somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাক স্বাধীনতার কোন সীমারেখা নেই

২৫ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছু কিছু শব্দ আমাদের সমাজে নতুন আবির্ভাব হয়েছে। শব্দ গুলোর সাথে সবাই পরিচিত। কিন্তু এর প্রচার ব্যবহার অপব্যবহার ব্যাপ্তি প্রয়োগ অপ্রয়োগ শুরু হয়েছে কয়েক দশক আগে থেকে। শব্দগুলো হল ‘বাক স্বাধীনতা, 'মত প্রকাশের অধিকার'। এগুলো খুব স্বাভাবিক অর্থে ব্যবহৃত হতে পারত। কিন্তু এগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে বিকৃত অর্থে। অথবা এ-সব শব্দের সাথে এমন দুর্ঘটনা জড়িত আছে, যা সাধারণের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অন্যান্য আরও অনেক শব্দের মত এ-সব শব্দও হতে পারত স্বাভাবিক। কিন্তু বিগত কয়েক দশক ধরে এ-সব শব্দ হয়ে উঠেছে ভিন্ন অস্বাভাবিক এবং আতঙ্কজনক। বিশেষ করে গত এক দশকে বাক স্বাধীনতা অর্থ পরিবর্তন হয়ে গেছে কিংবা বিকৃত করা হয়েছে কিংবা ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে।

কয়েক বছর আগেও কেনো এ-সব শব্দের ব্যবহার কম ছিল; ইদানীং কেনো খুব ঘন ঘন শোনা যায়, এ-সব শব্দের অর্থ ব্যাখ্যা প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আগে কেনো সমাজ মাথা ঘামায় নি। এখন কেনো এ-সব শব্দের ব্যবহার এত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠছে?

উত্তর আমাদের সমাজের পরিবর্তনের সাথে জড়িত। আমাদের দেশের জন্ম হয়েছিল একটি স্যাকুলার রাষ্ট্র হয়ে উঠার জন্য। আমরা পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়েছিলাম। তখন আমরা ধর্মকে প্রাধান্য দেই নি। পূর্বপাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধান ধর্ম একই ছিল। ৪৩ বছর আগেই বুঝতে পেরেছিলাম ধর্মের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকা যায় না। সেখানে শোষণ থাকে, নিপীড়ন থাকে, অত্যাচার থাকে। এই স্বাভাবিক বোধের দ্বারা তাড়িত হয়ে বাঙালি লড়াই করে নিজেদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছে যার ভিত্তি ছিল গণতন্ত্র সমাজতন্ত্র জাতীয়তাবাদ এবং ধর্ম নিরপেক্ষতা। আমাদের সৃষ্টির ভিত্তি ছিল অসাধারণ। কিন্তু কালের বিবর্তনে এই অসাধারণ ধীরে ধীরে সাধারণে পরিণত হতে থাকলো।

ধর্ম নিরপেক্ষ সমাজে প্রবেশ করতে থাকলো ধর্মের বৈষম্য, ধর্মের প্রাধান্য। আমাদের স্বাধীনতার সময়কাল থেকে এক শ্রেণীর মানুষ চেষ্টা করেছিল ধর্ম বৈষম্যের বীজ বপন করতে। সেই সময় তারা পুরোপুরি সক্ষম হয় নি, দেশ স্বাধীন হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু সেই চেষ্টার সফল রূপ ধারণ করতে থাকে আরও পরে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই উদ্দেশ্য মলিন হতে থাকে। এক শ্রেণীর ভণ্ড শোষক প্রতিক্রিয়াশীল সাম্প্রদায়িক উগ্র সম্প্রদায় মানুষের মাঝে অযৌক্তিক চিন্তার বিকাশ ঘটাতে সচেষ্ট হয়; যে মানুষ চাইলেই সব বলতে বা প্রকাশ করতে পারে না। বিশেষ করে ধর্ম নিয়ে কিছু বলার অধিকার রাখে না। মানুষ তার চিন্তার প্রকাশ অবশ্যই সীমারেখা টেনে করবে। একটি স্বাধীন দেশে যদি কথা বলা, মত প্রকাশের উপর হস্তক্ষেপ করা হয় তবে সেই দেশের স্বাধীনতা কোন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে তা সহজে অনুমেয়।

