somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম ধর্মে মোজেস ( পর্ব ৩)

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


যারা আগের পর্বগুলো পড়েন নাই তারা এখানে গুতা মারেন । আর হ্যা সকলে পড়ে কেমন লাগল মন্তব্য করে জানাবেন কিন্তু ।
শুরু করুন আগের পর্ব গুলো এখানে গুতা দিন । :)

ইসলাম ধর্মে মোজেস ( পর্ব ১)

ইসলাম ধর্মে মোজেস ( পর্ব ২)

মূসা (আঃ) এর নবুওয়ত লাভ

মূসা (আঃ) পাহাড়ের পাদদেশে এই ঘটনার সম্মুখীন হলেন । পাহাড়টি ছিল তার ডানদিকটায় । এই উপত্যকার নাম ছিল তুয়া । যখন তিনি আগুনের কাছে পৌঁছান মুসনাদে আহমদে ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বেহ্‌ বর্ণনা করন যে মূসা (আঃ) আগুনের কাছে পৌছে একটি বিস্ময়কর দৃশ্য দখতে পান । আর তিনি দেখলেন যে এটি একটি বিরাট আগুন যা একটি সতেজ এবং সবুজ বৃহ্মের উপর দাউ দাউ করে জ্বলছে । কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল এই যে এর কারণে বৃহ্মের কোন ডাল অথবা পাতা পুড়ছে না এক কথায় বৃক্ষের কোন ক্ষতি হচ্ছে না বরং আগুনের কারণে বৃহ্মের সৌন্দর্য সজীবতা এবং উজ্জ্বল্য আরও দ্বিগুন বেড়ে গেছে । মূসা (আঃ) এই বিস্ময়কর দৃশ্য কিছুহ্মণ পর্যন্ত দেখেন এবং অপেহ্মা করেন যে আগুনের কোন স্ফুলিঙ্গ মাটিতে পড়লে তিনি তা তুলে নেবেন । অনেকহ্মণ অতিবাহিত হওয়ার পরও যখন এমন হল না তখন তিনি কিছু ঘাস এবং খড়কুটা একত্রিত করে আগুনের কাছে ধরেন । তিনি ভেবে দেখলেন এতে আগুন লেগে গেলে তার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে । কিন্তু এগুলো আগুনের কাছে নিতেই আগুন পেছনে সরে গেল । কোন কোন ইসলাম বিশেষজ্ঞদের মতে আগুন তার দিকে অগ্রসর হয় । এবং তা দেখে তিনি অস্থির হয়ে পেছনে সরে গেলেন । মোটকথা তার আগুন লাভ করার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হল না । তিনি এই অত্যাশ্চর্য আগুনের প্রভাবে বিস্ময়াভিভূত ছিলেন । ইতিমধ্যে একটি গায়বী আওয়াজ হল ।
বাহরে মুহীত রূহুল মা আনী ইত্যাদি গ্রন্থে আছে যে হযরত মূসা (আঃ) এই গায়বী আওয়াজ চতুর্দিক থেকে সমভাবে শ্রবণ করেন । আর আওয়াজটি কোনদিক থেকে আসছিল তার কোন দিক নির্দিষ্ট ছিল না । শুনেছেনও অপরূপ ভঙ্গিতে শুধু কানে নয় সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা শুনেছেন । এটা ছিল একটা মু জেযার মত । আওয়াজের এই রকম ছিলঃ যে বস্তুকে তুমি আগুন মনে করছ তা আগুন নয় তা হল আল্লাহ তাআলার জ্যোতি । এতে আরো বলা হয় আমিই তোমার পালনকর্তা । রূহুল মা আনী মুসনাদে বরাতে ওয়াহাবের রেওয়ায়েতে বর্ণিত রয়েছে যে মূসা (আঃ) কে যখন ইয়া মূসা শব্দ প্রয়োগে আওয়াজ দেওয়া হয় তখন তিনি লাব্বায়েক অর্থাৎ (হাজির আছি) বলে জওয়াব দেন এবং বলেন যে আমি আওয়াজ শুনছি । কিন্তু কোথা থেকে আওয়াজ দিচ্ছেন তা জানি না । এবং মূসার একটি প্রশ্ন করেন বা বলেন আপনি কোথায় আছেন ? উত্তরে বলা হয় আমি তোমার উপরে সামনে পশ্চাতে এবং তোমার সাথেই আছি । তারপর মূসা (আঃ) আরয করলেন আমি স্বয়ং আপনার কালাম শুনেছি, না আপনার প্রেরিত কোন ফেরেশতার কথা শুনেছি ? জওয়াবে বলা হয় আমি নিজেই তোমার সাথে কথা বলছি । সূরা আত ত্বোয়া-হা -এর ১২ নং আয়াতে আল্লাহু তাআলা উল্লেখ করেছেন
“ আমিই তোমার পালনকর্তা, অতএব তুমি জুতা খুলে ফেল, তুমি পবিত্র উপত্যকা তুয়ায় রয়েছ । ”
জুতা খোলার নির্দেশ দেওয়ার এক কারণ এই যে, স্থানটি ছিল সম্ভ্রম প্রদর্শনের এবং জুতা খুলে ফেলা তার অন্যতম আদব । দ্বিতীয় কারণ এই যে, কোন কোন তথ্য থেকে জানা যায়, মূসা (আঃ) এর পাদুকাদ্বয় ছিল মৃত জন্তুর চর্মনির্মিত । হযরত আলি, হাসান বসরী এবং ইবনে জুরায়জ থেকে প্রথমোক্ত কারণই বর্ণিত আছে । তাদের মতে মূসা (আঃ) এর পদদ্বয় এই পবিত্র উপত্যকার মাটি স্পর্শ করে বরকত হাসিল করুক এটাই ছিল জুতা খুলে রাখার উপকারিতা ।


