এক সময় সবজি ভর্তি ডালি মাথায় নিয়ে বিক্রি করেছেন শেখ মোঃ আব্দুল করিম। পরনের জামা পর্যন্ত কিনতে পারেননি আব্দুল করিম। বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে পুরাতন জামা চেয়ে নিয়ে তিনি গায়ে দিতেন। মাথায় ইট দিয়েও ফুটপাতে ঘুমিয়েছেন । এটা হল মাত্র ত্রিশ বছর আগের কথা। ধীরে ধীরে সেই অবস্থার পরিবর্তন করেন আব্দুল করিম। এক পর্যায়ে শ্যামবাজারে পিঁয়াজ, রসুন, আদা এবং আলুর আড়ত খুলেন। বিদেশ থেকে পিঁয়াজ আমদানি করে রীতিমত আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যান আব্দুল করিম। কাকরাইল এলাকায় তার ছয় তলা বিশিষ্ট দুইটি বাড়ি আছে। পল্টনে পলওয়েল মার্কেটে তিন টি দোকানও কিনেন তিনি। রাঙামাটিতে ১০০ বিঘা জমির ওপর বাগান বাড়ির মালিক তিনি। জয়দেবপুরে রয়েছে ৯০ বিঘা জমি। এসব সম্পত্তি করিম তার প্রিয়তমা স্ত্রী শামসুন্নাহারের নামে কিনেন । তারপর শুরু করেন চলচ্চিত্র প্রযোজনা। ছোট ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম শাওনের নামে গড়ে তোলেন শাওন কথা চিত্র নামে প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান থেকে মাই নেম ইজ খান ও বন্ধু তুমি শত্রু তুমি সহ ৫ টি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন করিম। এই চলচ্চিত্র প্রযোজনা করতে গিয়ে তার সঙ্গে পরিচয় হয় অনেক মডেলদের । বিয়ে করেন মডেল শারমিন আক্তার মুক্তাকে। তার আগে ফরিদা নামে এক সুন্দরীকে তিনি বিয়ে করেন। কিন্তু প্রথম স্ত্রীর চাপাচাপিতে ফরিদাকে ডিভোর্স দেন। তৃতীয় স্ত্রীকেও প্রথম স্ত্রীর চাপাচাপিতে তিনি ডিভোর্স দেন মাত্র চার মাস আগে। পরে আবারও মৌলভীর কাছে গিয়ে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এক সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। জীবনে কষ্ট করে অর্জন করা সম্পত্তি তার প্রথম স্ত্রীর নামে। এ কারণেই তিনি পরিকল্পনা নেন প্রথম স্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার। চার মাস আগে রাঙামাটিতে তার বাগান বাড়িতে তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে একটি পরিকল্পনা করেন এবং সে অনুযায়ি তিনি মুক্তার ছোট ভাই আল আমিন ওরফে জনিকে দিয়ে করিমের প্রথম স্ত্রী হত্যার পরিকল্পনা নেন। এই ঘটনাটি গত ১ই নভেম্বর সন্ধ্যায় কাকরাইলের আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম রোডের ৭৯/১ নম্বর ভবন মায়াকাননের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাটে ঘটে । সেখানে ফ্ল্যাটের ভিতরে শামমসুন্নাহার এবং চতুর্থ তলার সিঁড়িতে তার ছেলে শাওনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ ভোর ৫:৫০