somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

|তিল-গপ্পো| গোসল

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি নোনাধরা পুকুর পাড়ের উচ্ছাসিত গোসল সাজিয়ে রেখেছি নিউরনে নিউরনে। স্মৃতিক্ষয়নির্যাস'র শ্রাদ্ধ করে আমি দিব্যি শৈশব-কৈশোর জাবর কাটি, ভাঁজ করি বাসররাতের শাড়ীর মতো আনমনে। চকচকে বাথটাব আমাদের সরোবর সঙ্গী; আয়তনে বিশাল আমাদের বাথটাব আমাকে কামুক করে তুলে মাঝে মাঝে; ধুলকি চালে নড়তে থাকা পুকুরঘাটের মায়া কামজ বৈকি।

বাড়িটা কিনেছি বছর দেড়েক হয়েছে। আবিদ বাথরুমবিলাসী, একটু খোলাসা করে বলি; গোসল করতে সে সময় নেয় ঘণ্টা দুই প্রায়। এটুকু সময় সে কি করে তা আমার অগোচরে; আমরা যারা আধুনিক মানুষ তারা স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় বিশ্বাস করি- আমাদের সন্দেহজনক মনকে বশে রেখে।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয় বাথরুমবিলাসী আবিদ বাড়িটা কিনেছে এই বিশাল বাথরুমের কারণে, যদি-ও এটা পরীক্ষিত সত্য নয়।
কাল রাতে একটা ভোজন ছিল, আমাদের আধুনিক অভিধানে পার্টি হিসেবে সংরক্ষিত। ফিরলাম রাতে একটায়, আবিদের প্রেমজ-কামজ-আত্নজ মৃদ্যু অত্যাচার নিয়ে ঘুমকে পাশে শোয়ালাম ভোর রাত তিনটায়। আজ ছুটি। সময় নিয়ে গোসল করার ইচ্ছা নিয়ে বাথরুমে ঢুকে দেখি ঠান্ডা-গরম পানির পাইপে অনাঙ্ক্ষিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়েছে, ফলশ্রুতিতে আমার পরকীয়াপ্রেমিকগোসল করতে বিলম্ব হল মিনিট পনের। সবকিছুর স্বাভাবিক বন্দোবস্ত করে নগ্ন শরীরে বাথটাবে নিজেকে প্রবেশ করালাম। নারীরা-ও প্রবেশ করানোর স্বাদ নিতে ভালবাসে! আবিদ অফিসে, মাইরি বলছি, ও কাছে থাকলে হাংলার মতন তাকিয়ে থাকত; দেবীর আশ্রম মানুষের বাথরুমে ঠাঁই নিয়েছে ইদানীংকাল।
কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে আমি নিজেকে আদর করলাম। নিজেকে আদর করা মাঝে মায়া আছে, ঘোরমায়া। আমি তারিয়ে তারিয়ে মায়াবন্ধন পরছি! পুরো বাথটাব পানি পূর্ণ হলে আমি পাঁচ মিনিটের মতো চুপটি শুয়ে থাকলাম, শুধু মাথাটা উপরে উঠানো, সারা শরীর জলের দাসী এখন। মাথাটা পানির নিচে নিয়ে থাকা গেলে ভালতর হতো, মীনজাতির প্রতি আমার ঈর্ষা প্রকাশ পেল- একটা ফুলকা চাই আমার।
আবিদ কাল রাতে তুশার সাথে কি বাড়াবাড়ি করে ফেলেনি? তুশাটা কেমন গেঁয়ো মেয়ে, হাত ধরলেই বুঝি প্রেম হয়ে যায়! মাহাবুব সাহেব তো সেদিন কনিকার শরীরময় দাঁড়িয়েছিলেন- অথচ কনিকা কী মোহময় হাসি দিয়ে সামলে নিল! আবিদের সাথে কি এই ব্যাপারে কথা বলব? বলা উচিত? সামান্য ব্যাপার নয় কি? কিন্তু তুশাটা যেভাবে আবিদের হাত ঝেড়ে ফেলে দিল তা চিন্তা উদ্দেপক বটে।
আমি শরীর পরিষ্কার করার কার্যে নিমগ্ন হলাম। বাঁ স্তনে আবিদের প্রথাগত দাঁতের দাগ এখনো বিদ্যমান! তরলসাবান দিয়ে সমগ্র বাথটাবের পানিকে ফেনা ফেনা করে তুললাম। ফেনাময় বাথটাব, ফেনাময় বাথরুম, ফেনাময় বাড়ি, ফেনাময় জীবন; ধরত গেলে পিছলে যায়, উবে যায়।
গান ছেড়ে দিলে সোনায়-সোহাগা হতো। বাথরুমে গানের বন্দোবস্থ করার কৃতিত্ব আবিদের একার। লুকানো স্পিকারে আমার ধাবমান সংগীত শুনি, আমাদের ধাতস্থ করি!
আমার গোসল শেষ হয়ে এসেছে। বাথটাবের পানি ছেড়ে দিলাম; কল-কল করে পানি নেমে যাচ্ছে, ফেনাময় পানি! না, কলকল করে তো শব্দ হচ্ছে না! পানির নিরীহ স্রোতের দিকে তাকিয়ে আমি বিজ্ঞানমনষ্ক হয়ে গেলাম! বাচ্চারা কান্না করলে পানির ছেড়ে দিবেন বেসিনে, বাচ্চাকে কাছে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন। দেখবেন, কান্না থেমে গেছে। বেসিনে কৃত্রিম জলাশয় তৈরী করা পানির শব্দতরঙ্গ নিয়ামকস্বরূপ!

আমি বাথটাবের দুপাশে হাত রেখে উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করলাম। আমার হাত পিছলে গেল। এই আর এমন কি! কতরাতে আমার শরীর আবিদের কাছ থেকে পিছলে যায়। সাবানপানিতে বাথটাব পিচ্ছিল হয়ে গেছে।
আমি একহাত শরীরের নিচে দিয়ে, অন্য হাত বাথটাবের কিনারায় রেখে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াবার পণ নিলাম। আমার হাতদ্বয় দ্বিতীয়বারের মতন পিছলে গেল!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৭:৫২
৫৪টি মন্তব্য ৪৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×