মাথার উপরে যে নীল শামিয়ানা, ওটা অভিন্ন আকাশ,
যে বাতাসে শ্বাস নিয়ে বেঁচে আছি তুমি-আমি, ওটাও অভিন্ন,
যে মাটিতে পা ফেলে হেঁটে চলি রোজ, তাতে তোমারও পদধূলি,
ভোরের শিশিরের স্পর্শে শিহরিত হও তুমিও।
একই জোছনার আলো মুগ্ধতা ছড়ায় দু'জনেরই চোখে,
ফড়িং বা প্রজাপতি আমাকে ছুঁয়ে গিয়েই বসে তোমার সাদা-কালো চুলে,
যে সুরের মূর্ছনা আমাকে আলোড়িত করে, করেনাকি তোমাকেও?
দূরের আকাশে উড়ে চলা বকের সারি দেখে তুমিও উদাস হও।
বৃষ্টির পানিতে যখন ভেজে আমার শাড়ীর আঁচল,
তোমার জানালার পর্দাতেও ফেলে যায় তার ছিঁটেফোঁটা,
পালতোলা নৌকা, সূর্যাস্ত, ভাটিয়ালী সুর ভাল লাগে তোমারও।
দিন-রাত, শীত-বসন্ত, পদ্মা-মেঘনা দু'জনেরই কি সমান নয়?
সাগরের নীল জল হাতছানি দিয়ে তোমাকেও বুকে টেনে নেয়,
পাহাড়ের বিশালতায় নিজেকে হারাও তুমিও,
একই চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, নীহারিকার সমান অংশীদার তুমিও,
অভিন্ন ফুল, ফল, ফসলে লালিত আমরা দু'জনেই।
নজরুল-রবিঠাকুর আমাদের দু'জনেরই আত্মার অংশ,
একটাই পতাকা, একই একুশ, একাত্তর,
বজ্রকন্ঠের ঝঙ্কারে ওঠা একটাই তর্জনী।
গভীর ঘুমের ঘোরে দেখা আমাদের স্বপ্নও আলাদা নয়।
ভালবাসাময় একটাই অতীত আমাদের,
এমনকি, কষ্টের চাদরে মোড়া বর্তমানটাও!
ইচ্ছেও একই ছিল, একসাথে বাঁচার।
এত এত অভিন্নতাও পারেনা আজ আমাদেরকে এক করতে,
আমাদের মাঝে বড় নিষ্ঠুর একমাত্র ভিন্নতা -
আমরা এখন আমাদের নই, পর হয়ে গেছি!!!
আলপনা তালুকদার
২২ অগাস্ট ২০১৭
রাজশাহী
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৪১