somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘জ্ঞান: কী? কেন? কীভাবে?’ (৮ম কিস্তি)

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অজানাকে জানার আগ্রহ মানুষের চিরাচরিত। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ’নাসা’ (National Aeronautics and Space Administration সংক্ষেপে NASA) কোটি কোটি টাকা খরচ করছে শুধুমাত্র মহাকাশের অজানা রহস্যের উন্মোচনে। আমরা দেখি সাধারণ মানুষরাও কোন অজানা বা নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আগ্রহী হয়ে থাকে। সাধারণ একটি শিশুও জানার চেষ্টা করে কে তার মাতা কে তার পিতা। অথচ মানুষ একটু গভীরভাবে জানার চেষ্টা করে না যে যিনি (মহান আল্লাহ) তাকে এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তিনি কে? কেন তিনি পাঠিয়েছেন? কী তাঁর উদ্দেশ্য? মহান আল্লাহ বলছেন,
”প্রজ্ঞাসম্পন্ন (অর্থাৎ জ্ঞানী) লোকেরাই কেবল শিক্ষা (বা উপদেশ) গ্রহণ করে থাকে” [সুরা আল ইমরান, আয়াত: ৭; সুরা আয-যুমার, আয়াত: ৯]।
’প্রজ্ঞাসম্পন্ন লোকদের’ কথা আল কোরআনে বহু আয়াতে নানাভাবে এসেছে। তাই যারা আল্লাহকে জানে আর যারা জানে না তারা কখনো এক সমান হতে পারে না। আল্লাহকে জানার জ্ঞানটি কী? আমরা অনেকে মনে করি যারা আরবী ধারায় শিক্ষিত তারাই আল্লাহকে জানে বাকিরা তাদের মুখাপেক্ষী। আরবী ধারায় শিক্ষিত হলেই যে আল্লাহকে জানার জ্ঞান অর্জন হয়ে যাবে এ আমি মনে করি না। আমরা আরো মনে করি আরবী বিদ্যায়তন থেকে কামিল সনদ জোগাড় করতে পারলেই আমি ’আলেম’। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ (MBA-Masters of Business Administration) সনদধারী যেমন হিসাববিজ্ঞানের আলেম বা জ্ঞানী তেমনি আরবী বিদ্যায়তনের কামিল সনদধারী উচ্চতর ইসলামী বিষয়ের আলেম বা জ্ঞানী। উভয়ের মাঝে পার্থক্য শুধু এতটুকুই। অথচ ব্যাপক অর্থে আলেম মানে জ্ঞানী। তবে কোন প্রকারের প্রজ্ঞাসম্পন্ন বা জ্ঞানী লোকেরা শিক্ষা বা উপদেশ গ্রহণ করে থাকে? আল্লাহ নিজেই বলছেন,
”নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী” [সুরা বাক্বারা, আয়াত: ১১৫]।
আয়াতটিও আল কোরআনে বহু আয়াতে নানাভাবে এসেছে। সুতরাং আলেম বা জ্ঞানী তিনিই যিনি আল্লাহর জ্ঞানে জ্ঞানী, আল্লাহর গুণে গুণান্বিত।
”তিনি হেকমত (তথা প্রজ্ঞা) দান করেন যাকে তিনি ইচ্ছা করেন” [সুরা বাক্বারা, আয়াত: ২৬৯],
”তিনি স্বীয় অনুগ্রহ (তথা হেদায়েতের) জন্য যাকে ইচ্ছা বিশেষ ভাবে বেছে নেন” [সুরা আল ইমরান, আয়াত: ৭৪]।
