somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউ- The Classic (যেখানে ভালবাসা পূর্ণতা পায়)

০৯ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



২০০৩ সালের ৩০ জানুয়ারী মুক্তি পাওয়া The Classic ছবিটি সাউথ কোরিয়ার। সে বছর হৈ চৈ ফেলে দেওয়া রোম্যান্টিক ঘরনার ছবিটির পরিচালক কাওয়াক জি-ইয়ং যিনি My Sassy Girl, Autumn Trip, Watercolor Painting in a Rainy Day এর মত ছবির পরিচালক এবং The Romantic President, My Girl and I এবং Daisy নামের ছবিগুলোর কাহিনীকার হিসেবে বিশ্ব জোড়া সমাদৃত।

১২৭ মিনিট ব্যাপ্তি ছবিটির কাহিনী দুটি অংশে ভাগ করা। একটি ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র জি-হিয়ের ভালবাসা, অন্যদিকে জি-হিয়ের মায়ের ভালবাসার অপ্রাপ্তির ফ্ল্যাশব্যাক।

ছবির কাহিনী আবর্তিত হয় জি-হিয়েকে ঘিরে যে কিনা বাসা পরিষ্কার করতে গিয়ে মায়ের একটা বাক্স পায় যেখানে অনেকগুলো চিঠি এবং একটি ডায়রিও থাকে। মায়ের ডায়রি পড়তে গিয়েই জি-হিয়ে ফ্ল্যাশব্যাকে চলে যায়।

জি-হিয়ের মা জু-হি তখন তরুণী, কোন এক গ্রীষ্মের ছুটিতে সে গ্রামে বেড়াতে আসে আর তখন তার পরিচয় হয় জুন-হার সাথে। দুইজনের বাস একই শহরে হলেও কেউ কাউকে আগে দেখেনি কিন্তু গ্রামে একসাথে ঘুরতে গিয়ে একজন আরেকজনের প্রেমে পড়ে যায়। ছুটি শেষে দুজনে শহরে ফিরে গিয়েও ভালবাসা চলতে থাকে। কিন্তু এদিকে জুন-হারের বেষ্ট ফ্রেন্ড টাই সোর সাথে পারিবারিক ভাবে পূর্বেই জু-হির বিয়ে ঠিক করা থাকে। কোনভাবে টাই সো জেনে যায় জুন-হার এবং জু-হির প্রেমের কথা। বন্ধুর ভালবাসাকে মূল্য দিতে গিয়ে টাই সো আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। কারণ জু-হিকে সেও ভালবেসে ফেলেছিল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সে বেঁচে যায়। পরবর্তীতে প্রেমকে বিসর্জন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জু-হি এবং জুন-হা। আর পড়াশুনা শেষ করে জুন-হা আর্মির মিশনে যায় ভিয়েতনামে। আর সেখানেই নিজের দৃষ্টি হারায় জুন-হা। কোরিয়ায় ফিরে আসার পর সে জু-হির সাথে দেখা করে এবং জানিয়ে দেয় যে সে বিয়ে করেছে। এ কথা শুনে কষ্টে পরে সে বিয়ে করে ফেলে টাই সোকে। বিয়ের পর জু-হি জানতে পারে যে জুন-হা আসলে বিয়ে করেনি যখন তাকে জানানো হয়েছিলো, টাই সোর সাথে বিয়ে হবার পর জুন হা বিয়ে করে। নিজের দৃষ্টিহীনতা এবং প্রেমিকার পারিবারিক চাপের কারণেই জুন-হা জু-হির থেকে দূরে সরে আসে। জু-হির বিয়ের কয়েক বছরের মাথায় মারা যায় তার স্বামী টাই সো। বয়স কম হওয়া সত্ত্বেও আবার বিয়ে করার কথা ভাবে না জু-হি।

জু-হির মেয়ে জি-হিয়ে এবং জুন-হার ছেলে সাং-মিনের ভালবাসা নিয়েই এরপর এগোয় বর্তমানের কাহিনী। তবে সেই কাহিনি আর বলছি না। জি-হিয়ে এবং সাং-মিনের প্রেম কাহিনী জানতে দেখতে হবে The Classic মুভিটির শেষ অব্দি।

ছবির কাহিনী যে অসাধারণ সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। বলা বাহুল্য,ছবির কাহিনীকারও পরিচালক নিজেই।

ছবির দৃশ্যায়নও নজরকাড়ার মত। বিশেষ করে প্রকৃতি বৃষ্টি এবং গ্রামের দৃশ্যগুলো সুন্দরভাবে দেখানো হয়েছে ছবিতে। ভালো লেগেছে মিষ্টি প্রেমের দৃশ্যগুলোও। কানে স্বস্তি দিয়েছে অসাধারণ সঙ্গীতায়জন।

অভিনয়ের কথা বললে সবাইকেই ১০০ তে ১০০ দেওয়া যায় অনায়াসেই। তবে জি-হিয়ে এবং জু-হি মানে মা এবং মেয়ে উভয় চরিত্রে অভিনয় করা সন ইয়ে-জিনের অভিনয় চোখে পড়ার মত। জু-হি চরিত্রের চঞ্চলা আবার জি-হিয়ে চরিত্রের শান্ত মেয়ে দুইটা চরিত্রই সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে অভিনেত্রী। এছাড়া জুন-হা চরিত্রের জো সুয়েং ও, সাং-মিন চরিত্রের জো ইং-সান, টাই-সো চরিত্রে অভিনয় করা লে কি-ও, এরা সবাই মন প্রান ঢেলে অভিনয় করেছে।

অনবদ্য অভিনয়ের জন্য অভিনেত্রী সন ইয়ে-জিন সে বছর বেক্সাং আর্ট এ্যাওয়ার্ড, গ্র্যান্ড বেল এ্যাওয়ার্ড এবং ব্লু ড্রাগন ফিল্ম এ্যাওয়ার্ড-এর আসরে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নেয়। এছাড়াও সেরা সঙ্গীতায়জনের জন্য কোরিয়ান ফিল্ম এ্যাওয়ার্ডের আসরে সেরা মিউজিক এ্যাওয়ার্ড জিতে নেয় ছবিটি। ৯ম মস্কো আন্তর্জাতিক রোম্যান্টিক মুভি এ্যাওয়ার্ডে সেরা জুটির খেতাব জিতে নেয় দ্বৈত ভাবে সন ইয়ে-জিন এবং জো সুয়েং। হংকং ফিল্ম এ্যাওয়ার্ডে সেরা এশিয়ান ছবির জন্য মনোনয়নও পায় এটি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৫০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×