১। নীতিমালা থাকা উচিত- স্ব-শাসিত হবার মত ম্যাচিউর আমাদের প্রচার মাধ্যম গুলা এখনো হয়ে উঠেনি। কতিপয় রিপোর্টার রিপোর্ট করেন নাকি কবিতা পাঠ করেন বুঝি না। আমরা যেখানে অহরহ বাজার মনিটরিং এর জন্য/নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারকে দোষ দিয়ে আসছি , সেখানে সরকার কেন অনিয়ন্ত্রকের ভুমিকা নেবে গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে? নিয়ন্ত্রণ কি সুফল এবং মান নিশ্চিত করে না? সরকারের নির্বাহি ক্ষমতা সুচারু রূপে প্রয়োগের জন্য কিছু বাইটিং পাওয়ার লাগে। কোন কিছুতেই যদি সে বাইটিং পাওয়ার হারায় তখন সে সরকার হয়ে পড়ে দুর্বল সরকার।
২। গণমাধ্যম বলতে কি বুঝিয়ে থাকি? আমাদের দেশের গণ মাধ্যম গুলাতে কি "গণ" শব্দটা আছে? আমাদের মাধ্যম গুলার আরেক নাম হচ্ছে "ট্রান্স কম গ্রুপ,বসুন্ধরা গ্রুপ, স্কায়ার গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, হাসমত-ফালু গ্রুপ। রিপোর্টারের তথ্য যদি মালিক পক্ষের নিজের অথবা বন্ধুর বিপক্ষে যায় তখনও কিন্তু বার্তা সম্পাদক সেটা কেটেকুটে প্রকাশ করেন। মিডিয়া গুলা তার মালিকের নীতিমালা মেনে চলে। কিন্তু তাদের জন্য কোন অভিভাবক থাকবে না অথবা রাষ্ট্র অভিভাবক হিসাবে কোন কমিশন করবে না তা কি হতে পারে?
৩। সম্প্রচার নীতি মালা নিয়ে বিভিন্ন মহলের সাংবাদিকরা যে হারে সাংঘাতিক আশংকা প্রকাশ করেছেন এবং কেউ কেউ নয়া পল্টনের ভাষায় সেটা শুনে হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারছি না।
৪। বিরোধী মহল সব সময় বলে আসছে বেশীর ভাগ মিডিয়া মালিক নাকি আওয়ামী ঘেষা। (দিগন্ত গ্রুপ বাদে) এটা যদি সত্য হয় তাহলে সরকারের নিয়ন্ত্রনেরতো কিছু নাই। তাহাদের কথা গুলা স্ব-বিরোধী হয়ে যাচ্ছে।
৫। স্বীকার করুন আর নাই করুন সম্প্রচার নীতি মালায় যাই থাকুক না কেন এই সরকারের আমলের ন্যায় উম্মুক্ত মিডিয়া কেউ দেখে নাই আগে। এমন কি সম্প্রচার নীতিমালার গেজেট হওয়ার পরও দেখা গেছে মানুষজন নির্ভয়ে সেটার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারছে এমনকি মন্ত্রীর মুখের উপর বলে দিতে পারছে।
যারা আশংকা প্রকাশ করেছেন বাকশাল হয়ে গেলো, মিডিয়ার কন্ঠ রোধ হয়ে গেলো! সে গুলা কি এখন বায়বীয় রাজনৈতিক বক্তব্য হিসাবে পরিগণিত হলো ?
৬। নীতি মালা, কমিশন এবং আইন- এই গুলার একেক ভেল্যু - অনেকে না বুঝেই নীতিমালাতেই পড়ে আছেন। কোন কিছুর জন্য প্রাথমিক নীতিমালাতে কিছু ভুল থাকতে পারে। চলার পথের ক্রমিক উত্থান পতনেে সেটা মশ্রিন হয়। নীতি মালাটি যখন খসড়া ছিল তখন কেন এত চুল চেরা বিশ্লেষণ করা হয়নি?
৭। সাংবাদিকরা প্রায় একটা কথা বলেন "একজন অপরাধী পুলিশের তদন্ত একজন পুলিশকে দিয়ে করালে সঠিক হবে না। এখন নিজেদের জন্য তারা নীজেরাই নীতিমালা তৈরী করবে নাকি জনগণের পক্ষ থেকে সরকার করবে? পরীক্ষার্থীরাই কি প্রশ্ন তৈরীতে ভুমিকা রাখবে?
সম্প্রচার নীতি মালা নিয়ে সমালোচনা আছে কিন্তু সমালোচকদের কথা শুনে মনে হলো -পরীক্ষার্থীদের দিয়ে প্রশ্ন পত্র তৈরী করালে পরীক্ষা ভালো হতো।
যাদেরকে নিয়ন্ত্রণ এবং বিকাশের জন্য নীতিমালা তৈরী করা হবে তারাই হতে চাচ্ছেন নীতিমালা লিখক।
৮। নীতিমালার টক শো টাইপ অনুষ্ঠান নিয়ে বলা হয়েছে - অসত্য বিকৃত তথ্য যেন জনসম্মুখে বলা না হয়। এখানে খারাপ কি হলো? তারা কি চাইছেন অসত্য অর্ধসত্য, বিকৃত বক্তব্য দিয়ে নিজের বাগ্নীতা প্রকাশ করতে?
৯। সেনাবাহীনি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে যে ধারাটি আছে - সেখানে বলা হয়েছে কটাক্ষা না করতে। একজন দুজনের অপরাধ নিয়ে রিপোর্ট করা যাবে না এমনতো বলা হয়নি। "র্যাব একটি খুনি বাহিনী" সেটা হলো কটাক্ষ। আর যদি বলা হয় র্যবের অমুখ সদস্যের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আছে তাহলে সেটা কোন বাহিনীর বিরুদ্ধে কটাক্ষ নয়। ব্যাক্তি এবং প্রতিষ্টানের তফাৎ গুলাও কি কতিপয় মিডিয়া বিশ্লেষক বুঝতে পারছেন না?
১০।সম্প্রচার নীতিমালাটি এখনো ১১ পাতার । সেখানে অনেক গুলা টার্ম এর ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে। কিছু বিষয় অতি সংযোজন সেটাও স্বীকার করছি। কিন্তু বাকশাল হয়ে যাবে, কন্ঠ রোধ হয়ে যাবে সেটা মানতে পারলাম না।
নীতিমালা খসড়া যখন ছিল তখন মরহুম সাঁইফ ভুইয়ার পোস্টের বিপরীতে একটা পোস্ট করেছিলাম ৫ই অক্টোবর ২০১১সালে । সেটা দেখতে পারেন। সাঁইফ ভাইয়ের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি .