গায়েবানা জানাযা: ইসলাম কি বলে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনী খোজ করলে অামারা দেখতে পাই তাঁর পুরো জীবনে তিনি মাত্র একবার গায়বানা জানাযা অাদায় করেছেন। তাও অাবার যার গায়েবানা জানাযা পড়েছেন তিনি ছিলেন একজন বাদশা ছিলেন। তাঁর নাম ছিল নাজ্জাশী রা.।এছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনে অার কখনো কোন গায়েবানা জানাযা পড়েন না। রাসূল সা.তাঁর সহাবায়ে কেরাম রা. গণকে অনেক মুহাব্বত করতেন যার কোন নজির এখনো পৃথিবী দেখাতে সক্ষম হয়নি। অার কখনো পারবেও না। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়। দীন প্রচারের জন্য রাসূল সা.তাঁর সাহাবায়ে কেরাম রা. গণকে দূর্দুরান্তে পেরণ করেছেন। তাদের অনেকেই রাসূল সা.জীবিত থাকাকালিন সমেয়েই বিভিন্ন দেশে ইন্তেকাল করেছেন। এছাড়াও বহু সাহাবায়ে কেরাম রা.এর জানাযায় রাসূল সা. উপস্থিত হতে পারেননি। রাসূল সা. সাহাবায়ে কেরাম রা গণকে এতো মুহাব্বত করা শর্তেও রাসূল সা.কারো গায়েবান জানাযা পড়েননি। রাসূল সা.এর ইন্তেকালের পরও কোন সাহাবী তাবেয়ী ও তাবয়ে তাবেয়ী রা.গণ কখনো কারো কোন গায়েবান জানাযা পড়েননি।
গায়েবানা জানাযার ব্যপারে ইমামগণের মত উল্লেখ করলে হয়তো অনেকেই প্রশ্ন তুলবেন কুরঅান-হাদীস থাকতে ইমামরা অাবার কারা ?
অামরাই তো ১০০। খুব অবাক লাগে নিজে কুরঅান-হাদীস পড়তেই পারে না অাবার সে ইমামগণকে বাদ দিয়ে নিজে নিজে নাকি কুরঅান-হাদীসের ওপর অামল করবে। যাই হোক সে জন্য অার ইমামগণের মতামত উল্লেখ করছিনা। যদিও অধিকাংশ ইমামগণই গায়েবানা জানায পড়তে নিষেধ অাবার কেউ কেউ না পড়াকে উত্তম বলেছেন। যাই হোক অামরা যদি গায়েবানা জানাযার ব্যপারে শুধু রাসূল সা. সাহাবায়ে কেরাম রা.তাবেয়ীন ও তাবয়ে তাবেয়ীন রা. গণের অামল নিয়েও পর্যালোচনা করি। তাহলে ইসলামে গায়েবানা জানাযা পড়ার পর্যায় নির্ধারণ করতে পারবো। সাহাবা,তাবেয়ী ও তাবয়ে তাবেয়ী এতিন জামানার কথা এজন্য বলেছি রাসূল সা.হাদীস শরীফে এতিনটি জামানাকে খাইরুল কুরুন তাথা সর্ব উত্তম জামানা বলেছে।
বি.দ্র.বর্তমানে বাংলাদেশে যে দলটি গায়েবানা জানাযাকে রাজনৈতিক কর্মসূচির রূপ দিয়েছে তারা হয়তো সাহাবায়ে কেরাম রা. সহ পরবর্তি দুটি জামানার অামলকে মূল্যায়ন না ও করতে পানে। কারণ তারা যে নেতার কমান মেনে রাজনীতি করেন তিনি সাহাবায়ে কেরাম রা.গণকেই সত্যের মাপ-কাঠি মানেন না তাবেয়ী বা তাবয়ে তাবেয়ী তো দূরের কথা।
সে দিকে যাচ্ছি না মূল অালোচনায় অাসি।
গায়েবানা জানাযার পর্যায় যদি ইসলামে এতো মূল্যবানই হতো তাহলে রাসূল সা.তাঁর সাহাবাদের গায়েবানা জানাযা পড়লেন না কেন ?
কোন সাহাবী,তাবেয়ী ও তাবয়ে তাবেয়ী গায়েবানা জানাযা পড়লেন সা কেন ?
কোন ইমাম বা মুজতাহীদগণ তা পড়লেন না কেন ?
তবে গায়েবানা জানাযা যেহুতু রাসূল সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে জীবনে একবার হলেও পাওয়া যায়। তাই কেউ গায়েবান জানাযা পড়লে তা নাজায়েয হবে না। কিন্তু গায়েবানা জানাযা পড়া উত্তম কিনা এব্যপারে কারো মত পাওয়া যায়নি। বরং সকলেই একথায় একমত যে গায়েবানা জানাযা না পড়া উত্তম। কুরঅান-হাদীস বিশেষজ্ঞগণের অধিকাংশই গায়েবানা জানাযা পড়তে নিষেধ করেছেন। মাত্র কয়েকজন জায়েয বলেছেন। ইসলামে জায়েয হওয়ার অর্থ হলো যদি কেউ উক্ত অামলটি করে তাহলে গুনা হবে না। করার অনুমতি অাছে। জায়েয হওয়ার অর্থ এটি নয় উক্ত কাজটি করা উত্তম। গায়েবানা জানাযা পড়া যে উত্তম নয় এব্যপারে সকলে একমত। কারো কোন দিমত নেই। মতপার্ক্য শুধু এখানে যদি কেউ গায়েবানা জানাযা পড়ে জায়েয হবে কিনা বা অনুমতি অাছে কিনা।
এযাবত যা বলেছি তা হলো গায়েবানা জানাযা ইসলামের একটি বিধান বা ইবাদত হিসাবে পালন করলে তার তার অনুমতি অাছে কিনা তা নিয়ে।
এখন অাসুন গায়েবানা জানাযা যদি কেউ বা কোন দল দুনিবী কোন সার্থ বা রাজনৈতিক সার্থ হাসিলের লক্ষে অদায় করে তার বিধান কি ? তা নিয়ে পর্যালোচনা করি।
গায়েবানা জানাযা বর্তমানে তথাকথিত একটি ইসলামী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচির রূপ ধারণ করেছে। তাদের দেখাদেখি অামরা দেখতে পাই বর্তমানে বিএনপি অালীগের মত দলগুলোও মাঝে মাঝে গায়েবানা জানাযা পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করে ।
সুতরাং গায়েবানা জানাযা যে বর্তমানে লোক দেখানোর জন্য দুনিবী সার্থ হাসিলের লক্ষে ইসলামের খেলাপত বিধ্বংসী পশ্চিমা গণতন্ত্রের একটি কর্মসূচিতে পরিনত হয়েছে অন্তত তাতে কারো কোন সন্দেহ থাকার কথা নয়।
এমনিই তো অধিকাংশ কুরঅান-হাদীস বিশেষজ্ঞগণ গায়েবানা জানাযা পড়তে নিষেধ করেছেন।
অার বর্তমানে তা লোক দেখানোর জন্য দুনিয়াবী সার্থ হাসিলের লক্ষে তাকে রাজনৈতি কর্মসূচির রূপ দেওয়াতো সম্পুর্ণ হারাম।
তাতে কারো কোন দিমত নেই।
সুতরাং যেসকল দল এর সাথে জড়িত তাদের কে তাওবা করে তা থেকে বিরত থাকার সবিনয়ে অনুরোদ করছি।
রাজনীতি করেন। ইসলামের স্বার্থে করেন। ইসলামকে বিক্রি করে নয়।
অাল্লাহ তা'অালা অামাদেরকে বুঝার ও অামল করার তাওফিক দান করুক।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪২