somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অস্পষ্ট ভালোবাসা - ৬ ( Little bit romantic )

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তুমি যদি কাউকে মন থেকে চাও , তাহলে সে চাইলেও আর তোমার থেকে দূরে থাকতে পারে না । কে জানি বলেছিলেন কথাটা ?
ট্রেন থেকে নামলাম ।
বাইরে ঠান্ডা বাতাস বইছে । দুপুরের কড়া রোদ এসে চোখে লাগছে । সুর্য দুপুর বেলায়ও মাথার উপরে না থেকে একদিকে হেলে আছে । চোখে রোদ লাগায় কেমন জানি ঝাপসা ঝাপসা দেখতেছি ।দুরের চায়ের দোখান তজেকে অরিজিত সিং এর তুম হি হো বাজছে । সামনে তাকিয়ে দেখি মিস কিন্ডারগার্ডেন । তার পরনে নীল শাড়ি , সেই নীল শাড়িতে আবার হালকা সবুজ ফুটকি । কপালে একটা সবুজ টিপ ।চুল গুলো খোলা , কিছু চুল বার এসে পরছে তার মুখে সেও সুন্দর করে সেটা সড়িয়ে দিচ্ছে । তার পিছনে একটা হেলে পড়া শিরিশ গাছ । মাঝে মাঝে শিরিশ গাছে পাতা এসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে । আমার কাছে মনে হলো স্বয়ং সৌন্দর্যের দেবী "আফ্রোদিতি" দাঁড়িয়ে আছে । পাশে তাকিয়ে দেখি রিফাত সালাও ক্যাবলা মফিজ হয়ে দেখছে । কেউ এভাবে একটা মেয়ের দিকে তাকায় ? আমি ইচ্ছা করে তার পায়ে পারা দিয়ে বাস্তব জগতে ফিরিয়ে আনলাম ।
- কিরে কি হইছে ?
- নাহ কিছু হয় নাই তবে এবার হবে ?
আমি হন হন করে এগিয়ে গেলাম মেয়েটার দিকে । সেও আমাকে দেখে একরকম আশ্চার্যই হলো মনে হয় । তবে চেহারায় জোর করে কঠোর ভাব নিয়ে এসে বললো
- তুমি ? নাহ মানে আপনি ?
তার ডাক শুনে মনে হলো তার স্কুলের কোন ছাত্র আরেক টা মেয়েরে খেলার ছলে কিস করেছে আর সে সেটার বিচার করতেছে ।
সে যতটা গরম হয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলো , আমি তার থেকেও কয়েক গুন কোমল স্বরে বললাম ,
- এইতো ফ্রেন্ড এর বাসা বেড়াতে আসছি ।
- ওহ ।
- তো আপনি কই যাচ্ছেন ?
- আমার বাসা এখানে ।
হঠাৎ করে মনের ভেতর কেমন জানি সুখানুভুতি খেলা করছিলো । আমি কোন কথা না বলে ঠিক এলাকার বখাটে ছেলেগুলোর মতো তার দিকে আছি । কতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম জানিনা হঠাৎ দেখি কে জানি তাকে ডাকছে ,
এই মেঘলা ।
সে আমার দিকে তাকিয়ে হালকা হাসি দিয়ে চলে গেলো ।
আমার ও হুশ ফিরে এলো পেছনে তাকিয়ে দেখি সাদিক,রিফাত দুইজনেই আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে । আমি তাদের কাছে ফিরে গেলাম । রিফাত বললো ,
- কি মাম্মা , মাইয়াডা কে ?
- কেউ না বে ।
- কদ্দিন থেইকা চলছে এইসব ?
- ধুর ব্যাটা যাহ । কিরে সাদিক তোর বাসা কতদূর ?
- বেশি নাহ অল্প , দ্বাড়া একটা রিকশা নিয়ে নেই ।
আমরা তিনজন এক রিকশায় চড়ে যাচ্ছি । আবার দেখি মন আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে সেই মেঘলার দিকে । তার চোখের চাহনী , তার বা হাতে ব্যাগ ধরে দাঁড়িয়ে থাকা , তার মুখের হালকা মেকআপ । ভাবছি তার হাসি টা কতো সুন্দর হবে ?