এবং এ বিশেষ ভাবে বাছাইকৃত লোকেরাই আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞানে জ্ঞানী বা আলেম আর তাঁরাই কেবল শিক্ষা (বা উপদেশ) গ্রহণ করে থাকে। এ শিক্ষা বা উপদেশ মানুষদের মাঝে বিলিয়ে দিতে তাঁরা কোন প্রকার বিনিময় কামনা করেন না। সুতরাং ’বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ’ কিংবা ’আলেমে দ্বীন’ পদবী হিসেবে লেখার আগে একটু চিন্তা করে নিলে ভালো হয় বৈকি। আমরা ছোটদের বাংলা বর্ণমালা ’আ’ শেখাতে গিয়ে বলি ’আমটি আমি খাবো পেড়ে’। আমের ছবিও সে বইয়ে দেখে। কিন্তু ’আম’ যে একটি রসালো সুস্বাদু ফল তা সে যতদিন না খাবে ততদিন কস্মিনকালেও তাকে আমের মজা বুঝানো যাবে না যতই ভালোভাবে পড়ানো হোক না কেন। তদ্রুপ আল্লাহ আছেন, তিনি নিরাকার, তিনি অসীম, বিশাল এক আসন (কুরসি) নিয়ে তিনি বসে আছেন ইত্যাদি যতই পড়ান, যতই বুঝান আল্লাহকে জানার জ্ঞান অর্জিত হবে না। কারণ বই-পুস্তক (এবং বক্তৃতা-বিবৃতি কিংবা হালের ’লেকচার’) আপনাকে শুধু ধারণা দেবে কিন্তু বাস্তব উপলব্ধি দেবে না (’ধারণা দেবে’ কথাটিকে দয়া করে হালকা ভাবে নেবেন না। শরিয়ত বলছে ঈমান আনো, নামায পড়, রোযা রাখ ইত্যাদি। আমি প্রশ্ন করব, নামায কেন পড়ব? শরিয়ত বলবে, মহান আল্লাহ নামায প্রতিষ্ঠিত অর্থাৎ কায়েম করতে বলেছেন। ভাল কথা। কিন্তু আল্লাহ কেন নামায প্রতিষ্ঠিত করতে বলেছেন? এর রহস্য কী? নামায আমি কেন পড়ছি? পড়ে আমার কী হচ্ছে? চৌদ্দ পুরুষ পড়ে এসেছেন তাই আমিও পড়ছি, বায়বীয় কিছু পুণ্য অর্থাৎ সওয়াব পাচ্ছি, তারপর? কিংবা মহান আল্লাহ নামায প্রতিষ্ঠিত করতে বলার পরও অধিকাংশ মানুষ নামায পড়ে না। কেন? কে নামাযে বাধা দেয়? কিংবা মহান আল্লাহর জন্য নামায শুরু করি, পুরো নামাযে আমার অন্তর থাকার কথা আল্লাহর কাছে অথচ থাকে পৃথিবীতে। কেন? ভেবেছি কখনো?)। এখন বাস্তব উপলব্ধি অর্থাৎ অনুভূতি জিনিসটি কী? বিষয়টি অন্তরের চোখের জ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত তাই এ বিষয়ে আমি পরে আসছি (’কীভাবে অথবা কী পদ্ধতিতে এ জ্ঞান অর্জন করা যায়’ অধ্যায়ে বিস্তারিত থাকবে) কারণ আগে আমাকে বুঝতে হবে জ্ঞান কী।

জ্ঞান সম্বন্ধে সম্যক ধারণা পেতে আমাদের যেতে হবে সেই শুরুর কালে যখন কিছুই ছিল না শুধু মহান আল্লাহর পবিত্র সত্তা ব্যতীত। জ্ঞানের আকর একমাত্র মহান আল্লাহ। আল কোরআনেই তিনি বলছেন,
”এবং তিনি (আল্লাহ) প্রত্যেকটি জিনিসের সাথে মহাজ্ঞানী” [সুরা বাক্বারা, আয়াত: ২৯],
”নিশ্চয়ই আপনি একমাত্র জ্ঞানী, একমাত্র কুশলী” [সুরা বাক্বারা, আয়াত: ৩২],
”আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন সব কিছুর (একক) স্রষ্টা এবং তিনিই সমস্ত কিছুর কর্ম বিধায়ক” [সুরা আয-যুমার, আয়াত: ৬২]।
ইমরান ইবনে হুসায়ন (রা.) বর্ণিত হাদীসে আছে, ”আল্লাহ ছিলেন, তাঁর আগে কিছুই ছিল না, তখন তাঁর আরশ ছিল পানির উপর। আর স্মারকলিপিতে সবকিছু লিপিবদ্ধ করে পরে তিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেন” [আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া-১ম খণ্ড (পৃ.৫০-৫১), মূল: আবুল ফিদা হাফিজ ইবনে কাসীর আদ-দামেশকী (রহ.), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ঢাকা]।
বুঝা গেল জ্ঞানের স্রষ্টা মহান আল্লাহ, তিনিই সমস্ত কিছুর জ্ঞান সৃষ্টি করেছেন যা কেউ জানত না। এ মহাজগৎ এবং পৃথিবীর এমন কোন কিছু নেই যা তাঁর জ্ঞানের আওতায় নেই। তাঁর জ্ঞানের ব্যাপ্তি এত বিশাল যে মানুষের পক্ষে তা কল্পনা করাও সম্ভব নয়। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাযযালী (রহ.) তাঁর এহইয়াউ উলুমিদ্দীন গ্রন্থে লিখেছেন, দু’কারণে কোন বস্তুকে হৃদয়ঙ্গম করতে মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধি অক্ষম – ১. সেই বস্তুর সত্তাগতভাবে অপ্রকাশ্য ও সূক্ষ্ম হওয়া এবং ২. বস্তুর সীমাতিরিক্ত দৃশ্যমান ও প্রকট হওয়া। মহান আল্লাহ স্থান, পার্শ্ব, দিক ও আকার থেকে মুক্ত তাই তিনি অপ্রকাশ্য ও সূক্ষ্ণ। আমাদের চোখে যখন অনেক আলোর ঝলকানি পড়ে তখন চোখ ধাঁধিয়ে যায়, আমরা কিছু দেখতে পারি না। যেমন, বাদুড় দিনের আলোতে দেখতে পায় না তার মানে এই নয় যে দিন রাতের তুলনায় অস্পষ্ট। বরঞ্চ দিন এত বেশি স্পষ্ট যে বাদুড়ের দুর্বল দৃষ্টিশক্তি দিনে দেখতে অক্ষম। মহান আল্লাহর বিকাশে রয়েছে অসাধারণ দ্যুতি আর আমাদের জ্ঞানে (-’র দৃষ্টিশক্তিতে) রয়েছে সীমাহীন দুর্বলতা যার কারণে তিনি আমাদের দৃষ্টির অন্তরালে থেকে গেছেন। আবার কোন বস্তুর বিকাশ ঘটে তার বিপরীত বস্তুর দ্বারা। যেমন, অন্ধকার আছে বলে আমরা আলোর অস্তিত্ব বুঝতে পারি। কিন্তু মহান আল্লাহর অস্তিত্ব এত ব্যাপক ও বিস্তৃত যে, তাঁর কোন বিপরীত নেই। এ কারণেই মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধি তাঁকে যথার্থভাবে উপলব্ধি করতে অক্ষম হয়ে পড়ে এবং তিনি চূড়ান্ত প্রকট হওয়া সত্ত্বেও মানুষের দৃষ্টিতে অস্পষ্ট থেকে যান [এহইয়াউ উলুমিদ্দীন-৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৯২, মূল: হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাযযালী (রহ.), অনুবাদ: মাওলানা মুহিউদ্দিন খান, মদীনা পাবলিকেশান্স, ঢাকা]। নিম্নোক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ এদিকেই ইঙ্গিত করেছেন,
”অতঃপর (তোমার) দৃষ্টি ফেরাও (নভোমন্ডলের প্রতি), দেখো, আরেকবারও তোমার দৃষ্টি ফেরাও (দেখবে, তোমার) দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকেই ফিরে আসবে” [সুরা মুল্ক, আয়াত: ৪]।