একটি স্বাধীন দেশে মানুষের বাক স্বাধীনতা, মত প্রকাশের অধিকার তার মৌলিক অধিকার এবং এ তার জন্মগত অধিকারও বটে। প্রতিটা মানুষ আলাদা, আলাদা তার সত্তা, তার চিন্তা করার ক্ষমতা। একজন মানুষের কাছে যা গ্রহণযোগ্য তা অন্য মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। যদি কারো কাছে কোন কিছু গ্রহণযোগ্য না হয়, ভুল বলে মনে হয় বা কোন কিছুর সত্যতা নিয়ে নুন্যতম সন্দেহ থাকে তবে মানুষ মাত্রই প্রশ্ন করতে পারে, যুক্তি জানতে চাইতে পারে, অনুসন্ধান করতে পারে, সত্য জানার জন্য গবেষণা করতে পারে।
পৃথিবীতে একমাত্র মানুষ নামের প্রাণী কথা বলতে পারে, মনের ভাব ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ কতে পারে। মানুষেরই বুদ্ধি আছে, আছে অজানাকে জানার আগ্রহ এবং যোগ্যতা। এই কারণেই মানুষ অন্যান্য প্রাণী থেকে ভিন্ন। ভিন্নতার শক্তি দিয়ে মানুষ আবিষ্কার করেছে অকল্পনীয় সব যন্ত্র প্রযুক্তি শিল্প কারখানা। সভ্যতা সৃষ্টি হয়েছে মানুষের বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগের ফলে। মনুষ্য সভ্যতা যদি আজ আধুনিকতার সকল সুযোগ সুবিধা উপভোগ করে তবে সেই ভোগের কৃতিত্ব যায় মানুষের বুদ্ধিমত্তা এবং অজানাকে জানার অদম্য আগ্রহের প্রতি। মানুষ চিন্তা ভাবনা দিয়ে তার ভেতরের ক্ষমতাকে ব্যবহার করতে শিখেছে। আর এ-সবই সে করেছে প্রশ্ন করার ইচ্ছে থেকে। কী কেনো এবং কিভাবে? এই সব প্রশ্নই মানুষকে আদিম যুগ থেকে বর্তমান আধুনিক যুগে নিয়ে এসে উপনীত করেছে।
আজকে মৌলবাদ সমাজ ফতোয়া জারি করছে মানুষ মত প্রকাশ করবে সীমারেখা টেনে, সে যা খুশি বলতে পারবে না, তার অধিকার নেই মনের সব ভাব প্রকাশ করার, বা মানুষের বাক স্বাধীনতা অসীম নয়, সীমাবদ্ধ।

যদি এমন ফতোয়া আদিম যুগ থেকেই বিরাজমান হত তবে কি আজ আমরা আধুনিক যুগ দেখতে পেতাম? যদি বলা হত, মানুষ প্রশ্ন করতে পারবে না কেনো সূর্য পূর্ব দিক থেকে ওঠে, প্রশ্ন করতে পারবে না কেনো কীভাবে কোন রোগ হয়, তা থেকে মুক্তির জন্য কীভাবে ঔষুধ বানাতে হয়, কোন ঔষুধ কোন রোগের জন্য, কীভাবে মানুষকে সুস্থ স্বাভাবিক রাখা যায়, কীভাবে বিভিন্ন যন্ত্র কল কারখানা আবিষ্কার করা যায় যা থেকে মানুষের কাজের সুবিধা হয়, তবে বর্তমানে আমাদের অস্তিত্ব কোথায় এসে দাড়াত? আমরা কি আজ সভ্য মানুষে পরিণত হতে পারতাম, বা পারতাম প্রকৃতির বিরূপ পরিস্থিতির সাথে মোকাবেলা করে বেঁচে থাকতে? অবশ্যই পারতাম না। মানুষের প্রশ্ন করার ক্ষমতা, সর্বোপরি কথা বলার এবং চিন্তা করার ক্ষমতা তাকে করেছে মহান, এবং মহাজগত এসেছে তার হাতের মুঠোয়।
মানুষ অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা শুধুমাত্র তার বুদ্ধিমত্তা এবং মনের ভাব মুখে প্রকাশ করার ক্ষমতার জন্য। জাগতিক সকল কিছুকে বোঝা এবং ব্যাখ্যা করার যোগ্যতা রাখে মানুষ। তাছাড়া অন্যান্য সকল প্রাণীর মত মানুষও শুধু খাওয়ার এবং বংশ বিস্তার করার জন্যই বেঁচে থাকতো। প্রাণী জগতের অন্যান্য প্রাণীও অস্তিত্বের সংগ্রামে টিকে রয়েছে। যে প্রকৃতির সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে পারে সেই বেঁচে থাকতে পারে। তারই বংশ বিস্তার সম্ভব। সেই হিসেবে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে কোন পার্থক্য থাকতো না যদি না মানুষের বোধ প্রকাশ করার ক্ষমতা না থাকতো, না থাকতো বুদ্ধিমত্তা।

কীভাবে সে তার এই ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। সন্দেহাতীত ভাবে মৌখিক ভাষার মাধ্যমে প্রথমে সে অজানাকে জানতে চায়। কোন কিছুর জানার প্রথম পদক্ষেপই হল প্রশ্ন করা। মানুষ জন্ম থেকে ব্যাকুল থাকে কথা বলার জন্য। শিশুর অবুঝ ভাষা এক সময় বোধগম্য ভাষায় রূপ নেয়। এবং ধীরে ধীরে সে জানতে শুরু করে কোনটা কি কেনো কীভাবে। তখন আমরা সবাই তা জানার ইচ্ছে পূরণ করি। কেনো পূরণ করি, কারণ এটাই স্বাভাবিক। জানতে চাওয়া মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি।

এই সহজাত প্রবৃত্তি থেকে তাড়িত হয়েই মানুষ অসম্ভবকে সম্ভব করেছে, অকল্পনীয় আবিষ্কার করেছে, সভ্যতার বিকাশ ঘটিয়েছে। মানুষ জানতে চায় বলে মুখ দিয়ে প্রশ্ন করে, প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে সে আবিষ্কার করে নতুন সত্য, নতুন সৃষ্টি। কথা বলার অধিকার, বাক স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা কখনো আরোপিত ব্যাপার নয়, এটা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি, জন্মগত অধিকার, প্রাণী জগতে সে মানুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছে, সুতরাং সে তার ক্ষমতার ব্যবহার করবেই। মানুষকে যেমন ক্ষুধা লাগার প্রবৃত্তি থেকে দূরে রাখা যাবে না, তেমনি মত প্রকাশের অধিকার থেকে দূরে রাখা যাবে না। ক্ষুধা লাগলে সে সহজাত ভাবে খাবারের সন্ধান করবে, এটা যেমন তাকে কেউ বলে দেয় না, বা তাকে খাবারের সন্ধান করতে কেউ বাধা দিতে পারবে না, তেমনি তার মনে যদি কোন প্রশ্ন জাগে, কোন ভাব সে প্রকাশ করতে চায় তবে এই পৃথিবীতে কারো অধিকার নেই কেউ তাকে বাধা দিবে। কথা বলা, মত প্রকাশের উপর যদি বাধা আরোপ করা হয় তবে পৃথিবীর কোন সৃষ্টি সম্ভব হতো না, প্রযুক্তির বিকাশ থেমে যেতো, মানুষ এখনো গুহার সমাজেই বসবাস করতো।

ধরে নিলাম মানুষের প্রশ্ন করার অধিকার নেই, সে শুধুমাত্র সাধারণ কথা বলবে, কোনরূপ প্রশ্ন করবে না, তবে নিউটন নিশ্চয়ই প্রশ্ন করতে পারত না, আপেলটি কেন উপর থেকে নীচে পড়েছে , কেন উপরে চলে যায়নি, এই প্রশ্নটি যদি তার মনে উদয় হয়েই মনে শেষ হয়ে যেত তাহলে নিউটনের সূত্র দিয়ে বিপ্লব সম্ভব হতো না, বিজ্ঞানের বিকাশ সম্ভব হতো না। কীভাবে একজনের কথা আরেকজনের কাছে পৌঁছানো যায় কোন তার ছাড়া, কোন কিছু লিখিত ছাড়া, এই প্রশ্ন যদি করার অধিকার না থাকতো তবে আজ টেলিফোন আবিষ্কার হতো না, মানুষের পক্ষে সম্ভব হতো না দূরের মানুষের সাথে যোগাযোগ করা। উদাহরণ দিতে গেলে এমন কোটি উদাহরণ দেওয়া যাবে, মানুষের কথা বলার অধিকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলে কি পরিণতি ঘটত!