আমি আমার বিছানায় শুয়ে আছি আর আমার বিছানার সামনে হাসি মুখে এক কাপ চা নিয়ে সে দ্বাড়িয়ে আছে । আমি চায়ের কাপ না নিয়ে তার হাতটা স্পর্শ করছি আর সে মিটি মিটি করে হাসছে ।
কি সব আজগুবি কল্পনা করতে করতে সাদিকের বাড়ি এসে গেলাম ।
একটা বাশের বেড়ায় ঘেড়া বাড়ি উপরে টীনের ছাদ । বাশের বেড়ায় বাশের অনেক রকম কারুকাজ । ভেতরে ঢুকে আমরা ফ্রেশ হয়ে খাওয়াদাওয়ার পাট টা শেষ করে নিলাম । দেখি সাদিকের বাবা মা দুজনেই খুশি খুশী মুখে আমাদের সাথে কথা বলছে । উনাদের মুখের হাসিটার মধ্যে কোন রকম নকল বা মেকি ভাব নাই ।একদম নির্মল হাসি ।আমাদের শহরের লোকগুলোও হাসে , কিন্তু তাদের হাসিতে কোথাও একটা কমতি থেকেই যায় ।
খেয়ে দেয়ে আমরা সটান হয়ে শুয়ে পড়লাম বিছানার মধ্যে ঘুম ভাংলো সাদিকের ডাকে । উঠে দেখি তখন পরন্ত বিকাল । সাদিক বললো চল নদীর পাড় থেক ঘুইরা আসি । তিনজনে আবার চোখে মুখে পানি দিয়ে বের হয়ে পড়লাম , অনেক্ষন সিগারেট খাওয়া হয় না । বাইরে এসে হাটতে হাটতে সিগারেট ধরালাম ।
তিন জনে হাটতে হাটতে নদীর পাড়ে এসে পড়েছি ততক্ষনে সন্ধ্যা প্রায় । আকাশ থেকে এক লাল আভা বেড়িয়েছে ।হঠাৎ সামনে দেখি মেঘলা এবং তার সাথে কয়েক টা মেয়ে হাসতে হাসতে আমাদের দিকে আসছে । এই প্প্রথম আমি তার হাসি দেখলাম । এই রক্তিম আলো যেন মেঘলাকে আরো সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছে । কে জানে আমি নিজের নিয়ন্ত্রন হারিয়েছিলাম কিনা , সাদিক আমার হাত ধরে ঝাকি দিলো ।
- আরেহ রুপক সাহেব । কি ব্যাপার
- সবই কিসমতের খেল , একদিনে দুইবার দেখা ।
মেঘলা কিছু না বলে হাসতে হাসতে চলে গেলো ।ওদিকে তাকিয়ে দেখি সাদিক একটা মেয়ের সাথে কথা বলছে । আমি সাদিক কে ডেকে বললাম ,
- মামা , তুই কার সাথে কথা কচ্ছিস ?
- ব্যাট্টা এটা তোর মামী , আমার গার্লফ্রেন্ড ।
এইসময় রিফাত বলে উঠলো
- দোস্ত লাল জামার ঐ মেয়েটার উপর ক্র্যাশ খাইছি ?
সাদিক হঠাৎ চিল্লায় উইঠা বল্লো
- এই নিয়ে কয়বার ?
মেয়েগুলা দেখি আমাদের এইসব কাহিনী দেখে হাসতে হাসতে চলে গেলো ।আমি সাদিক কে বললাম , মামা তোর গার্লফ্রেন্ড রে কইয়া , মেঘলার ফেসবুক আইডি টা নিয়া দিবি ?
- নাহ
- এক প্যাকেট ব্যান্সন নিয়া দিমু
- নাহ
- সাথে চিকেন ফ্রাই খাওয়ামু ।
-আচ্ছা দেখি
আমরা সাদিকের বাড়িতে বসে টিভি দেখতেছি , হঠাত সাদিক এসে মেঘলার ফেসবুক আইডি , নাম্বার দুইটাই দিলো ।
আমি ফোন টা নিয়া সার্চ দিলাম। দেখলাম একটা বার্বি ডলের ছবি দেওয়া আইডী আমার সামনে আসলো । টাইম্লাইনে গেলাম । কিছুক্ষন আগে একটা স্ট্যাটাস লিখেছে ,
" সেই পাগল টাইপ ছেলেটারে আবার দেখলাম । নদীর পাড়ে , হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । "
তার টাইমলাইন এর আরো ভেতরে গেলাম ,
একটা স্ট্যাটাস দেখলাম ,
" আজকে এক ছেলের সাথে দেখা হলো ,
সে রাস্তায় দ্বাড়িয়ে আমার বাসার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে , কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছিলো আমার । গিয়ে দিলাম ইচ্ছা মতো ঝাড়ি , আমি তাকে যতই ঝাড়ি দেই সে ততই লির্লিপ্ত ভাবে হাসে । আজিব একটা চীজ "
কমেন্ট করতে চাইলাম , যে আমি আসলে কোন কারন ছাড়াই সেখানে স্বারিয়ে ঐভাবে তাকিয়ে ছিলাম , তাকে দেখিও নাই " শেষ পর্যন্ত আর করলাম না ।
আমি কাপা কাপা হাতে তারে রিকুয়েস্ট পাঠালাম সাথে বেহায়ার মতো তার ইনবক্স এ মেসেজ দিলাম
" When I look into your eyes ,
It's something different .
It's like sky , with full of star
and every star say love
say love to me . "

( ভালোবাসা জিনিসটা হচ্ছে তলহীন সাগরের মতো যেটাতে ডোবার পর তার সঠিক অনুভুতি চাইলেও কেউ দিতে পারবে না , আমিও পারলাম না )
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×