somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গরিব মানুষ ও মধ্যবিত্ত

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গরিব মানুষ বলতে আমি বস্তিবাসীদের বুঝাচ্ছি | এদের নিয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জল্পনার শেষ নেই | এরা নাকি সর্বহারা | এদেরকে ধনিলোকেরা নাকি শোষণ করে ছিবড়ে করে ফেলেছে | এদের এইবার রাজত্ব এসেছে | এখন এরা নাকি শোষণের বদলা নেবে : ইত্যাদি হাবিজাবি প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রচার |

কিন্তু বাস্তব সত্যটা কি ? সত্যটা অতি ভয়াবহ | তা হলো এইসব গরিব মানুষের দল মোটেই ধোয়া তুলসীপাতা নয় | এরা হলো অত্যন্ত চতুর আর ধূর্ত বদমাশ | এদের দুটো বড় ভাগে ভাগ করা যায় : নারী আর পুরুষ | নারীরা আপনার আমার বাড়িতে ঝিয়ের অথবা আয়ার কাজ করে | পুরুষেরা রিক্সা, ট্যাক্সি, বাস, অটো ইত্যাদি চালায়, ইলেকট্রিক, কলের মিস্ত্রির কাজ করে, বাজারে সবজি ইত্যাদি বিক্রি করে ইত্যাদি | দুইটি ভাগই সমান বদমায়েশ | এরা যে কাজই করুক না কেন তাতেই লোক ঠকায় | যদি কারো দোকানে কাজ করে বা রাজমিস্ত্রির যোগাড়ের কাজ করে তবে মালিকের জিনিসপত্র চুরি করে, টাকা মেরে দেয় | বাজারের সবজি ইত্যাদি বিক্রির সময় ওজনে ঠকানো, তুতের জল দিয়ে সব্জিপাতি রঙিন করে লোক ঠকানো ( পড়ুন বড়লোকের স্বাস্থ্যের বারোটা বাজানো ), হিসাবে বেশি টাকা মেরে দেয়া ইত্যাদি কাজ তো হামেশাই করে | মিস্ত্রির কাজ যখন করে তখন একটা সমস্যার সমাধান করতে এসে দশটা সমস্যা তৈরী করে যায় | যাতে করে আবার ডাকতে হয় | চোরাই , দুনম্বরী মেশিনপত্র দিয়ে বাবুদের ঠকায় | যখন রিক্সা, ট্যাক্সি, অটো ইত্যাদি চালায় তখন ভাড়ার কোনো মা বাপ থাকে না | আজ দশ টাকায় যেটুকু যাবে কাল বিশ টাকায় সেটুকু যাবে | যখন ওনাদের মর্জি হবে তখন যাত্রী নেবে | সামান্য কারণে ধর্মঘট তৈরী করে শহরের অবস্থা অচল করে দিতে এদের জুড়ি মেলা ভার |

এত গেল পুরুষদের কথা | আসুন মেয়েদের দিকে একবার তাকাই | এরা মূলত ঝিয়ের আর আয়ার কাজ করে | বাবুদের বাড়ির জিনিসপত্রের ক্ষতি করতে এদের জুড়ি মেলা ভার | এদের একটা প্রবাদবাক্য আছে : বাবুদের কিছু বাঁচাতে নেই | এই প্রবাদবাক্য মেনে এরা হয় জিনিস চুরি করে নয়তো তা ভেঙ্গে ফেলে | আমার নিজের ঝিই কত বাসনপত্র ভেঙ্গেছে আর চুরি করেছে তার ইয়ত্তা নেই | এছাড়া কম কাজ করে বেশি বেতন নেয়া, কাজ দায়সারা ভাবে করা, ফাঁকি দেয়া, কাজ করতে এসে মোবাইল ফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা প্রেমালাপ করাটা নাহয় বাদ দিলাম | আর মাইনে নেয়া ? তার বেলায় ক্লাব- গুন্ডা-পার্টি আছে না ? তাদের ভয় দেখিয়ে বেশি বেশি মাইনে নেয়াটা খুবই সহজ |

এখন এদের একটা নতুন বাই চড়েছে | সেটা হলো আমরাও বাবুদের সমান হব | বাবুদের ছেলেরা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে তো আমাদের ছেলেপিলেরাও পড়বে | এই করতে গিয়ে এদের খরচ বেড়ে যায় | ফলে এরা মাইনেও বাড়ায় | কাজ কম কিন্তু মাইনে বেশি | না দিলে হবে না | বাবুদের এত আছে , আমাদেরও থাকবে | এর জন্য আসছে চুরি করে বাবুদের জিনিস হাতিয়ে নেয়ার ইচ্ছা | প্রটেকশনও পাচ্ছে | স্থানীয় রাজনৈতিক দল , ক্লাব-থানা ইত্যাদি এদের পক্ষে দাড়িয়ে ধনীদেরকে আপোষ করে নিতে বলছে | ফলে অন্যায় একতরফা হয়েই চলেছে | কিছুই কারো বলার নেই | ব্যতিক্রম দু একজন যে নেই তা নয় , কিন্তু তারা খুবই বিরল এবং ব্যতিক্রমই |

সেইজন্য আমার মনে হয় আমাদের মধ্যবিত্তদের গরিব মানুষদের ব্যাপারে ভাবার দরকার নেই | তাদের ব্যাপারে ভাববার জন্য বহুলোক আছে | তারা নিজেরাও কম যায় না | তারা মোটেই সর্বহারা নয় | তারা অসৎ পথে প্রচুর আয় করে | তাদের জন্য আমরা কেন ভেবে মরব ? আমরা কেন আহা উহু করব ? আমরা কেন দয়া করব ? তারা আর দয়ার পাত্র নয় | তারা প্রকৃতপক্ষে ঘৃণার পাত্র | আমরা তাদের নিয়ে কোনভাবেই ভাবব না | আমাদের মধ্যবিত্তদের দেখার কেউ নেই |আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় জীব | কোনো রাজনৈতিক দল মধ্যবিত্তদের নিয়ে ভাবে না | তাদের যত চিন্তা ওই ধনী আর গরিবদের নিয়ে | গরিবদের বিপিএল কার্ড করে দিয়েছে তাতে তারা দুটাকা কিলোদরে ফাইন চাল পায় যেটা আমাদের ছেচল্লিশ টাকা থেকে পচাত্তর টাকা কিলোদরে বাজার থেকে কিনতে হয় | ধনীদের জন্য কর ছাড় আছে | কিছু নেই শুধু আমাদের মানে মধ্যবিত্তদের জন্য |

গরিবদের অবস্থাটা দেখুন : অসৎ পথে চুরি ডাকাতি করে প্রচুর আয় ( খেয়াল করে দেখবেন অধিকাংশ সময়েই ডাকাতেরা জানে বাড়ির কোথায় টাকাপয়সার মত জিনিস আছে | বাড়ির ঝি-আয়াদের সাহায্য ছাড়া কি করে জানতে পারবে ?) আবার বিপিএল কার্ডের সুবিধার দরুন স্বল্প ব্যয় | কত সুন্দর আর্থিক অবস্থা | আর ছেঁড়া জামা গায়ে আমাদের সামনে ঘুরে বেড়ায় তাই আমরা ভাবি বুঝি তারা খুব গরিব | আমাদের সামনে অবশ্য বানিয়ে বানিয়ে দুঃখের কাহিনী শোনায় বদমায়েশগুলো | আমরা তো আর দেখতে যাচ্ছি না | অধিকাংশেরই ভোটার কার্ড জাল, আধার কার্ড জাল | প্যান কার্ড নেই বললেই চলে | জাল ভোটার কার্ড দেখিয়ে এই দেশের নাগরিক সুবিধা খুব ভালই পায় এই তথাকথিত গরিবগুলি | বেশির ভাগই, পশ্চিমবাংলার ক্ষেত্রে, বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা অনুপ্রবেশকারী | এখানে নেতাদের শেল্টারে আরামসে থাকে | কোনো রকম ঝামেলা হলেই নেতারা পাশে দাড়ায় | পুজোর বোনাস চাই আর সেটা হলো একমাসের মাইনে | না পেলেই কাজ ছেড়ে দেবার হুমকি | ক্লাবের হুমকি | কখনো তো কাজ ছেড়েই পালায় হারামীগুলো | অথচ কত বৃদ্ধ অথর্ব মানুষ এদের উপর নির্ভর করে | তাদের জন্য এদের কোনো দয়ামায়া নেই |

মধ্যবিত্তদের কি হলো ? কেন তারা রাজনৈতিক নেতাদের বিরাগভাজন তথা উপেক্ষার পাত্র হলো ? এই গরিব মানুষগুলোই বা কেন নেতাদের এত আদরের পাত্র হলো ? এই লেখায় এসব বিশ্লেষণ করা দরকার |

মধ্যবিত্তরা বেশিরভাগই বুদ্ধিজীবী ডাক্তার, উকিল, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক ইত্যাদি | সোজা বাংলায় প্রফেশনাল |নেতাদের কোনো কাজেরই নয় | গদি দখলে কোনো কাজেই আসে না |গদি দখলে কাজে আসে পেশিশক্তি আর অর্থশক্তি | অন্যদিকে গরিবরা হলো গুন্ডা, মাস্তান, তোলাবাজ, খুনে, ধর্ষক, জংলি আর অসভ্য | বেশিরভাগই তো গ্রামবাসী কিনা | শহরটাকেও ওরা গ্রাম মনে করে | এরাই গুন্ডামী করে নেতার আধিপত্য বজায় রাখে আর ছাপ্পা ভোট মেরে নেতাকে জেতায়, মিটিং মিছিলে দল ভারী করে | নেতারা কেন এদের দেখবে না ? ধনীদের টাকা ভোট কাম্পেনের জন্য দরকার | তাদেরকেও নেতাদের দেখতে হয় | মাঝখান থেকে মার খায় শ্রীমান মধ্যবিত্ত |

সুতরাং বাঁচতে গেলে মধ্যবিত্তকেও বদলাতে হবে | তাকে ক্যারিয়ারিস্ট হতে হবে | নিজের ক্যারিয়ার দেখতে হবে |একমাত্র ক্যারিয়ারই মধ্যবিত্তকে বাঁচাতে পারে | তবে কোথায় কতটা ঝুকতে হবে তাকে তা ক্যালকুলেশন করে দেখতে হবে | সততা মধ্যবিত্তের মূলধন কারণ সততাই ক্যারিয়ার বানায় | মধ্যবিত্তের দুজন সহায় আছে : তার বুদ্ধি আর ঈশ্বর | এছাড়া তাদের আর কেউই সহায় নেই |
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×