বিষয়টি খুব পরিষ্কার যে আমরা এসব বিষয়ে নিজেদের মত প্রকাশ করতে পারি, প্রশ্ন করতে পারি, কারণ এগুলো মানুষের চাক্ষুষ উপযোগিতায় কাজে লাগে। কিন্তু যেই মানুষ অলৌকিক বিষয়ে প্রশ্ন করতে যায় তাকে ঘিরে ধরে অসংখ্য কালো থাবা। কেউ একজন বহু আগে কিছু বলে গেছে, কিছু অলৌকিক কাহিনীর জন্ম দিয়ে গেছে, জগতের সৃষ্টির ব্যাখ্যা দিয়ে গেছে, কিছু নিয়মকানুন বনিয়ে দিয়ে গেছে, এবং মানুষ তা নির্বিচারে মেনে নিচ্ছে। কেউ যদি কোন কিছু মেনে নিয়ে সেই অনুযায়ী জীবন যাপন করে তবে সেখানে কারো অধিকার নেই হস্তক্ষেপ করার। ঠিক তেমনি কেউ যদি এসব অতি প্রাকৃতিক বিষয়ে প্রশ্ন তুলে, জানতে চায় কোথা থেকে এসবের উৎপত্তি, বা এসবের প্রমাণ কী, ভিত্তি কী তবে কারো অধিকার নেই তার প্রশ্ন করার অধিকারে কেউ হস্তক্ষেপ করার। একজন স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ যেমন অধিকার রাখে পৃথিবীর যে কোনো কিছু নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে তেমনি অধিকার রাখে অলৌকিক, ধর্ম, সংস্কার, প্রথা নিয়ে প্রশ্ন করতে। মানুষ যদি অন্য দেশ জাতি সম্প্রদায় কৃষ্টি সংস্কৃতি অথবা কোন ন্যায় অন্যায় নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে পারে, এবং সেটিকে আমরা বাক স্বাধীনতার নাম দিতে পারি তবে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে মত প্রকাশে সীমারেখা বিধিনিষেধ আরোপ করা কেনো হবে?
একটি বিষয় যুগের পর যুগ এক ভাবে চলে আসছে, যাকে আমরা ধর্ম বলি, যারা ধর্মের প্রবর্তন করেছে তাদের আমরা অতিমানব বলি। এখন কোন মানুষের যদি মনে প্রশ্ন জাগে যে, ধর্ম তা আসলেই কী, যেমন এর প্রবক্তারা বর্ণনা করে গেছেন, বা এই যে সমাজব্যবস্থা যা ধর্মের প্রবক্তারা ধর্মের নাম দিয়ে ঈশ্বরের বয়ান বলে চালু করে দিয়ে গেছেন তা কি আসলেই এমন? অথবা কেউ যদি মনে করে এই সমাজব্যবস্থায়, এই ধর্মের প্রচারণায়, নিয়মনীতিতে, প্রথাতে এমন কিছু আছে যা মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে, বা এখানে এমন কিছু আছে যা অন্যায় বলে মনে হয়, বা সঠিক নয়, বা এর সংস্কার প্রয়োজন, বা যে সব অলৌকিক কাহিনীর বর্ণনা আমরা পাই বিভিন্ন ধর্মীয়গ্রন্থে তা কি আদৌ কখনো ঘটেছিলো, বা এর কি কোন যৌক্তিকতা আছে?