জ্ঞানের এ বৃহৎ পরিধি হতে আমাদের খুব সামান্যই দেয়া হয়েছে।
”(সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে) তোমাদের যা কিছু জ্ঞান দেয়া হয়েছে তা নিতান্ত কম” [সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত: ৮৫]।
এ সামান্য জ্ঞান নিয়ে কিছু মানুষ বিরামহীন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অজানাকে জানার জন্য। আর অধিকাংশ মানুষ উপার্জনের জ্ঞান অর্জন করে পেট পুরে খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে দিব্যি সুখ নিদ্রায় বিভোর। আল্লাহকে জানার জ্ঞান অর্জনে তাদের সময় কোথায়? অথচ আল্লাহ জ্ঞান সৃষ্টি করেছেন তাঁকে বুঝার জন্য। তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করার জন্য। কত সুন্দর করে মহান আল্লাহ আমাদের প্রশ্ন করছেন,
”হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি সময় হয়নি যে তোমাদের অন্তর ভীত হবে আল্লাহর সংযোগ লাভের জন্য এবং সত্য হতে যা নাযেল হয়েছে তার জন্য?” [সুরা হাদীদ, আয়াত: ১৬]
এখন কেউ হয়ত প্রশ্ন করতে পারে মহান আল্লাহ তো অপ্রকাশ্য ও সূক্ষ্ণ, কীভাবে আমরা তাঁকে বুঝতে পারবো, জানতে পারবো? উত্তরে আমি শুধু এটুকু বলব যে, যাঁর অন্তর্দৃষ্টি তীক্ষ্ণ ও শক্তিশালী একমাত্র সে-ই মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন কিছু দেখে না। তাঁর অন্তরে মহান আল্লাহর অস্তিত্বের উপলব্ধি এত প্রবল যে সে বিশ্বাস করে মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুই বিদ্যমান নেই। এ ধরনের মানুষের উদাহরণ পৃথিবীতে বিরল কিন্তু আছে। আমি শুধুমাত্র তিনজন পুণ্যাত্মার উদাহরণ দেব আমার গোটা লেখায়। তাঁরা হলেন বরখে আসওয়াদ (রহ.), আবু ইয়াজিদ তাইফুর ইবনে ঈসা ইবনে সরুশান আল বিস্তামি যিনি হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রহ.) নামে পরিচিত এবং হোসাইন ইবনে মনসুর আল হাল্লাজ (রহ.)। এখানে আমি বর্ণনা করছি বরখে আসওয়াদ (রহ.) এর কাহিনী যা এহইয়াউ উলুমিদ্দীন গ্রন্থে এসেছে- ”অনুরাগ যখন স্থায়ী, প্রবল ও মজবুত হয়ে যায়, তখন তা মোনাজাতে এক প্রকার সন্তুষ্টি ও খোলাখুলি ভাব সৃষ্টি করে, যা মাঝে মাঝে বাহ্যত মন্দ হয়ে থাকে। কারণ, এতে থাকে দুঃসাহস ও নির্ভীকতা। কিন্তু যে ব্যক্তি অনুরাগের স্তরে অবস্থান করে, তাঁর এই খোলাখুলি ভাব সহ্য করে নেওয়া হয়। আর যে ব্যক্তি এই স্তরে অবস্থান না করে কথায় ও কাজে অনুরাগীদের ন্যায় সাহসিকতা দেখায়, সে ধ্বংস হয়ে যায় এবং কুফরের কাছাকাছি চলে যায়। বরখে আসওয়াদের মোনাজাত এর দৃষ্টান্ত। তাঁর সম্পর্কে