বাংলাদেশ কারাগার - অনিয়ম (পর্ব - বার) : মক্কেল রাখাঃ অবৈধ টাকা আয়ের মোক্ষম পথ
মক্কেল রাখার সূত্রপাত হয় আমদানী হতে। নবাগত আসামীরা আমদানী হওয়ার পর দিন লক-আপ খোলার সাথে সাথে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ইনচার্জ পাহারা ও রাইটার আমদানীতে হাজির হয়। সেই সাথে আমদানী ও বহিঃগমন হাসপাতাল রাইটারগণ বিভিন্নভাবে বন্দীদের জীবন বৃত্তান্ত পরখ করতে থাকেন। কোন বন্দী কত বড় লোক, মামলা বড় ধরণের কিনা; মামলা যদি বড় হয় তবেতো কথাই নেই। শুরু হয় খাওয়া নিয়ে আলোচনা, দেন দরবার কে কত সুবিধা দিতে পাবে তার বিবরণ; তার বিনিমিয়ে কত প্রদান করতে হবে ব্যাপারে এই কাউন্সিলিং হয়ে যায় এই সময়ের মধ্যে। কথা পাকা পাকি হলে সংশ্লিষ্ট রাইটার ইনচার্জ পাহারা ও পাহারাগণ আমদানী রাইটারকে কিছু টাকা বুকিং দিয়ে যান যাতে সেই মোতাবেক ওয়ার্ড পাশ হয়ে যায়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের রেট ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
ক) হাসপাতাল ১০-১৫ হাজার টাকা। খাওয়া ছাড়া; খাওয়ার জন্য সপ্তাহে ১৫০০ টাকা।
খ) ওয়ার্ডে সপ্তাহে ১০০০ টাকা খাওয়া ও গোসল, শরীর টিপে দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
গ) মনিহারে (৭ ও ৮নং ওয়ার্ড) বাদে অন্যান্য ওয়ার্ডে ১হাজার টাকা পর্যন্ত সপ্তাহে, সাথে দু’বেলা
খাওয়া, দুপুরে ভাজি, ডাল ভাত রাতে মাছ অথবা , মাংস ডাল ভাত ভাজি। সকালে নাস্তা বন্দীর নিজের।
ঘ) বহিরাগমন মাসে ১০-১৫ হাজারা টাকা খাওয়াসহ। গোসলের ব্যবস্থা নেই। জেলের সর্বত্র ভি.আই.পি. ষ্টাইলে চলা ফেরার ব্যবস্থা রয়েছে। চা-কফির ব্যাবস্থাও থাকে।
ঙ) আমদানীতে মক্কেল হিসেবে থাকার জন্য ৫-১০ হাজার মাসিক। খাওয়া নিজের ব্যবস্থা; ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ রয়েছে যত্রতত্র।
চ) স্কুল-২ (মুরুব্বী ওয়ার্ডে) সপ্তাহে ১০০০ টাকা শুধু ভাল থাকার ব্যবস্থা করা হয়।
কোন কোন ইনচার্জ পাহারা জেলের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৩০-৩৫ টা সিট কিনে রেখেছে। সেই সিট ভাড়া
দিয়ে প্রতিমাসে আয় করেন ৩০-৩৫ হাজার টাকা। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ওয়ার্ডে তার নিযুক্ত হাজতী বন্দীগণ সেই সব সীটগুলো দেখাশুনার দায়িত্ব নেন। ইনচার্জ পাহারাগণ মক্কেল ধরে এনে তার নিযুক্তয় ব্যক্তিদের হেফাজতে রেখে যান। সপ্তাহে বা মাসে মাসে সীট ভাড়া আদায় করেন সেই সমস্ত হাজতী বন্দীগণ।
কোন কোন ওয়ার্ডে হাজতী রাইটার থাকে। তারাও মক্কেল এনে টাকা আয় করে বাসায় পাঠায়। তারা সেই আয় থেকে নিজেদের মামলা খরচ মিটিয়ে থাকেন। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় পুরাতন বিচারাধীন আসামী ২/৪ বছর যাবৎ জেলে আছেন, যে সমস্ত হাজতী বন্দীগণ ধীরে ধীরে নিজের নামে ৫/৭ টা সীট কিনে নয়ে। সেই সমস্ত সিটে মক্কেল নিয়ে এসে তার দেখা শুনা করে মাসে ১০/১৫ হাজার টাকা উপার্জন করে নিজেও চলে এবং বাহিরে তার সংসারকেও দেয়।