somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাবা!

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাবা!
মা, বাবার আদর কিরকমের হয় মা? মা, আমি বাবাকে দেখিনা কত বছর হলো মা? মা, বাবাকি আমাকে খুব ঘৃনা করতো? তাহলে বাবা এতদিন দেশের বাইরে কি করে? আমাকে কি একবারো দেখতে ইচ্ছে হয়না তার? এই প্রশ্নগুলো মাকে করতে গিয়েও আবার থেমে যাই। কারন আমি আমার মাকে খুব ভালোবাসি। আমি এখন চাইনা বাবা নামের সেই ব্যক্তির কথা জানতে চেয়ে মাকে কোন কষ্ট দিতে। আমি জানি আমার বাবা নামের সেই মানুষটি একদিন হয়তো ফিরে আসবে। কিন্তু সময়টা আর আগের জায়গায় ফিরে যাবেনা। যেই বয়সে ছেলেরা তাদের বাবার কাধে চরে স্কুলে যেত, আমি ঠিক সেই বয়সে বড় ভাইয়ের হাত ধরে স্কুলে যেতাম। স্কুলের সকল পরিক্ষার সময় প্রায় সবার বাবাই স্কুলে ছেলেদের নিয়ে আসতেন। কিন্তু আমি ছিলাম একা। আমরা চার ভাইবোন। দুইবোন সবার বড়। তারপর আমার বড়ভাই আর সবার ছোট আমি। আমার বাবার প্রথমে ছেলে সন্তান না হওয়াতে খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। সংসার থেকে বেশ উদাশীন হয়ে পড়েছিলেন। পরপর দুই মেয়ের পর যখন তার প্রথম ছেলে সন্তান জন্ম নিলো তখন সে খুব খুশি হয়েছিলো। কিন্তু তার কিছুদিন পরেই আবার আগের মত উদাশীন হয়েই চলতে লাগলেন। তারপর আবার জন্ম নিলাম আমি। আমাকে দুই বছরের রেখে আমার বাবা বিদেশ চলে গিয়েছিলেন, সৌভাগ্যের অন্ব্যেষনে। তারপর থেকেই মায়ের কাছে মানুষ। ও নাহ, একটু ভুল হয়েছে। তার কিছুদিন পরপরই মাও সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করতে লাগলেন। আমার নানা মায়ের জন্য একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। প্রাইমারি স্কুলে সহকারী শিক্ষিকার চাকরি। তখন ১৯৯৫ সাল। আমার মোটে তিনবছর বয়স। মায়ের চাকরির কারনে আমার দেখাশুনার ভার গেল আমার ছোট দুই খালার উপড়। তারাই আমাকে কোলেপিঠে করে বড় করেছেন। বাবা মা কাছে থাকতোনা বলে আদরটা আমি একটু বেশিই পেয়েছিলাম আমার নানার বাড়ি থেকে। ছোট দুই খালা আর বড় মামার আদরে বড় হতে লাগলাম। এর মধ্যে বাবার সাথে খুব বেশি কথা বলা হতনা। ফোন করে কথা বলতে হলে আমাদের ঢাকায় যেতে হত। তাই মাসে একবার কথা বলার ব্যবস্থা করা হত। বিদেশ পাড়ি দেওয়ার ঠিক সাত বছর পর প্রথম দেশে আসেন। সেখানে মাত্র ২২দিন থেকেই আবার চলে যান। তারপর আজ ষোল (১৬) টি বছর পেড়িয়ে গেলেও এখনো আসেন নি। মাঝে মাঝেই ফোনে কথা হয় তার সাথে। আসবেন আসবেন করেও আসা হচ্ছেনা তার। কিন্তু সময়ের ব্যব্ধানে আজ আমি পচিশ বছরের তরুন। বাবার আদরটা আমার জন্য অধরাই রয়ে গেলো। তারপরেও বলি আমার কিছু লাগবেনা, তুমি তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসো।
তারপরেও চাই তুমি ভালো থাক, সুস্থ্য থাকো।
পৃথিবীর সকল বাবাদের প্রতি রইলো আমার গভীর শ্রদ্ধা ও আন্তরিক ভালোবাসা।

স্বপ্নহীন মানুষ।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×