এগুলো মানুষের মনে প্রশ্ন হয়ে জাগতেই পারে, সে উত্তর আশা করতে পারে সমাজের কাছ থেকে, অথবা এই নিয়ে গবেষণা করতে পারে। যদি সে সন্তুসজনক উত্তর পায় তবে মেনে নিলো, যদি উত্তরে সে যৌক্তিকতা খুঁজে না পায় তবে সে আরও প্রশ্ন করবে, আরও এর ব্যাখ্যা জানতে চাইবে। এর উপর সে তার নিজের চিন্তা প্রকাশ করতে চাইবে, তার যৌক্তিকতা, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ সে অকপটে প্রকাশ করবে, যা অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। পৃথিবীর অন্যান্য সকল বিষয়ে মানুষ তার নিজস্ব চিন্তা যদি কোন রূপ বাধা ছাড়াই প্রকাশ করতে পারে তবে শুধুমাত্র একটি বিষয়ে কেনো তাকে চুপ থাকতে হবে?

মূর্খরা প্রচার করছে, বাক স্বাধীনতা মানেই যা খুশি বলা নয়, একজনের মত প্রকাশ যদি অন্য আরেকজনের মনে আঘাত দেয় তবে তার উচিত না সেই সম্পর্কে কথা বলা। একেও যে মানুষ যুক্তি বলে ধরে নিতে পারে তা বোধের বাইরে। মানুষ জন্মগত ভাবে যে অধিকার নিয়ে জন্মায় সেই অধিকার যদি সে প্রয়োগ করে তবে অন্য কারো অনুভূতিতে আঘাত লাগবে কী করে! আর অনুভূতিতে আঘাত লাগার বিষয়টিও কিছু ধূর্ত ও মূর্খের বানানো। যে জিনিশ সম্পর্কে আমি জানতে চাই, অথবা যে জিনিশ নিয়ে আমি দ্বিধান্বিত, অথবা আমার সন্দেহ হচ্ছে ব্যাপারটা হয়তো এমন নয়, অথবা আমি মনে করছি এখানে অন্যায়কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, এটি ভণ্ডামি; এটি বিভাজন-কারি, নাশকতা তৈরিকারী ইত্যাদি বললেই তা অন্য মানুষের মনে আঘাত লাগতে পারে; এ আসলেই আশ্চর্যের ব্যাপার।
একজন মানুষের কীসে ভাল লাগে, কীসে খারাপ লাগে তা মানুষ ভেদে নির্ভর করে। পৃথিবীর সকল মানুষের অনুভূতির দিকে নজর রেখে যদি মত প্রকাশ করতে হয় তবে অধিকাংশের কথা বলা বন্ধ করে দিতে হবে। হতে পারে কারো গোলাপ ফুল খুব প্রিয়, আমার কাছে গোলাপ ফুল একেবারেই ভাল লাগে না, এখন যদি আমি বলি গোলাপ ফুল সুন্দর না, তাতে কি ওই গোলাপ প্রিয় মানুষের মনে আঘাত লাগবে? যদি লাগেও বা তাতে কি আমার কথা বলা বন্ধ করা উচিত?

একজন অপরাধীর অপরাধের সমালোচনা করে যদি আমি মত প্রকাশ করি তাহলেও অপরাধীর মনে আঘাত লাগতে পারে, যদি অপরাধীর মনে আঘাত লাগেও বা তবে কি আমার সমালোচনা করে মত প্রকাশ করা অন্যায়? অবশ্যই না। যেহেতু যা আমার ভাল লাগে নি সেহেতু আমি তা বলতেই পারি, ঠিক সেভাবে আমার কিছু ভাল লাগলে আমি তা প্রকাশ করতে পারি। মানুষ হয়ে আমার যেমন অধিকার আছে খারাপ কিছুর সমালোচনা করে মত প্রকাশ করার, তেমনি অধিকার আছে কোন কিছু নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করার। মানুষ অধিকার রাখে যে কোনো কিছু নিয়ে সমালোচনা করার।

মানুষ মত প্রকাশ করে, কথা বলে, কোন কিছু জানার জন্য বোঝার জন্য। অথচ শুধুমাত্র এই একটি বিষয়ে নাকি প্রশ্ন করা যাবে না, মত প্রকাশ করা যাবে না। তা হচ্ছে ধর্ম এবং ধর্ম সংক্রান্ত যে কোনো কিছু। তাতে নাকি মানুষের অনুভূতি ভেঙে খান খান হয়ে যায়, তারা আহত হয়, অদৃশ্য রক্তপাত হয়।

এই বিষয়ে কেনো এত বিধি নিষেধ! কারণ ধর্মকে মানুষ ধরে নিয়েছে সকল কিছুর ঊর্ধ্বে। বলা হয় ধর্ম খুব স্পর্শকাতর ব্যাপার, তাই এই নিয়ে বেশি মাথা ঘামানো উচিত না! যে বিষয় মানুষের জীবনধারণ নির্ধারণ করে, সমাজব্যবস্থা নির্ধারণ করে, মানুষের চিন্তাভাবনাকে নিয়ন্ত্রণ করে সেই বিষয় নিয়েই সবচেয়ে বেশি গবেষণা হওয়া উচিত।

আমাদের মধ্যে একটি ভুল ধারণা বিরাজমান যে মত প্রকাশ মানেই কোন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া। কিন্তু আসলে ব্যাপারটি তেমন নয়। একটি বিষয় সম্পর্কে আমি কি ধারণা পোষণ করি তাই প্রকাশ করা মানেই হচ্ছে বাক স্বাধীনতা। বাক স্বাধীনতা মানে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া নয়, বা এও নয় যে আমি যা মানছি, আমি যা চিন্তা করছি তাই সবাইকে মানতে হবে। আমি যেমন স্বাধীন ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করতে, তেমনি অন্য কেউও স্বাধীন ধর্ম মেনে চলতে। আমি যেমন ধর্মের অসাড়তা নিয়ে মত দিতে পারি তেমনি অন্য কেউও পারে আমাকে ভুল প্রমাণ করতে, বা আমার মতের সমালোচনা করতে।

আরও একটি বিষয় আমাদের সমাজে প্রচলিত, তা হল আমরা সমালোচনা একে বারেই সহ্য করতে পারি না। বাঙালি মুসলমান ধরেই নিয়েছে; বিশেষ করে ধর্মের বিষয়ে, কেউ যদি একমত না হয় তবে তার কথা অগ্রহণযোগ্য, মিথ্যে, সে অপমান করেছে ধর্মকে, সে কাফের, নাস্তিক, ঘৃণ্য মানুষ! অথচ এই স্বাভাবিক ব্যাপারটি বাঙালির মাথায় আসে না যে মানুষের সহজাত প্রবৃত্তিই হল জানতে চাওয়া। ততোক্ষণ প্রশ্ন করা যতক্ষণ না পর্যন্ত সে সঠিক উত্তর পায়। আমাদের সমাজে সমালোচনা মানে হচ্ছে গালাগালি।

কুমার সেনের বিখ্যাত ‘ভাষার ইতিবৃত্ত’ গ্রন্থে স্ল্যাং বা গালাগালি’কে সংজ্ঞায়িত করেছেন :
"যে শব্দ বা পদ ভদ্রলোকের কথ্যভাষায় ও লেখ্য ভাষায় প্রয়োগ হয় না এবং যাহার উৎপত্তি কোন ব্যক্তি বিশেষের অথবা দলবিশেষের হীন ব্যবহার হইতে তাহাই ইতর শব্দ (স্ল্যাং)"
যুক্তিকে ক্ষুরধার ও শক্তিশালী করতে অশালীন ইতর শব্দ প্রয়োগের আদৌ কোন প্রয়োজন আছে বা সেটা কোন অনুকরণীয় কাজ বলে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি না।
অখাদ্যে নিশ্চিত ভাবেই বদহজম হয়, তার বেশী কিছু কল্পনা অলীক প্রত্যাশা। সমালোচনার ভাষা হওয়া উচিত বুদ্ধিদীপ্ত কিন্তু তীর্যক; সর্বোপরি ইতর শব্দ বিবর্জিত।

কেউ যদি বলে মুসলমানদের শেষ নবী মোহাম্মদ কেনো এই কাজটি করেছিল? তার কি এই কাজ করা উচিত হয়েছিল? সাথে সাথে ফতোয়া জারি হয়ে যাবে যে সে মোহাম্মদকে গালি দিয়েছে। অথচ সে শুধুমাত্র জানতে চেয়েছে; মোহাম্মদের কাজ সম্পর্কে, সে তার মত প্রকাশ করেছে মাত্র।

