আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে ছাত্রবেলায় গ্রীষ্মবকাশের পর স্কুলে ফিরতেই বাংলার শিক্ষক কালহরণের জন্য গ্রীষ্মবকাশের ডায়েরী লেখবার দিয়া ক্লাসে ঝিমাইতেন। কারন তিনিও সারাটা গ্রীষ্মকালের ছুটিতে দিবানিদ্রা দিছেন। তার রেশ কাটেনাই যে।
আমগো ছোটোবেলায় শরৎকালরে সাইজা গুইজা আইতে দেখতাম। আকাশে পেজা পেজা সাদা তুলার মতো মেঘ দেইখা বুইঝা যাইতাম বর্ষা শেষ হইয়া আইতেছে। নদীর পার দিয়া সারি সারি কাশ ফুল ফুইটা উঠত। অমূল্য পালরে দেখতাম খড় আর পাট আইনা আমাগো বারান্দায় ফালাইতে। গরুর গাড়ী কইরা নদীর মাটি আইত। আইত সুতলি-দড়ি। পূজা আইতেছে।
মন উসখুস করতো কবে স্কুল ছুটি হইবো। স্কুল ছুটি হইতেই পাড়ায় পাড়ায় ঘুইরা ঘুইরা প্রতিমা বানানো দেখতাম। কাগো প্রতিমা কিরকম হইতেছে চলতো তর্ক-বিতর্ক। ভাইবেননা আবার নস্টালজিয়ায় আচ্ছন্ন হইতাছি। আর এখন শরৎকাল আইছে কখন বুঝতে পারি চাঁদা-আলাগো দৌরাত্মে।
বহু কাঠ খড় পোড়াইয়া পূজার ছুটি পাইছি। পাইয়াই কোলকাতায় দৌড়।
পুজার ছুটিতে ক্য়দিন হইল কইলকাতার বাড়ীতে আইয়া বিপদেই দিন কাটাইতেছি। আপনাগো আগেই কইছিলাম কইলকাতায় আমার পন্ডিতের একখান ফ্লাট আছে। সেই ফ্লাটে আমার মাইয়া থাকে। ফ্লাটখান আমার আর আমার মাইয়ার দখলেই আছিল। আপনাগো আগেই কইছিলাম আমার মাইয়া কইলকাতায় থাইকা পড়াশুনা করে । আমার পন্ডিতে স্কুলে মাষ্টারী করে, ছুটি-ছাটা বেশী পায়না। কইলকাতায় ঘন ঘন আইতেও পারেনা। আমি আমার অফিসে ছুটি-ছাটা লইয়া বা কায়দা কইরা ঘন ঘন কইলকাতায় আসি যাই। তাই কইছিলাম, ফ্লাটখান আমার আর আমার মাইয়ার দখলেই আছিল ।
কিন্তু পূজার ছুটিতে আমার পন্ডিতে আমার লগে আইয়া ফ্লাটের দখল লইছে। কি করি কনতো?
