এশীয় গেমসের পর্দা উঠবে ৫ ফেব্রুয়ারি। ভারতের গুয়াহাটি ও শিলংয়ে অনুষ্ঠেয় এই প্রতিযোগিতা ঘিরে বাংলাদেশের প্রস্তুতি কেমন? গেমসের বিভিন্ন খেলায় আমাদের সাফল্যই বা কী? এসএ গেমসের প্রস্তুতি নিয়ে এই ধারাবাহিেক আজ আর্চারি
ইমদাদুল হক মিলন, তামিমুল ইসলামদের দেখে অন্য খেলোয়াড়েরা ঈর্ষা করতেই পারেন। দীর্ঘমেয়াদি অনুশীলনের জন্য যেখানে বেশির ভাগ ফেডারেশনের খেলোয়াড়দের কণ্ঠে নিত্য হাহাকার, সেখানে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম আর্চারি। এসএ গেমসের জন্য বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) আগস্ট থেকে সব ফেডারেশনকে অনুশীলন ক্যাম্প শুরুর নির্দেশনা দিয়েছিল। কিন্তু আর্চারি অনুশীলন শুরু করে গত বছর জানুয়ারি থেকেই।
টঙ্গীর শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে চলমান আবাসিক ক্যাম্পে আছেন ১৬ জন আর্চার। বিশ্ব আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ, এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, এশিয়ান কাপ, যুব কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং এসএ গেমস মাথায় রেখেই ফেডারেশনের এই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। এরা সবাই অনুশীলন করছেন দক্ষিণ কোরিয়ান কোচ হাগ ইয়ং কিমের অধীনে। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের সাফল্য, সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি মিলিয়ে সোনা জয়ের স্বপ্ন দেখছে আর্চারি ফেডারেশন। আত্মবিশ্বাসী আর্চাররা দিন গুনছেন এসএ গেমসে জ্বলে ওঠার অপেক্ষায়।
বাংলাদেশে আর্চারির চর্চাটা খুব বেশি দিনের নয়। ২০০১ থেকে খেলাটা শুরু হলেও দ্রুতই পরিচিতি পেয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ কয়েকটি সোনা ও রুপার পদক জেতার সুবাদে। সর্বশেষ লন্ডন অলিম্পিকেও খেলে এসেছে আর্চারি। এসএ গেমসে আর্চারির অভিষেক ২০০৬ শ্রীলঙ্কা গেমসে। সেবার ৭০ মিটার অলিম্পিক রাউন্ডে ব্যক্তিগত ইভেন্টে প্রথম ব্রোঞ্জ পদক জেতেন নূরে আলম। একই ইভেন্টে দলগত ব্রোঞ্জ জেতে বাংলাদেশ। পরেরবার ২০১০ ঢাকা গেমসে ৭০ মিটার অলিম্পিক রাউন্ডের ব্যক্তিগত ইভেন্টে রুপা জেতেন শেখ সজীব। একই ইভেন্টে দলগত রুপাও পায় বাংলাদেশ। মেয়েদের ৭০ মিটার অলিম্পিক রাউন্ডে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন মাথুই প্রু মারমা এবং দলগত ব্রোঞ্জ জেতে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের আর্চারির বড় বিজ্ঞাপন ইমদাদুল হক মিলন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে সর্বশেষ রুপা জেতেন ২০১৩ সালে, ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে। পদক-খরায় ভুগতে থাকা মিলন এবার স্বপ্ন দেখছেন এসএ গেমসে ভালো কিছু করার, ‘অনেক দিন কোনো পদক জিততে পারি না বলে খারাপ লাগে। এবারের এসএ গেমসে ভালো আমাকে করতেই হবে। সেই লক্ষ্যে কঠোর অনুশীলন করছি।’
গত এসএ গেমসে অল্পের জন্য সোনা জিততে পারেননি শেখ সজীব। ওই ‘ব্যর্থতা’ এখনো তাঁকে পোড়ায়, ‘ভারতের আর্চারের কাছে হেরে সেবার রুপা পাই। এবার সোনা জিতে সেই দুঃখ ঘোচানোর স্বপ্ন দেখি।’
আর্চারিতে সবচেয়ে বড় স্বপ্ন দেখাচ্ছেন উদীয়মান তামিমুল ইসলাম। গত সেপ্টেম্বরে সামোয়াতে যুব কমনওয়েলথ গেমসে সোনার পদক জেতেন বিকেএসপির তরুণ। বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণের পর স্বাভাবকিভাবেই প্রত্যাশার চাপ বেড়ে গেছে তামিমুলের, ‘বাবা-মা থেকে শুরু করে ফেডারেশনের সবাই চাইছেন এসএ গেমসেও যেন আমিই সোনা জিতি। নিজের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই আমি। গেমসেও ওড়াতে চাই লাল-সবুজের পতাকা।’
আর্চারিতে বাংলাদেশের পদক
সোনা : ০
রুপা : ২
ব্রোঞ্জ : ৪
২০০৬ শ্রীলঙ্কা গেমসে শুরু আর্চারি ।
প্রথম আলো ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৪