somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেন খালেদা আর মীর কাশেম লবিষ্ঠ ফার্মের সাথে চুক্তি করেছিলেন???

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Click This Link


দৈনিক আমাদের অর্থনীতি
২২.১২.২০১২
আমেরিকায় লবিয়িস্ট নিয়োগ ও সততার সার্টিফিকেট
মোহাম্মদ মুসা * লস এঞ্জেলেস থেকে : বেশ কিছুদিন ধরে দেশের সংবাদপত্রগুলোয় খালেদা জিয়ার পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর বিদেশে পাচার করা টাকা ফেরত আনা নিয়ে দুদক, বিরোধী দলের বড় বড় নেতা ও সরকার পড়্গে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্যান্য নেতার বিভিন্ন বক্তব্য প্রকাশ পাচ্ছে। যদিও খবরটি বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে প্রথম পত্রিকায় বের হয় এবং মাঝে মাঝে কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন আঙ্গিকে শিরোনাম হয়ে আসছে। পুরনো খবরটি আবার গুরুত্ব পাওয়ার কারণ খালেদা জিয়ার অতি সাম্প্রতিক বরিশালের জনসভায় তার পুত্রদ্বয়ের সততা নিয়ে নতুন করে বক্তব্য প্রদান।

খালেদা জিয়া সাম্প্রতিক ভারত সফরে তার ও তার দলের চিরাচরিত ভারতবিরোধী উগ্র মনোভাব থেকে সরে এসে মধ্যপন্থা অবলম্বন ও অন্য আরো কিছু প্রসঙ্গে আমূল পরিবর্তনের যে আভাস পাওয়া যাচ্ছিল, তাতে দেশের আপামর জনসাধারণের মনে কিছুটা আশার উদ্রেক হয়েছিল। সংঘাতময় রাজনীতি থেকে মুক্তি ও বড় বড় কিছু ইস্যুতে বিপরীত মেরুর দুই দলের মধ্যে ঐক্য সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। তবে শুধু নির্দলীয় জনসাধারণ ও তাদের বিরোধীদেরই যে প্রচণ্ড আশাভঙ্গ হয়েছে তারেক ও কোকোর সততা নিয়ে খালেদার বক্তব্যে তাই নয়, অনেক সঙ্গত কারণেই তারেক ও কোকোর ভূমিকা বিতর্কিত। তারা মনে করে পরিবর্তিত বিশ্বে যেখানে দুর্নীতি করাই শুধু নয়, দুর্নীতির ষড়যন্ত্র করাও অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য, যে কারণে বর্তমান সরকারের সার্বিক প্রচেষ্টার পরেও গুটিকয়েক ব্যক্তির দেশ ও দল বিরোধী স্বার্থপর ও অবিবেচক ভূমিকার কারণে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক লোন ঝুলে গেল। ব্যাপারটি যখন এতই সেনসিটিভ, যেখানে তারেক-কোকোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে শক্ত প্রমাণ রয়েছে, এফবিআই তদন্ত করে প্রমাণ করেছে, সিমেন্সের অভিযুক্ত এক্সিকিউটিভ স্বীকার করেছে ২০০৪ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পুত্রকে ঘুষ দেওয়ার কথা (তা শুধু কোকোকে ব্যক্তি আক্রোশে ফাঁসানোর নিয়তে নয়, যদিও বিএনপির বাঘা বাঘা নেতারা হাস্যকর বক্তব্য দিয়ে যাবেন, সিমেন্সের ঘুষের মামলায় সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বহু মানুষের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র তদন্ত করে ঘুষের প্রমাণ পেয়েছে), সেখানে তারেক ও কোকোকে নিষ্পাপ ফেরেস্তা বানিয়ে পুনর্বাসনের চেষ্টা দেশ ও দল হিসেবে বিএনপির জন্য যে ভয়াবহ আত্মঘাতী হবে তা যে কেউ অতি সহজেই অনুমান করতে পারেন। খালেদা ও বিএনপির উচিৎ আবুল হোসেনের পরিণতি বা পতন দেখা। তবে অনেকের কাছে যদি মনে হয় বিএনপি অদূর ভবিষ্যতে ড়্গমতা ফিরে পায়, কিন্তু তারেক কোকো নেতা হয়ে ফিরে না আসতে পারে কিংবা বিএনপির ভবিষ্যৎ কর্ণধার যদি এই ভাই না-ই হতে পারে, তবে বিএনপি দল হিসেবে টিকে থাকা না-থাকা খালেদার কাছে সমান। ভারত সফর শেষে বিএনপির অনুকূলে খালেদা যে বাতাস বয়ে এনেছিলেন, সেটাকে এক ফুৎকারে আবার বিপরীত দিকে ঠেলে দিলেন তারেক ও কোকোকে সততার সার্টিফিকেট দিয়ে। দেশ ও বিদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছে খালেদার এই বক্তব্য মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।

