somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেভাবে দারিদ্রের দুষ্টচক্র ভাঙ্গতে পারি (রি-পোস্ট)

১৮ ই জুন, ২০০৯ রাত ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আধুনিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে সরকারের শাসনের দিন ফুরিয়েছে। সরকার এখন শাসক নয়, ব্যবসায়ী তো নয়ই, বরং সেবাদাতা ও জনগণের দুর্বল অংশের সহায়তাকারী। ইউরোপের সুইটজারল্যান্ড, সুইডেন, ডেনমার্ক, নরওয়ে, প্রভৃতি দেশকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলে ধরা হয়। এসব দেশের সরকার ধনী ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে সম্পদের ভারসাম্য রাখার জন্য ধনীর ওপর অতিরিক্ত কর এবং দরিদ্রদের ভাতা দিয়ে থাকে। যে যত ধনী সে তত বেশি কর দেয় এবং যে যত দরিদ্র সে তত বেশি ভাতা পায়। তাছাড়া প্রতিটি নাগরিকের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বীমা করা আছে , যাতে করে কোন নাগরিক বিপদে পড়লে টাকার সমস্যায় না পড়ে।
আমার এক আত্মীয় থাকেন নরওয়েতে। তার থেকে শোনা। নরওয়েতে একজন শিশু গর্ভে আসার সাথে সাথে তার রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। রেজিস্ট্রেশন করার পর সরকার সেই শিশুটির মাকে গর্ভকালীন ভাতা দিতে শুরু করে। শিশুটি জন্মানোর সমস্ত খরচ সরকার বহন করে। শিশু জন্মানোর পর তাকে স্কুলে ভর্তি করানোর খরচও সরকার দেয়। নরওয়েতে শিক্ষা সম্পূর্ণ ফ্রি। যোগ্যতা অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করা যায়। পড়াশোনার জন্য তেমন কোন খরচ হয় না। পড়াশোনা শেষ করার পর সরকারের কর্মসংস্থান কেন্দ্রে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যত দিন পর্যন্ত কর্মসংস্থান না হয়, ততদিন পর্যন্ত সরকার তাকে বেকার ভাতা দেয়। কর্মসংস্থান কেন্দ্রের কাজ হল, ভালো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। শুধু কর্মসংস্থান নয়, কর্মক্ষেত্র বদলানোর ক্ষেত্রেও কর্মসংস্থান কেন্দ্র চাকুরিপ্রার্থীদের সহায়তা করে।
কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পর এবার শুরু হয়, পরিশোধের পালা। গর্ভে আসার পর থেকে কর্মসংস্থান পর্যন্ত তার পেছনে সরকার যত অর্থ ব্যয় করেছে, তা পরিশোধ করতে হবে। এজন্য প্রতি মাসে সরকার তার বেতন থেকে নির্দিষ্ট অঙ্ক কেটে রাখে। তাছাড়া তার নামে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে বীমা করা হয়েছে, তার প্রিমিয়ামও কেটে রাখা হয়। অন্য দিকে বুড়ো বয়সে তাকে যে সরকার দেখাশোনা করবে তার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে কিছু অর্থ সঞ্চয়ও করতে হয়। সরকারী কিংবা বেসরকারী সব ধরনের চাকুরির েেত্র এই নিয়ম। ফলে গর্ভে আসার পর থেকে কর্মসংস্থান পর্যন্ত সরকারের দেয়া সমস্ত অর্থ সে পরিশোধ করতে পারে এবং পরবর্তী জীবন নিয়ে তাকে টেনশন করতে হয় না। বৃদ্ধ বয়সে তাকে কে খাওয়াবে, তা নিয়ে তাকে ভাবতেই হয় না। তার সঞ্চয় থেকেই সরকার তাকে বৃদ্ধ বয়সে দেখাশোনা করবে।
এই ধারণাটি আমাদের দেশে কিভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব সেই আইডিয়াটি এবার শেয়ার করা যাক। আমাদের দেশে একেবারে হতদরিদ্রদের মধ্যে এই আইডিয়াটি প্রয়োগ করা যেতে পারে। তার জন্য যা করতে হবে .......

১.প্রথমে হতদরিদ্র দম্পতিকে জানিয়ে দিতে হবে, একটি সন্তান গ্রহণ করবেন বলে যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা এই সুবিধা পাবেন।

২.সন্তান গর্ভে আসার পর সরকার তার সন্তানকে ভাতা দিতে শুরু করবে। প্রতি ইউনিয়ন বা পৌরসভায় ২ থেকে ৩ জন হতদরিদ্র দম্পতি এ সুযোগ পাবে। এ সুযোগ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে বিয়ের পর পরই।

৩.গর্ভের সন্তানের জন্মের পর তার উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত সমস্ত খরচ সরকারের। এই সন্তানের শিক্ষা এমন দেয়া হবে, যাতে করে তাকে কর্মমুখী করে গড়ে তোলা যায়। সে যেন বেকার না থাকে। বর্তমানে বহুল প্রচলিত কর্মসংস্থানমূলক কাজ তাকে শিখতে হবে। কর্মসংস্থানের দায়িত্ব সরকারের। এর জন্য আলাদা কর্মসংস্থান কেন্দ্র করতে হবে। কর্মসংস্থান হওয়ার আগ পর্যন্ত সরকার তাকে বেকার ভাতা দেবে।

৪.কর্মসংস্থান হওয়ার পর তার পেছনে ব্যয়িত অর্থ তার বেতন থেকে কেটে রাখা হবে। তার জন্য বীমা করা হবে এবং তার বৃদ্ধ বয়সের খরচের জন্য সঞ্চয় করে রাখা হবে।

এরকম একটি প্রকল্প গ্রহণ করতে পারলে অসংখ্য দরিদ্র মানুষ যারা জীবনে স্বচ্ছলতার মুখ দেখত না, তারা স্বচ্ছল হয়ে উঠবে। এ কল্যাণমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা দারিদ্রের দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারি। প্রয়োজনে এ ধারণাটি আরও বিশ্লেষণ করে আমাদের দেশের উপযোগী করা সম্ভব।
মূল ধারণাটি হচ্ছে একজন মানুষ তার শৈশব ও বৃদ্ধকালে আয় করে না। এ সময় সরকার তাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করবে। সরকারের এ সহায়তার বিনিময়ে যৌবনকালে সে তার আয় থেকে সরকারের এ ঋণ পরিশোধ করবে।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×