somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সালাত (নামায) জাহান্নামেরও চাবি – ৬ষ্ঠ পর্ব

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

”সালাত কায়েম করো সূর্য হেলে পড়া, রাতের আঁধারে আচ্ছাদিত হওয়ার কারণে এবং ফযরের কোরআন-এর জন্য। নিশ্চয়ই ফযরের কোরআন হলো প্রমাণিত” (সূরা বনি ইসরাঈল, আয়াত: ৭৮)।
ধারাবাহিকটির ৫ম পর্বে আমি উপরোক্ত আয়াতটির ব্যাখ্যায় সূর্য বলতে জীবন এবং রাতের আঁধার বলতে মৃত্যুকে বুঝিয়েছিলাম। এ পর্বে চেষ্টা করব আরেকটু উচ্চতর ব্যাখ্যা দেয়ার।
আমাদের জীবনের প্রারম্ভিক পর্বে আমরা সবাই ছিলাম অজ্ঞানতার অন্ধকারে। একটা শিশু মায়ের গর্ভ থেকে শিক্ষিত হয়ে আসে না, তাকে জীবনের ধাপে ধাপে শিক্ষা অর্জন করতে হয়। এবং এ শিক্ষাটা সে নিজে নিজে অর্জন করতে পারে না, কারো না কারো দ্বারস্থ তাকে হতে হয়। এভাবে যখন সে শিক্ষিত হয় তখন তার মধ্যে আর পরমুখাপেক্ষিতা থাকে না। বরঞ্চ সে আরো অনেককে শিক্ষা দিতে পারে। যদি সে শিক্ষিত না হয় তবে তাকে সারাজীবন থাকতে হয় পরনির্ভর।
আয়াতটিতে সূর্যকে যদি আমরা জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করি তবে রাতের আঁধার হবে অজ্ঞানতার অন্ধকার। আমার জ্ঞান সূর্যটি যেন হেলে পড়ে অজ্ঞানতার অন্ধকারে পর্যবসিত না হয় সেজন্য বলা হচ্ছে সালাত কায়েম করতে। একজন শিক্ষক ব্যতীত যেমন জ্ঞানের উন্মেষ ঘটে না ঠিক তেমনি সালাত কায়েম ছাড়া জ্ঞান সূর্যের বিকাশও হবে না। আর জ্ঞান সূর্যের বিকাশ না হলে আপনি অজ্ঞানতার সাগরে হাবুডুবু খেতে থাকবেন বড় বড় ’ডিগ্রী’ (সনদ) থাকা সত্ত্বেও। এ রকম অনেক অজ্ঞানদের আমরা এখন পৃথিবীতে দেখছি ধর্মের আলখেল্লা পরে বিরাট বিরাট বইয়ের জ্ঞান অর্জন করে নতুন নতুন বিধান জারী করতে। এরা শুধু আরবী বর্ণমালা ’আলিফ’, ’বে’, ’তে’, ’ছে’ কে ’আলিফ’, ’বা’, ’তা’, ’ছা’-ই শুধু পড়তে শিখেছে আর কিছুই শিখেনি তাদের অন্ধ উস্তাদদের (শিক্ষক) শেখানো তোতা পাখির মত কিছু বুলি ব্যতীত। এক হাদীসে আছে ”জ্ঞান অর্জন ফরয তথা আবশ্যক”। আবার আরেক হাদীসে আছে, ”সত্য অর্জনের পথে জ্ঞান হল সবচেয়ে বড় দেয়াল বা প্রতিবন্ধক”। বুঝা যাচ্ছে জ্ঞানেরও প্রকারভেদ আছে এবং আমাকে অর্জন করতে হবে সেই জ্ঞান যে জ্ঞান আমাকে সত্য তথা আল্লাহ এবং তাঁর রসূল এবং নিজের পরিচয় দান করবে।
সালাত কায়েম তথা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জ্ঞান সূর্যকে হেলে যেতে না দিয়ে অর্থাৎ জ্ঞানের উন্মেষকে পতনোন্মুখ হতে না দিয়ে ক্রমশ উন্নত করে রাখলে অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর হয়ে ফযরের কোরআন তথা জ্ঞানের প্রভাত প্রাপ্তি হয়। কোরআন নিজেই জ্ঞানের আকর বা সুপ্রভাত। আর কোরআনের উৎস হলেন মহান আল্লাহ। সুতরাং কোরআনের জ্ঞান অর্জন অর্থ হল মহান আল্লাহর পরিচয় লাভ। গিরিশ চন্দ্র সেন বাংলা ভাষায় প্রথম কোরআনের তাফসীর করলেও মহান আল্লাহর পরিচয় লাভ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যদি তিনি সত্যিকার অর্থেই কোরআনের জ্ঞান অর্জন করতেন তবে তিনি মহান আল্লাহর পরিচয়ও লাভ করতেন এবং তখন তিনি তাঁর সনাতনী পৈতাটি আর রাখতে পারতেন না। সুতরাং গিরিশ চন্দ্র সেন জ্ঞান অর্জন করেছেন বটে তবে সেটি কোন জ্ঞান বুঝে নিন। এবার নিজেকে প্রশ্ন করুন তো কোরআন পড়ে পড়ে ইয়া বড় বড় তাফসীর বানালেন, ওয়াজ কিংবা লেকচার দিয়ে দিয়ে অনেক অনৈসলামিককে ইসলামে না ঢুকিয়ে নিজের দলে ঢুকিয়ে মুরিদের/ভক্তের পাল্লা ভারী করলেন, নিজের পকেট ঠিক রাখার জন্য মানুষদের বোকা বানিয়ে ধর্মকে বেঁচে প্রতিষ্ঠা করলেন ’ইসলামি এনজিও’ কিংবা ’ইসলামি দল’, তাবলীগ নাম দিয়ে ’ছোওয়াব’ আর ’ফায়দার’ টোপ বসিয়ে মানুষদের জান্নাতে ঢুকিয়ে (!) নিজের আখের গোছালেন, ’জিহাদের’ জোশ তুলে সরল মানুষদের জংলী বানালেন, আসলেই কি মহান আল্লাহর পরিচয় লাভ করেছেন? কায়েম তথা প্রতিষ্ঠা দূরে থাক এরা জানেই না ’সালাত’ আসলে কী। সুতরাং সালাত যার কায়েম হবে না কোরআনের জ্ঞান প্রাপ্তিও তার হবে না এবং সে মহান আল্লাহর পরিচয়ও পাবে না। তবে সে কীভাবে জান্নাতের আশা করে?

৫ম পর্বঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×