আমি ফ্লাটে আইয়া সকাল দশটা অব্দি ঘুমাইতাম। আমার মাইয়া কলেজ যাওনের আগ পর্যন্ত ঘুমাইতো - ফতোয়া জারি হইছে - চলবোনা। সকাল সকাল ঘুম থেইকা উইঠা বইয়া থাকতে হইবো। চা খাইয়া বাজারে যাইতে হইবো। কি কি আনতে হইবো একবারে কইবোনা। বারে বারে কইবো আর আমারে বারে বারে বাজারে যাইতে হইবো। কন কি যে জ্বালা হইছে। কি করুম কন, ফ্লাটখানের মালিক তো আর আমি না। হ্যায় যে রকম রকম কইবো আমারে সেইরকম ভাবেই চলতে হইবো। পয়সা? একপয়সা ছোয়াইবোনা। আমার পয়সা দিয়াই আমারে বাজার করতে হইবো, এইটা সেইডা আনতে হইবো। মানে কি খাড়াইলো ! আমারে এই ফ্লাটে থাকতে হইলে কড়ি ফেইললা ত্যাল মাখতে হইবো।
সকালে হুকুম হইলো মাইয়ারে লইয়া ডাক্তারের কাছে যাও।
বড় হাসপাতালে গেলাম। ডাক্তার দেখাইয়া বাড়ী আইলাম। প্রবল বৃষ্টি হইতাছে । কোনো হুকুম হইলনা। বাঁইচা গেলাম। দুপুরে গলদা চিংড়ি আর ইয়া সাইজের সমুদ্রের সবুজ কাঁকড়া দিয়া সরু চাউলের ভাত। উপাদেয়। ঐ খাওনের পর ভাত ঘুম না দিয়া পারা যায়? তার মধ্যে টাপুর টুপুর বৃষ্টি হইতাছে।
বিকাল বেলায় বৃষ্টি কমতেই হুকুম হইলো মাইয়ারে কইছিলা পূজায় নতুন জুতা কিননা দিবা, জুতা কিননা দেও।
জুতা কিনার হ্যাপা অনেক । নাম করা দোকান থেইকা জুতা না কিনলে হেই জুতা জুতাই না। হেই জুতার দোকানে যাইতে হইলে টিউব রেলে যাইতে হইবো। তার আগে অটো। জুতা কিনতে গিয়া মনে হইলে শুধু মাইয়ার জুতা কিনুম আর পন্ডিতেরে জুতা দিমুনা, এইডা কেমন দেখায়। পন্ডিতের জুতা কিনতে হইলে সেলসম্যানের মাথার ঘাম পায়ে পরবো, কারন হ্যার পা-খানি ঈশ্বরে নিজের হাতে বানাইছে। পায়ের সাইজ ম্যাক্সিমাম । বোঝেন ঠেলাখান। মাইয়া আর মাইয়ার মায়ের জুতা কিননা মনে হইলো আমার লেইগাও একখান জুতা কিনি। আপনাগো গোপনে কই, আমার জুতা কিনার টাকা পন্ডিতেই দিছিল।
মনের সুখে জুতা ঝুলাইতে ঝুলাইতে টিউব রেলে চইড়া বাড়ী আইলাম। দামী দোকানথন দামী জুতা কিনছি কিনা।
ছাত্রবেলার ইতিহাস পইড়া শিখছিলাম যে বাইজানটান সাম্রাজ্যের সময়কালে মোজাইক আবিস্কার হইছিল। তা অতো পুরানা দিনের মোজাইক ফ্লাটের মেঝেতে থাকে কি কইরা ? আধুনিক হাল ফ্যাসানের মেঝে না হইলে হয়? অতএব হুকুম। চলো মার্বেল-টাইল যারা বেঁচে তাগো দোকানে। হ্যায় আগেই কনট্রাকটার ঠিক কইরা রাখছিল। আমি যতই কই সবইতো ঠিক আছে তাইলে আমার গিয়া কামটা কি? বৃষ্টি আইতাছে দেইখা আমি কই।
না আমারে যাইতেই হইবো। ভিজ্যা ভিজ্যা দোকানে গিয়া আসল কামডা বোঝলাম। আপনারা বুঝছেন?
বোঝেন নাই? টাকা দেওন লাগবো তাই আমারে সাধাসাধি। প্রেষ্টিজ পাঙ্কচার হয় দেইখা গেলাম ব্যাঙ্কের ATM কাউন্টারে টাকা তুলতে (ভাগ্যিস ATM কার্ডটা পকেটে লইছিলাম)। ATM কাউন্টারে গিয়া যতই কার্ড ঢুকাই কার্ড ফেরত আসে, টাকা আর আসে না। মাইয়া পিছনে খাড়াইয়া ছিল, কইলো টাকা নাই। পাবলিকে তামাম টাকা তুইলা লইছে নাইলে ব্যাঙ্কবালারা টাকা ভরতে ভুইলা গেছেগা। আমি কইলাম কি করি? মাইয়া কইলো অন্য কোনো ATM কাউন্টারে গিয়া টাকা তুইলা কাইল সকালে দিও। এখন ছাড়ান দেও। দিলাম। এই কামডা কাইল সকালের লেইগা রাইখা দিলাম।
কিন্তু বিকালবেলায় আমার কপালে কি আছিল তা আগাম টের পাই নাই। ভাত ঘুমটা ভাঙ্গো ভাঙ্গো, এককাপ উষ্ণায়িত চায়ের (দার্জিলিংয়ের পিওর লোপচু ) কাপ লইয়া মা বেটি আমারে সাধাসাধি কইরা কইল চল ঘুইরা আসি। কোথায় যামু কেন যামু তখন টের পাই নাই। ভাবলাম ঘুইরাইতো আইমু আর আমিতো পিছন পিছন যামু আমার আর কি?
মায়-বেটিতে প্রথমেই একখান টিভি'র দোকানে গিয়া এই টিভি হেই টিভি'র দাম-দস্তুর করে। আমারে কিছু কয়না। অনেকক্ষন পর আমারে কইলো এই টিভি'খান কেমন হইবো। আমার নিজেরে কেমন যেন এক্সপার্ট এক্সপার্ট মনে হইতেছিল। আমি কইলাম বা ভাল টিভি'তো। মতামত দিতেতো পয়সা লাগেনা।
লইলে এইখানই লও। টাকাতো আর আমারে দিতে হইতেছে না। দোকানদাররে ফ্লাটের ঠিকানা দিয়া কইলো, কাইল সকালেই টিভি'খান ডেলিভারি দিয়েন।
হেই দোকান থেইকা বাইর হইয়া, মা-বেটির পিছন পিছন যাইতাছি। দেখি আরেকখান বড় দোকানে গিয়া হেই দোকানে যে টিভিখান দেইখা আইছে সেই একইরকাম টিভি'র দাম-দস্তুর করতাছে। আমি ভাবি এরা করে কি? কইলাম করো কি? আমারে থামাইয়া দিয়া পন্ডিতে কইলো হেই টিভি আর এই টিভিখান একই কিনা দেইখা দেও। কইলাম একইতো লাগে। (নিজেরে এক্সপার্ট এক্সপার্ট লাগে)। মাইয়া কইলো তোমার হাজার খান টাকা বাঁইচা গেলো। আমার হাজার টাকা!! মানে বুঝিনা।
দোকানদারের কথায় আমার সম্বিত ফেরে। ছ্যার, কার্ডে না ক্যাশে পেমেন্ট করবেন? আমার কাছে বেবাক জলবত তরল হইয়া গেলো।
কইলাম কার্ডে পেমেন্ট করলে কত পার্সেন্ট কাইটা লইবেন। দোকানদারে কইলো টু পার্সেন্ট ছ্যার। অন্য দোকানে আড়াই পার্সেন্ট ছ্যার।
আমি কইলাম ক্যাশে পেমেন্ট করুম। মাইয়ারে কইলাম চলো, ATM থেইকা টাকা তুইলা লইয়া আসি। ATM থেইকা টাকা তুইলা আইয়া দেখি পন্ডিতে নাই। দোকানদার কইলো ছ্যার আমরা ম্যাডামরে টিভি ডেলিভারী দিয়া দিছি। আমাগো লোক সব ঠিক কইরা দিবো। আপনে ভাইবেননা। আমাগো আফটার সেল সার্ভিসের তুলনা পাইবেন না।
আমি মাইয়ারে কইলাম, হেই দোকানদার যদি কাইল সকালে আরেকখান টিভি ডেলিভারী দিয়া দেয়?
মাইয়া আমার ম্সার্ট হইয়া কইলো হেইডা তোমারে ভাবতে হইবোনা। হেই দোকানদাররে আমি আইজই কমু যে আমাগো পার্সোনাল প্রব্লেমের জন্য এখন আমগো টিভি কেনা হইবোনা।
আমি মনে মনে কইলাম, ক্যাশে পেমেন্ট কইরা আমি টু পার্সেন্টতো বাঁচাইলাম! কাইল সকালে আবার কেবলআলারা আইয়া কি কয় দেখা যাইবোখন।
আইজ ষষ্টী, সবাইরে শুভেচ্ছা জানাইলাম।
সকালে পাড়ার পূজা দেইখা, দুপুরে বাংলাদেশের আসলি ইলিশ শইর্ষাবাটা দিয়া সরু চালের ভাত। ভাতঘুম। সইন্ধ্যা থেইকা মাইঝ রাত পর্যন্ত্য কইলকাতার বিখ্যাত বিখ্যাত কয়েকটা পূজা দেইখা "ডমিনো"র পিৎজা দিয়া আইজকার মতো শেষ।
আজ মহাসপ্তমী। সপ্তমীর শুভেচ্ছা।
আইজ দুপুরে খাওনের আইটেম ভালো ছিলো না।কাৎলা মাছের কালিয়া আর কাঁকড়ার ঝোল। ভাত ঘুমও ভাল হয় নাই। সন্ধ্যা লাগতে লাগতেই মাইয়ার তাড়ায় প্রতিমা দেখতে বাইরায়া গেলাম। কয়েকখান নামকরা প্রতিমা দেখলাম। মন ভইরা গেল। কইলকাতায় যত পূজা হয় সবগুলান দেখতে গেলে পূজার চাইর দিনে হইবো না - কম কইরা একমাসতো লাগবই। পায়ের অবস্থা খুব একটা ভাল ঠেকেনা কিছুদুর বাসে, কিছুদুর রিক্সায় কইরা (ভীড়ের জন্য ট্যাক্সি যাইবার চায় না) তাড়াতাড়ি বাড়ী আইলাম। (ভাইবেননা আবার নতুন জুতা পইড়া পায়ে ফোস্কা পরছে। আসলে বছর কয়েক আগে বাইকে আ্যক্সিডেন্ট কইরা ডান পা খানা তিন টুকরা হইছিল। ডাক্তারেরা পায়ের ভিতর একখান ষ্টীলের রড ঢুকাইয়া পা খানরে সামাল দিছিল। সেই পা খান মাঝে মাঝে জানান দেয়।) কইলকাতার বিখ্যাত "জাইকা"-র মাটন আর চিকেন বিরিয়ানি দিয়া আইজকার রাত এখানেই শেষ করলাম।
আজ মহা-অষ্টমী। আজকের পূজা হইল আসল পূজা।
আজ পাড়ার পূজায় মহাভোজ। এইডা কইলকাতার কালচার। পাড়ার সব বাড়ীতে আজ অরন্ধন। পাড়ার সবাই মিললা একসাথে পাড়ার পূজায় মহাভোজে সামিল হইবো। এক পংক্তিতে বইয়া খাইব। হিন্দু মুসলমান খ্রীষ্টান বড়লোক গরীবলোক বইলা কিছু নাই। সবাইরে একসাথে বইয়া খাইতে হইবো। এইবারকার মেনু আছিল পোলাউ সঙ্গে রাধাবল্লরী, কাজু কিসমিস দিয়া ছোলার ডাইল, পনির, মিক্সড ফ্রুট চাটনী, পাপড় ভাজা, মতিচুর শেষে আইসক্রীম। জম্পেস কইরা খাইয়া দুপুরে গা গড়াগড়ি।
সন্ধ্যায় আইজ গেছিলাম দক্ষিণের প্রতিমা দেখতে। একমাইল লম্বা লাইনে খাড়াইয়া শেষে দেখি পিচ্চির আঁকা ছবি দিয়া মন্ডপ সাজাইছে। মন্দ না হইলেও আমার ভাল লাগেনাই। লাইনে খাড়াইয়া মানুষের ঢল দেখাটাই সার। আরেকখানে লম্বা লাইনের পিছে খাড়াইয়া মনে মনে কই এইখানে হ্য়তো ঠকুম না। কিন্তু এইখানেও দেখলাম ম্যাক্সি আড়ম্ভরে মিনি পূজা। আসলে বড়লোকগো পূজায় প্রচুর টাকা খরচ কইরা পর্বতের মুসিক প্রসব। কইলকাতায় এত মানুষ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায়না। মানুষ দেখুম না পূজা মণ্ডপ দেখুম না পূজার "থিম" দেখুম ভাইবা কূল কিনারা পাইনা। আইজকাল কইলকাতায় সাবেক