এবং হাদীসে আছে রসূলুল্লাহ (সাঃ) বশীর ইবনে খাসাসিয়াকে কবরস্থানে জুতা পায়ে হাটতে দেখে বলেছিলেন
“ তুমি যখন এ জাতীয় সম্মানযোগ্য স্থানে অতিক্রম কর তখন জুতা খুলে ফেল । ”
সূরা আত ত্বোয়া-হা -এর ১৪ থেকে ১৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহু তাআলা হযরত মূসা (আঃ) কে ধর্মের সমুদয় মূলনীতি শিহ্মা দেওয়া হয়েছে আর্থাৎ তাওহিদ, রেসালাত ও পরকাল এবং তিনি বলেছেন
“ আমিই আল্লাহ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই । অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর। কেয়ামত অবশ্যই আসবে আর আমি তা গোপন রাখতে চাই যাতে প্রত্যেকেই তার কর্মানুযায়ী ফল লাভ করেন । সুতরাং যে ব্যক্তি কেয়ামতে বিশ্বাস রাখে না এবং নিজ খাহেশের অনুসরণ করেন সে যেন তোমাকে তা থেকে নিবৃত্ত না করেন । নিবৃত্ত হলে তুমি ধবংস হয়ে যাবে । ”
এখানে নামাযের নির্দেশে করা হয়েছে । কিন্তু নামাযকে পৃথকভবে উল্লেখ করার কারণ হল এই যে নামায সমস্ত এবাদতের সেরা এবাদত । এবং হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী নামায ধর্মের সমস্ত ঈমানের নূর এবং নাময বর্জন করা মানে কাফেরদের আলামত । কেয়ামতের ব্যাপারটি আল্লাহ্‌ তাআলা সব সৃষ্টজীবের কাছ থেকে গোপন রেখেছেন এমনকি পয়গম্বর ও ফেরেশ্তাতাদের কাছ থেকেও । হযরত মূসা (আঃ) কে লহ্ম্য করে সতর্ক করা হয়েছে যে, তুমি কাফের এবং বেঈমানদের কথায় কেয়ামত সম্পর্কে অসাবধানতার পথ বেছে নিয়ো না তাহলে তা তোমার ধ্বংসের কারণ হয়ে যাবে ।

অতঃপর আল্লাহ্‌ তাআলা বললেন তোমার ডান হাতে ওটা কি ? মূসা (আঃ) বললেন এটা আমার লাঠি । আমি এর উপর ভর দেই । এর দ্বারা আঘাত করে আমার ছাগপালের জন্যে বৃহ্মপত্র ঝেড়ে ফেলি এবং এর দ্বারা আমার অন্যান্য কাজও উদ্ধার হয় । আল্লাহু তাআলা বললেন একে মাটিতে নিহ্মেপ কর । মূসা (আঃ) আল্লাহু তাআলা নির্দেশে তা মাটিতে নিহ্মেপ করার পর তা সাপে পরিনত হলো এবং নড়াচড়া করতে লাগলো । এই সাপ সম্পর্কে কোরআন পাকের এক জায়গায় ছোট ও সরু সাপ বলা হয়েছে । অন্য জায়গায় একে অজগর এবং বৃহৎ মোটা সাপ বলা হয়েছে । সম্ভবত এটি যেখানে যে রূপ আকৃতি ধারণের প্রয়োজন হতো সে রূপ ধারণের আকৃতি ধারণ করতে সহ্মম ছিল । ইমাম কুরতুবীর বর্ণনা অনুযায়ী এটি চিকন সাপের ন্যায় দ্রুতগতি সম্পন্ন ছিল বলে জান্নুন বলা হতো । লোকেরা দেখে ভীষণভাবে ভীত হতো বলে ছওবানুন বলা হতো । অতঃপর আল্লাহু তাআলা বললেন এখন তোমার লাঠিটি হাতে নেও আর তুমি একে ভয় করনো না । আমি একে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দেব । হযরত মূসা (আঃ)কে দেওয়া আল্লাহু তাআলার দ্বিতীয় মু জেযা হল তার উজ্জ্বল হাত । ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত আছে আল্লাহ্‌ তাআলা বললেন তোমার হাত বগলের নীচ রেখে যখন বের করবে তখন তা সূর্যের ন্যায় ঝলমল করতে থাকবে । স্বীয় রসূলকে দুটি বিরাট মুজেযার অস্ত্র দ্বারা সুসজ্জিত করার পর আদেশ করা হয়েছে যে এখন উদ্ধত ফেরাউনকে ঈমানের দাওয়াত দেয়ার জন্যে চলে যাও ।

তথ্য ইন্টারনেট থেকে গুটিয়ে গুটিয়ে খুঁজে বের করলাম ।



সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৫৯
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয় দিবসের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানিয়ে । সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ২০২৫, ১৬ই ডিসেম্বর।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৯




দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ত্রিশ লক্ষ তাজা প্রানের এক সাগর রক্তের বিনিময়। দুই লক্ষাধিক মা বোনের সম্ভ্রম হারানো। লক্ষ শিশুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত‍্যু। এক কোটি মানুষের বাস্তুহারা জিবন। লক্ষ কোটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×