঝে আছেন তাঁদের সম্মানিত জীবনের সুখ দুঃখের সাথী হবার আশা রাখি । মহান আল্লাহ আমাদের মনের এই একান্ত ইচ্ছা পূরণ করুন । আমরা যেন আমাদের কৃতজ্ঞতা টুকু প্রকাশ করতে পারি , নিজেদের বিবেকের কাছে নিরপরাধী হয়ে ভোগ করতে পারি সার্বভৌমত্ব , স্বাধীনতা এবং সুখ ।

কিন্তু আমাদের অনেকের ভিতরেই দেখতে পাই কৃতঘ্ন বৈশিষ্ট্য। মাঝে মাঝে মনে হয় বাঙ্গালী স্বাধীনতা চেয়েছিল না সোনার খাঁচা। না হলে স্বাধীনতার সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করেও তারা 'পাকিস্থানী' হতে চায়!!! তারেক মাসুদের 'মুক্তির কথা' ছবির একটি দৃশ্যের কথা বলতে পারি। সেখানে এক সামান্য মানুষের জবানবন্দী বিধৃত হয়েছে। তার গ্রামে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে এক রাজাকার। সামান্য মানুষটি বলছেন, ' যদি আমরা রাজাকার নির্বাচিত করে থাকি, তাহলে আমরা নব্বই ভাগই তো রাজাকার হয়ে গেছি। কুত্তার মতো হয়ে গেছি, না হলে রাজাকার চেয়ারম্যান বানাই।' এই উপলব্ধিটা এখনো আমাদের মত সাধারণ মানুষদের ভিতর আছে।

থার্মপলির যুদ্ধে গণতন্ত্র রক্ষা করতে গিয়ে সব গ্রীক সৈন্য নিহত হয়েছিল - তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে যে ফলকটি প্রোথিত হয়েছিল, তার গায়ে প্রাচীন গ্রীক ভাষায় যা লেখা আছে তার ইংরেজী তর্জমা-

" let it not be forgotten, for your to-morrow we have given our to-day"

"ভুলে যেও না, তোমাদের আগামী দিনের জন্য, আমরা আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করে গেলাম।"

আমাদের বীরশ্রেষ্ঠগন ও অগনিত নাম না জানা মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জন্য তাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করে গেছেন। আজ তাদের জন্য ই আমার মায়ের ভাষায় আজ স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আমি এই লেখাটি লিখে যেতে পারছি। আমার এই শ্রদ্ধাঞ্জলি তাদের জন্য এবং যারা বীরত্তের সাথে যুদ্ধ করে এখনো বেঁচে আছেন তাদের জন্য ও। আজ শ্রদ্ধাবনত চিত্তে আমরা সবাই তাদের স্মরণ করছি!!!
তোমরা আমাদের জন্য একটি মানচিত্র... ভু-খন্ড ... গর্ব করার মত জাতিসত্তা দিয়ে গেছ। এটা রক্ষা করার দায়িত্ব ছিল আমাদের। জানি না আমরা কতটুকু পারছি? কিন্তু দেশপ্রেমের শক্তিতে উন্মত্ত হয়ে ব্যক্তিস্বার্থে জলাঞ্জলি দিয়ে প্রাণ বিসর্জন দেবার দৃঢ় অঙ্গীকারের ঘোষণা দেবার সময় এসে গেছে। বিজয় দিবসের এই প্রহর থেকে আসো সবাই প্রতিজ্ঞা করি...

'... এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পীঠে।
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব-তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপনে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি -
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার। ...'

বীরদের কাহিনী থাকুক আমাদের প্রতিদিনের জীবন যুদ্ধের প্রেরণা হয়ে , বিজয়ের আশা হয়ে । আমাদের শ্রদ্ধেয় অগ্রজদের মধ্যে যারা যুদ্ধে সরাসরি ছিলেন তাঁদের কাছ থেকে শোনার জন্য অধীর অপেক্ষায় রইলাম ।



সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×