খালেদা জিয়ার বিলাসবহুল জীবন-যাপনের সঙ্গে দেশের মানুষ সম্যক পরিচিত। এটি নিয়ে উচ্চবাচ্য কেউ করতে চায় না বা এটিকে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ মেনে নিয়েছে। তার পুত্রদ্বয়ের বিগত ৪-৫ বছর ধরে উন্নত দেশে জীবন-যাপন ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিশাল খরচের ব্যাপারটি নিয়েও পত্রিকা বা মানুষ বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করে না। এটিকেও মোটামুটি সবাই নীরবে মেনে নিয়েছে। তবে পুত্রস্নেহে অন্ধ হয়ে সততার সার্টিফিকেট প্রদান দেশের আপামর মানুষ মেনে নিতে পারে না। এ ব্যাপারে তারা আপস করতে অপারগ। মজার ব্যাপার হলো খালেদা পুত্রস্নেহে অন্ধ হয়ে যে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেছেন এটি তার তথাকথিত ইমেজের পাশে দৃষ্টিকটুভাবে বেমানান।

আমেরিকার সিনেটের সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্যের উপর নির্ভর করে আমি একটি খবর এখানে তুলে ধরতে চাই, যদিও বিষয়টি কয়েক বছর পুরনো কিন্তু দেশের কোনো খবরের কাগজে তা প্রকাশ পেয়েছে বলে আমার জানা নেই।

ওয়েব সাইটের লিংকটি হলো- htp://www.senate.gov/legislative/Public-Disclosure/LDA-reports.htm


লিংকটি ওপেন হলে- Select Search the Lobbying Database (LD-1, LD-2) সিলেক্ট করে ক্লিক করুন। তারপর client country সিলেক্ট করে submit ক্লিক করুন। সেখানে দেখতে পাবেন মাত্র দু’জন বাংলাদেশি রাজনীতিক এপর্যন্ত আমেরিকায় লবিয়িং ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছেন। তারা তাদের কত টাকা করে দিয়েছেন এর পরিমাণও উলেস্নখ আছে। একজন হলো জামায়াতে ইসলামির যুদ্ধাপরাধের দায়ে গ্রেফতারকৃত মীর কাশেম আলী যিনি ২০১১ সালে ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার দিয়েছেন ঈধংংরফু ধহফ অংংড়পরধঃবং-কে। যুদ্ধাপরাধের বিচারকে বাধাগ্রস্ত ও বিতর্কিত করতে এই ফার্মের কাছে অবৈধ মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে তিনি ডলার পাঠিয়েছিলেন বলে বাংলাদেশের কাগজে এর আগে খবর বের হয়েছিল। আরেকজন রাজনীতিক হলেন খালেদা জিয়া যিনি চরষষংনঁৎু ডরহঃযৎড়ঢ় ঝযধ িচরঃসধহ যিনি ফার্মের সঙ্গে ২০০৭ সালের জুলাই মাসের ১৬ তারিখে চুক্তি করেন এবং আগস্টের ১৪ তারিখে ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার পরিশোধ করেন। এরপর ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখ একই ফার্মকে ২০ হাজার ডলার দেন।

তিনি কী উদ্দেশ্যে লবিয়িস্ট নিয়োগ করেছিলেন এবং এই অর্থের উৎসই বা কী হতে পারে এটা নিয়ে সঙ্গত কারণে তদন্ত হতে পারে। টাকাগুলো কি বৈধভাবে না মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল? আপামর জনসাধারণের মনে সততার সার্টিফিকেট পাওয়া একটি পরিবার ও দেশের অন্যতম বড় একটি দলের নেত্রীর ব্যাপারে এ ধরনের অনেক প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক।
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×