প্রতিমা হয়না, হয় থিমের প্রতিমা। হেই প্রতিমার আগা মাথা পাইবেন না। কোনো প্রতিমা আকাশে ভাইসা আছে তো কোনো প্রতিমা চাতালে খাড়াইয়া রইছে। কোনো প্রতিমা আফ্রিকান সাফারী ষ্টাইলে তো কোনো প্রতিমা অজন্তা-ইলোরা গুহা চিত্রে। কি যে থিম, বুইঝা পাইনা। কাউরে জিগাইলে কয়, দেইখা যান কাউরে কিছু জিগাইয়েন না, কেউ কিছু কইতে পারবোনা। কাঠের প্রতিমাও আছে আবার মাটির প্রতিমাও আছে। একখান দুগ্গা ঠাকুর ছাওল-পাওল লইয়া নৌকায় ভাইসা রইছে। (জিগাইলে কয় নৌকা না, মায়ের ত্রিনয়ন) কিয়ের প্রতিমা নাই। চুড়ি ভাঙ্গা আর কাঁচ ভাঙ্গা দিয়া বানানো প্রতিমার বিজ্ঞাপন দেখছি। দেশলাই কাঠির প্রতিমাও নাকি আছে (আসল কাঠির না, পোড়া কাঠির) দেখতে যাইতে পারি নাই, দুরে কিনা! আবার সাবেক ভাব-গম্ভীর পূজাও আছে, হেইগুলাম হইলো সাবেক জমিদারগো বাড়ীর। জমিদারী নাই, কিন্তু পূজার ঠাট-বাট আছে। আর আছে টিভি'র চ্যানেলগুলার দাপাদাপি। পাড়ায় নেড়ি কুত্তা মরলেও চ্যানেলগুলা লাইভ দেখাইয়া কয় কত পরে পৌরসভা আইছে আর টিভি-আলারা কত আগে আইছে। এই টিভি-আলাগো বাড়াবাড়িতে মণ্ডপে মণ্ডপে এত ভীড়ের বারবারন্ত। যাউকাগা মরুকগা, আমাগো কি!
আমি আর মাইয়া হাইটা হাইটা আইতাছি, দেখি পন্ডিতে বহুদুরে খোড়াইয়া খোড়াইয়া আইতেছে। নতুন জুতার নতুন ফোস্কা। ব্যান্ড-এইড লাগাইয়া অটো কইরা আইসা "সিরাজ"-এ গিয়া লাইন দিলাম। কিছু নাই।
"বাদশা"-র মাটন বিরিয়ানি লইয়া বাড়ী আইলাম। আপনাগো শুভরাত্রী। ভাল থাইকেন।
আইজ মহানবমী। আইজ নিশীথে মা বাপের বাড়ী চইলা যাইব। কাইল বিসর্জন।
বাঙালীগো পূজা এইবারের মতো শেষ। সামনের বছর আবার হইবো।
বেবাক বাঙালীগো মন খারাপ খারাপ ভাব। পোলাপানগো মন খারাপ। আবার বাপ-মায়ে পড়তে বসতে কইবো। স্কুল খুইলা গেলেইতো পরীক্ষা। পূজার কয়দিনের বাঁধন হারা আনন্দের দিনগুলান শেষ।
আমাগো ছোটোবেলায়ও এই একই রকম ব্যাপার স্যাপার আছিল। স্কুল খুইলা গেলেই বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হইতো। আপনাগোও হইতো। তখন পড়তে বইতাম ঠিকই, কয়দিন পড়তে মন চাইতো না। দুগ্গা ঠাকুররে মনে মনে কইতাম এর পরেরবার আইলে তুমি "মা" একমাস না হউক দশ দিনতো থাকবাই।
পাড়ার মণ্ডপ থেইকা ঘুইরা আইলাম। দেখলাম ঢাকির বোল পাল্টাইয়া গেছেগা। "ঠাকুর তুমি থাকবা কতক্ষন, ঠাকুর তুমি যাবা বিসর্জন"। কাঁসির "টাই না না টাই না না" বদলাইয়া হইছে "হ" "হ"। বিচিত্র এই ঢাক কাঁসির যুগলবন্দি।
আপনাগো শুভরাত্রি।
আইজ বিজয়া দশমী। মণ্ডপ খালি কইরা "মা" তার পোলাপান লইয়া কৈলাসে চইলা যাইব। বাঙালী "মা"-রে বিদায় জানাইবো আর মনে মনে কইবো "আবার আইসো মা"।
আপনাগো বিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাইয়া পূজাবকাসের ডায়েরী শেষ করলাম। খবর লইয়েন। ভাল থাইকেন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:২৭