হযরত মুসা (আ.) কে আদেশ করা হয় যে বনি ইসরাঈলের নিমিত্ত বৃষ্টির দোয়া করার জন্যে তাঁকে অনুরোধ কর। বরখে আসওয়াদের কাহিনী নিম্নরূপ: বনি ইসরাঈলের দেশে সাত বছর পর্যন্ত অনাবৃষ্টি ও দুর্ভিক্ষ বিরাজ করলে হযরত মুসা (আ.) সত্তরজন লোককে সঙ্গে নিয়ে বৃষ্টির দোয়া করতে বের হন এবং দোয়া করেন। প্রত্যুত্তরে আল্লাহ তায়ালা এই মর্মে ওহী পাঠালেন- যারা গোনাহে আচ্ছন্ন, আন্তরিকভাবে পাপিষ্ঠ, বিশ্বাস ছাড়াই দোয়া করে এবং আমার আযাবকে ভয় করে না, তাদের দোয়া আমি কেমন করে কবুল করব? তুমি আমার এক বান্দার কাছে যাও। যার নাম বরখ। তাকে বল বাইরে এসে বৃষ্টির জন্যে দোয়া করতে, যাতে আমি কবুল করি। হযরত মুসা (আ.) বরখের খোঁজ নিলে কেউ তাঁর সন্ধান দিতে পারল না। একদিন তিনি জনৈক হাবশী গোলামকে পথিমধ্যে দেখতে পেলেন। তাঁর চক্ষুদ্বয়ের মাঝখানে সেজদার ধূলি লেগেছিল এবং গলায় একটি চাদর জড়ানো ছিল। তিনি (হযরত মুসা) খোদা প্রদত্ত নূরের মাধ্যমে তাঁকে চিনলেন এবং নাম জিজ্ঞেস করলেন। সে বলল, আমার নাম বরখ। হযরত মুসা (আ.) বললেন, আমি তো দীর্ঘদিন ধরে তোমাকেই খুঁজছি। আমার সঙ্গে চল এবং বৃষ্টির জন্যে দোয়া কর। বরখ তাঁর সঙ্গে বের হল এবং এভাবে দোয়া করল- ইলাহী, এটা তোমার কাজও নয়, হুকুমও নয়। তোমার কি হল যে, অনাবৃষ্টি সৃষ্টি করে রেখেছ? তোমার নিকটস্থ নদী-নালা শুকিয়ে গেছে কি? না বায়ু তোমার আনুগত্য স্বীকার করছে না? না গোনাহগারদের প্রতি তোমার ক্রোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে? গোনাহগারদের সৃষ্টি করার পূর্বে তুমি ক্ষমাকারী ছিলে না কি? তুমিই তো রহমত সৃষ্টি করেছ এবং অনুগ্রহের আদেশ করছ। এখন কি আমাদেরকে দেখাচ্ছ যে, তোমার কাছ পর্যন্ত কেউ পৌঁছতে পারে না? মোটকথা, সে দোয়ার মধ্যে এমনি ধরনের উচিত-অনুচিত কথাবার্তা বলতে লাগল। অবশেষে বৃষ্টি বর্ষিত হল এবং বনি ইসরাঈল সিক্ত হয়ে গেল। আল্লাহ তায়ালার আদেশে ঘাস গজিয়ে উঠল এবং দ্বিপ্রহর অবধি উরু পর্যন্ত উঁচু হয়ে গেল। এরপর বরখ স্বস্থানে চলে গেল। পরবর্তী সময়ে হযরত মুসা (আ.) এর সাথে সাক্ষাত হলে সে বলল, আমি আমার রবের সঙ্গে কেমন বিবাদ করেছি! তিনি আমার সাথে ইনসাফ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা মুসা (আ.) এর কাছে ওহী পাঠালেন- বরখ আমাকে দিনে তিনবার হাসায়” [এহইয়াউ উলুমিদ্দীন-৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ১১৪, মূল: হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাযযালী (রহ.), অনুবাদ: মাওলানা মুহিউদ্দিন খান, মদীনা পাবলিকেশান্স, ঢাকা]।

[চলবে]
৭ম কিস্তিঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×