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের তুলনায় অন্যান্য কেন্দ্রীয় কারাগারগুলোতে মক্কেল রাখার পরিমাণটা শতকরা ৫০% কম। মক্কেল পালার ব্যবস্থা অন্যান্য কারাগারগুলো একই নীতি মেনে চলে। জেলা কারাগারগুলোতেও মক্কেল পালা যায় শুধু মাত্র হাসপাতালগুলোতে। ওয়ার্ডে মক্কেল তেমন নেই বললেই চলে। তবে আমদানীতে ২/১ জন দেখা যায়।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সেলগুলোতে মক্কেল পালার ব্যবস্থা রয়েছে। সেক্ষেত্রে মূখ্য ভ‚মিকা পালন করে হাজতী বন্দী। অনেকদিন কারাগারে অবস্থান করার ফলে নিজের নামে একটি রুম চালানোর ক্ষমতা নিয়ে নেয়। সে রুমে ৫/৬ জন পর্যন্ত থাকতে পারে। দেখা যায় অনেক পরিচিত মুখ বন্দী হয়ে আসে জেলে, তাদেরকে নিজের রুমে নিয়ে আসে। সেই বন্দীরা যে টাকা পয়সা আনে তার বেশীর ভাগ তুলে দেন যার নামে রুম চলে তার কাছে। সে কৈ এর তেলে কৈ ভাজে। ৫জনের টাকার জোরে সে নাচে ও প্রশাসনকে হাতের মুঠোয় রেখে নিজের কর্তৃত্ব ও দাপট বজায় রাখে।
মক্কেলদের আবার করুন পরিনতি ভোগ করতে হয়, যদি সময় মতো টাকা না দেয়-তাহলে তার খাওয়া বন্ধ। শতর্ক মূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাতের ১টা অংশ বার নাম্বারে অর্থাৎ টয়লেটের সম্মুখে শুতে দেয়া হয় যাতে করে মক্কেল কষ্ট অনুধাবন করে তাড়াতড়ি, টেলিফোন করে বাসা হতে টাকা আনিয়ে মহাজনের হাতে তুলে দেয়া হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে মক্কেল উত্তেজিত হয়ে উঠে নানাবিধ অত্যাচারে। তাতে ফলাফল হয় হিতে বিপরীত। এমনও দেখা গেছে মক্কেল শুধু মুখে উচ্চারন করেছে সাহেব ফাইলে অর্থাৎ সুপার ফাইলে মক্কেল পালার নালিশ হবে। তাতেই হয়েছে; ইনচার্জ পাহারা সাথে সাথে সুবেদার ম্যানেজ করবে। সুবেদার সাহেব ফাইলের আগে ওয়ার্ড থেকে সরিয়ে সেই বন্দীকে আমদানীতে এনে রেখে দিবে। তারপর সাহেব ফাইলের পর তাকে ছেড়ে দিবে। ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দিবে এভাবে কোন দিনই অভিযোগ দানে ইচ্ছুক বন্দীর অভিযোগ জানানোর সুযোগ আসেনা। (চলবে.....
বাংলাদেশ কারাগার - অনিয়ম (পর্ব -এগার) পড়তে somewherein এখানে অথবা bd news এখানে ক্লিক করুন ।
ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক
বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন
কুরসি নাশিন
সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে
তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ
১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে
সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।
কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।
ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।
যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন
বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!
যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।
কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!
ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন