এইচ ১৫০ মডেলের স্মার্ট মোবাইল নিয়ে রীতিমত ভণ্ডামির অভিযোগ উঠেছে এডিসন গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সিম্ফনি মোবাইলের বিরুদ্ধে। বেশকিছু ক্রেতা এ মোবাইল কিনে রীতিমত জিম্মি হয়ে আছেন। বিনিময়ে শুধু ‘সরি’ এবং ‘৫/৭ কর্মদিবসের মধ্যে পেয়ে যাবেন’ নামক সান্তনা বাক্য জুটছে ক্রেতাদের কপালে।
জানা যায়, প্রায় তিন মাস আগে সিম্ফনি এইচ ১৫০ মডেলের হ্যান্ডসেট বাজারে ছাড়ে। চোখ ধাঁধানো বিজ্ঞাপন প্রচার করে সিম্ফনি এ সেটটির বেশ প্রসার ঘটায়। ভাল কিছু ফিচারের লোভে বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পা দেন অনেকেই।
অভিযোগ উঠেছে- এ সেট ব্যবহারের দিক দিয়ে অত্যন্ত বাজে। ঘন ঘন হ্যাং হয়, ডিসপ্লেও নষ্ট হচ্ছে ঘন ঘন। কাস্টমার কেয়ারে দিয়েও উল্লেখযোগ্য লাভ হচ্ছে না।
গত ১৭ জুন বসুন্ধরা সিটির ৫ তলায় অবস্থিত সিম্ফনির কাস্টমার সেন্টারে এইচ ১৫০ মেরামতের জন্য দিয়ে আসেন আরাফাত নামের একজন। বলা হয়- দুইদিনের মধ্যে ডেলিভারি দেয়া হবে। তিনি যথাসময়ানুযায়ী যাবার পর বলা হয়, মোবাইলটির যে পার্টস নষ্ট হয়েছে, তা মার্কেটে এখনও আসেনি। আরও ৪/৫দিন সময় লাগবে। এরপর তিনি যান বুধবার। আবারও একই কথা শুনতে হয় তাকে। এসময় তিনি উত্তেজিত হয়ে- রিসিড ছিঁড়ে ফেলে চলে যান।
আমাদের সময় ডটকমের কাছে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তারা বলছে, পার্টস মার্কেটে নেই। তবে যে মোবাইলের পার্টস মার্কেটে এখনও আসেনি, সেই মোবাইল কেন তারা মার্কেটে ছাড়ে? ক্রেতাদের সঙ্গে এ রকম ভ-ামি করার মানে কী? তিনি আরও বলেন, প্রায় তিন মাসের মতো হল সেটটি কিনেছিলাম ইস্টার্ন প্লাজা সিম্ফনির আউটলেট থেকে। এক মাসের মধ্যে সেটটির ডিসপ্লে নষ্ট হয়ে যায়। ঠিক করে আনার পর প্রায় এক মাসের মধ্যে আবারও ডিসপ্লে নষ্ট হয়। সেটাই মেরামতের জন্য দিয়েছিলাম। এছাড়া সেটটি খুব ঘন ঘন হ্যাং হয়, দিনে অন্তত ৮-১০বার রিস্টার্ট দিতে হয়।
এ ধরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজের কাছ থেকে। তিনিও বসুন্ধরা সিটির কাস্টমার কেয়ারে এ মোবাইল দিয়েছেন। তারও প্রশ্ন- যে সেটের পার্টস মার্কেটে নেই, সে সেট মার্কেটে ছেড়ে ক্রেতাদের বিব্রত করার কী মানে আছে? সিম্ফনিতে চাকুরি করেন তার একজন বন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ও আমাকে বলেছে, এ সেটের মান নিম্ন। শুধুমাত্র রংচটা মার্কেটিংয়ের বলেই এ সেট এতো ছড়িয়েছে।
অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জামান এইচ১৫০ মেরামতের জন্য উত্তরার কাস্টমার কেয়ারে, বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা ইমদাদ মিরপুরের কাস্টমার কেয়ারে। তাদের প্রত্যেকের অভিযোগ আরাফাতের মতো।
সিম্ফনির বিভিন্ন আউটলেটে কর্মরতদের সঙ্গেও কথা হয় আমাদের সময় ডটকমের, তারা জানিয়েছেন- সিম্ফনির কোনো সেট সম্পর্কে এতো অভিযোগ আসেনি যে অভিযোগ এসেছে এইচ ১৫০ সম্পর্কে। এজন্য ক্রেতারা অনেক সময় এতো বাজে আচরণ করে যান, বলার বাইরে। কাস্টমার কেয়ারের কর্মীরাও এ ধরণের অভিযোগ করে বলেন, ‘ক্রেতাদের উগ্র ব্যবহারের কারণে চাকুরি ছেড়েই দিতে ইচ্ছে করে।’
জানার জন্য বুধবার দুপুরে গুলশানে অবস্থিত এডিসন গ্রুপ কার্যালয়ে আমাদের সময় ডটকমের সঙ্গে কথা হয় একজন কনিষ্ঠ কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনিও বলেন, মোবাইলটির যে পার্টস নষ্ট হয়েছে, তা মার্কেটে এখনও আসেনি। যে মোবাইলের পার্টস মার্কেটে আসেনি, মোবাইল কেন মার্কেটে ছাড়া হল- প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। শুধু বলেন, তাড়াতাড়ি আসবে।
লিংক : Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:১৯