উগ্রবাদীদের হুমকির মুখে থাকা বাংলাদেশী ব্লগার অথবা লেখকদের জরুরী আশ্রয় দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন আহবান জানিয়েছে তাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছেন বাংলাদেশে ব্লগাররা।বাংলাদেশী লেখকদের জরুরী আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির কাছে সোমবার একটি চিঠি পাঠিয়েছে পেন আমেরিকান সেন্টারের নেতৃত্বে আটটি সংগঠনের একটি জোট। চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ রিপোর্টাস উইদাউট বর্ডারস এবং ফ্রিডম হাউজ।
এক সাক্ষাতকারে ব্লগার আরিফ জেবতিক বলেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো যে উদ্যোগ নিয়েছে এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তাতে ব্লগাররা কৃতার্থ। তিনি আরো বলেন এখন যুক্তরাষ্ট্রের অথবা বড় দেশগুলোর সিদ্ধান্তের বিষয়। একথা সত্যি যে বাংলাদেশের ব্লগাররা নিয়মিত মারা যাচ্ছেন এবং আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। তাদের রক্ষা করার জন্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাজ করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশে এই বছরেই পাঁচজন ব্লগার নিহত হয়েছেন এবং আর অনেককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এসব হামলা এবং হুমকির জন্যে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মৌলবাদী গোষ্ঠীকে অভিযুক্ত করে আসছেন ব্লগাররা। কিন্তু হুমকির মুখে দেশ ছেড়ে ব্লগাররা চলে গেলে যারা হুমকি দিচ্ছে তাদেরই কি জয় হবেনা ? বিবিসির এমন প্রশ্নের জবাবে আরিফ জেবতিক বলেন মৌলবাদ এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম তা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু কিছু ব্লগারের জীবন যখন একেবারেই হুমকির মুখে পড়ে গেছে। তারা যদি নিরাপদে থাকতে পারেন বিশ্বের যেখানেই তারা যান না কেন লেখালেখির মাধ্যমে এই সংগ্রামের রসদ যোগাতে পারবেন।
সেখানে আরো বলা হয় বিদেশে যাওয়ার এমন সুযোগ পেলে এমন পরিস্থিতি কি হতে পারে যে কেউ ইচ্ছে করে ইসলাম বা নবী মোহাম্মদকে নিয়ে কিছু লিখলো এবং আমেরিকায় আশ্রয় চাইলো ?
এর জবাবে মিঃ জেবতিক বলেছেন এই আশংকাও আছে। তবে এমনও অনেকে এখনো চেষ্টা করছে। তারা দূতাবাসে ধর্না দিয়ে নির্যাতিত ব্লগার বলে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আর এই সুযোগও কাজে লাগিয়ে কিছু পেশাদার আদম ব্যাপারীরা হয়তো বিভিন্ন জায়গা থেকে কিছু তরুণ তরুনিকে কে ব্লগার সাজিয়ে পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রকৃত যারা বিপন্ন যারা দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখি করে নিজের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে তাদের চিহ্নিত করা কষ্টকর হবেনা। আর অতি সহজেই কাদের এ সহায়তা প্রয়োজন সেটা বের করা সম্ভব হবে। আবার এমন না যে সুযোগ পেয়ে সবাই দেশ ছাড়বেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি দেশ ছাড়তে আগ্রহী নই। জীবন বিপন্ন হলেও আমি দেশেই থাকতে চাই
বিদেশে আশ্রয় নেওয়াই কি সব সমস্যার সমাধান ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন এইটা সমাধান নয়। আমরা তরুণরা হচ্ছি প্রগতিশীল বাংলাদেশ এবং ধর্মান্ধ বাংলাদেশের মধ্যে বিভেদরেখা। আমরা হচ্ছি লাস্ট ডিফেন্স লাইন। আমাদের এই সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে যাতে দেশ কোনভাবেই কারো খপ্পরে না পড়ে যায়। তবে শুধু ব্লগারই না সবারই জীবনের নিরাপত্তা বিধানে সকল পক্ষ বিপক্ষদের সজাগ করতেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সহ সবাইকে কাজ করা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন
তথ্যসূত্রঃ অনলাই নিউজ ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৭