ধর্ম আমাদের দেশে একটি ভয়ানক ট্যাবু। একে মৌলবাদীরা এমন ভাবে বিকৃত করেছে যে এখন আমাদের সমাজে এটি প্রচলিত হয়ে গেছে কেউ যদি ধর্ম নিয়ে কোন কথা বলে তবে তার বেঁচে থাকার অধিকার নেই। কেউ যদি কোনরূপ মত প্রকাশ করে সেটা যৌক্তিক হলেও ব্যক্তিকে হত্যা করা ফরয হয়ে যায়।

বর্তমানে আমাদের দেশে ৫৭ ধারা নামে একটি ধারা আছে, যেখানে স্বয়ং সরকার চায় বাক স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ করতে। সেই ধারায় বলা হয়েছে, কারো মত প্রকাশে যদি কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে তবে তাকে জামিনবিহীন গ্রেপ্তারসহ শাস্তিও দেওয়া হবে। সেই শাস্তির মেয়াদ ৭ থেকে ১৪ বছর। ২০১৩ সালে ৪জন ব্লগারকে আটক করা হয়েছিলো, এবং বর্তমানে তারা মৌলবাদীদের হত্যার লিস্টে প্রথম দিকেই আছে। এবং তাদের মধ্যে কয়েকজন দেশের বাইরেও অবস্থান করছে, কারণ দেশে থাকলে যে কোনো সময় মৃত্যুর মুখে পতিত হবে। তাদের অপরাধ ছিল তারা তাদের মত প্রকাশ করেছে। এই মত প্রকাশের জন্য মৌলবাদীরা তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল, সরকারকে হুকুম দিয়েছিল তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে, এবং প্রগতিশীল সরকার মৌলবাদীদের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। যে দেশে সরকারই নিরাপত্তা দেওয়ার পরিবর্তে জেলে ঢুকায় সেখানে বাক স্বাধীনতা আর জীবিত থাকতে পারে না।

ধর্মের বিষয়ে কিছু বললেই কেনো মানুষ তেড়ে আসে হত্যা করার জন্য? ধর্মকে মানুষ অলঙ্ঘনীয় মনে করে। কোন সমালোচনাকারী বলে নি যে কেউ ধর্ম মানতে পারবে না, সমালোচনাকারী শুধু বলে ধর্মের কোথাও কোথাও অসাড়তা আছে, কোথাও অযৌক্তিকতা আছে; সে শুধু উপস্থাপন করে তার বিশ্লেষণ। অথচ এই উপস্থাপনের বিপরীতে তার প্রাণনাশের হুমকি আসতে থাকে।

যে বিষয়ের প্রতি কারো অগাধ বিশ্বাস থাকে, সেই বিষয়ে কেউ সমালোচনা করলে, বা তার বিপরীতে কেউ কিছু বললে সেই বিষা কি ফাটল ধরে? একজন মানুষের মন্তব্যের উপর যদি বিশ্বাস নির্ভর করে তবে সেটা কি ঠুনকো নড়বরে বিশ্বাস নয়? ধর্মকে যদি পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে ধরে নেওয়া হয়, তবে এর বিশ্বাসও তো এমন হওয়ার কথা যে, যে যাই বলুক বিশ্বাসে কখনো ফাটল ধরবে না। ধর্মে যদি কোথাও কোন অযৌক্তিকতা না থাকে, তবে যে সমালোচনা করছে তাকে উপযুক্ত উত্তর দিয়ে তার সমালোচনা খণ্ডন করে দিলেই হয়। কিন্তু বাস্তবে আমরা এমন দেখি না। বরং অত্যন্ত হিংস্র রূপ দেখতে পাই। যদি কেউ জিজ্ঞেস করে, ধর্মে এমন কঠোর আইন কেনো? তবে তাকে যৌক্তিক উত্তর দেওয়ার পরিবর্তে বলা হবে সে নাস্তিক, মুরতাদ, সে ধর্মের অপমান করেছে, সে ধর্মের জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং কতল করতে হবে। এখানে মত প্রকাশের বিনিময়ে হত্যা জায়েজ। এখানে বাক স্বাধীনতার পরিণতি মৃত্যু। একজনও সমালোচনাকারি কখনো বলে নি, লিখে নি যে আমার মত না মেনে নিলে আমিও চাপাতি চালাবো, অথচ অন্য দিকে মৌলবাদীরা একটি লাইন না পড়েই চাপাতির ব্যবহার শুরু করে দেয়।

কতটা নৃশংস হলে কলমের পরিবর্তে চাপাতির প্রচলন হতে পারে? মৌলবাদীরা হিংস্র তাই তারা মানুষের জীবনের কোন মূল্যায়ন করে না। কিন্তু ভয়ানক রকমের সত্য হল আমাদের দেশে এখন অধিকাংশ মানুষ মৌলবাদীর মতই চিন্তা করতে শুরু করছে। মৌলবাদীরা মানুষের মগজে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে যে, ধর্মের সম্মান রক্ষার্থে এসব হত্যা জায়েজ। বিস্ময়কর হলেও; সত্য, সাধারণ মানুষ এখন ইনিয়ে বিনিয়ে তাই বলছে।

একের পর এক ব্লগার হত্যার পর সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া ছিল এমন “হত্যা করা ঠিক নয় নি, কিন্তু ধর্ম নিয়ে লেখার কী দরকার ছিল?” অথচ যে মারা গেছে সে কি আদৌ ধর্ম নিয়ে কিছু লিখেছে কিনা তা পড়েও দেখে নি কেউ। আর কেউ যদি ধর্ম নিয়ে লিখেও থাকে তবে কোন যুক্তিতে তাকে হত্যা করা সঠিক হতে পারে? সে তো কাউকে হত্যা খুন আহত করার কথা লিখে নি, তবে তাকে কেনো খুন হতে হবে? এই সভ্য জগতে হত্যা কি বৈধ? সভ্য সমাজে অমানবিকতা থাকা কতটা যৌক্তিকতা? “ধর্ম নিয়ে লেখা ঠিক হয় নি” এই বাক্যটি বলা মানে বৈধতা দেওয়া যে ধর্ম নিয়ে লিখলে খুন হতেই পারে।

আমরা দেখেছি, অভিজিত রায়ের হত্যার পর মানুষের ভেতরে কোন ক্ষোভ নেই। গুটিকয়েক মানুষ তার হত্যার বিচার চেয়েছে, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ ভয়ে চুপ হয়ে গেছে, বা তারাও হয়তো ইনিয়ে বিনিয়ে এই হত্যাকে বৈধতা দিচ্ছে। অভিজিত রায়ের হত্যার পর আরও দুজন ব্লগার খুন হয়েছে। প্রতিবাদ হয়েছে দায়সারা ভাবে। মানুষের আচরণ এমন ছিল যে, এমন হত্যা স্বাভাবিক, নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। প্রতিদিন অনেক মানুষ বাঙলাদেশে মারা যায়, এমন হত্যাও ওই সব দুর্ঘটনার মত স্বাভাবিক। এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করার কিছু নেই, নেই কোন সুরাহা।

পৃথিবী এগুচ্ছে; আর বাঙলাদেশ দিন দিন পেছনে অন্ধকার যুগে ফিরে যাচ্ছে। আমরা দীর্ঘদিন অন্য দেশের শাসকের দ্বারা পরাধীন ছিলাম। এখনও আমরা পরাধীন; নিজেদের দেশের মানুষের দ্বারা। ৫৬ হাজার বর্গমাইল এখন মৌলবাদীদের হাতে বন্দি। এখানে মানুষ তাই বলবে তাই করবে যা মৌলবাদীরা করতে বলবে। এখানে নতুন চিন্তার কোন স্থান নেই। যে দেশে বাক স্বাধীনতা নেই, মত প্রকাশের অধিকার নেই- সে দেশ কখনও স্বাধীন হতে পারে না। মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে স্বাধীনতা বহাল থাকে না। কিন্তু চিন্তার কলমকে চাইলেই বন্ধ করে দেওয়া যায় না। । কারণ বাক স্বাধীনতার কোন সীমারেখা নেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:১৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×