somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমান্তরাল

১০ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ঘটনাটা আমি যখন শিক্ষক ছিলাম তখনকার । শিক্ষক না বলে প্রভাষক বলা ভাল । দুই শব্দের মধ্যে ফারাক বিশাল । ভাষণ বা লেকচার দিলেই প্রভাষক হওয়া যায় । লেকচার দেওয়া সহজ । কিন্তু আমার ধারণা শিক্ষক হওয়া এত সহজ না, অনেক জটিল বিষয় । যাই হোক, সেই আলাপ অন্য কোনদিন ।
ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্স ল্যাবের ভাইভা নিচ্ছিলাম । ভাইভা জিনিসটা বেশ বোরিং । মানুষের কথা শোনার মত বোরিং কাজ দুনিয়াতে কমই আছে । আমি নিজে খুবই ব্যাড লিসেনার (মাই টোফেল স্কোর ভেরিফাইস দ্যাট !!!) । বোরডম দূর করার জন্য আমি পোলাপানের সাথে মজা নেবার চেষ্টা করতাম, নির্দোষ মজা (একজন শিক্ষকের কখনই সেটা করা উচিৎ না !) ।
- বল মাক্স (মাল্টিপ্লেক্সার) কি জিনিস ?
- স্যার, মাক্স হচ্ছে একটা আবরণ, সার্কিটের ওপর দিলে সার্কিট ভাল থাকে
- ও আচ্ছা, মাক্স তাইলে স্নো পাউডারের মত । মুখে লাগালে চেহারাও ভাল থাকবে নিশ্চয়ই
- না স্যার, কি যে বলেন !
- দাম বেশি কোনটার মাক্স না স্নো পাউডারের ?
- তাতো জানি না স্যার
- জানা দরকার না ? বউ বা গার্লফ্রেন্ড যখন আবদার করবে তখন সস্তায় মাক্স কিনে দেওয়া কস্ট ইফেক্টিভ স্ট্রাটেজি না ?
- কি যে বলেন স্যার !
আমার উল্টাপাল্টা কথা শুনে পোলাপান আরও উল্টাপাল্টা রিপ্লাই দিত ।
- রিং কাউন্টার কি করে ?
- স্যার, মোটর ঘুরায়
- ও, আমি তো জানতাম রিং চিপস বানায়, ছোটবেলায় আমরা যে ৩ টাকা দিয়ে রিং চিপস খাইতাম না, সেগুলা
- কি জানি স্যার, কিছু কাউন্টার মোটর ঘুরায় আর কিছু মনে হয় চিপস বানায়, আল্লাহর দুনিয়ায় কত কিছু যে হয়
ছেলেটা হঠাৎই দার্শনিক হয়ে গেল । ওরে কি গ্রেড দিব ভাবতে গিয়ে আমিও সেমি-দার্শনিক হয়ে গেলাম ! তো এমনই ভাইভা হচ্ছে একদিন । এক মেয়ের ভাইভা নিচ্ছিলাম ।
- ফুল এডারের সার্কিট পারো ?
- স্যার, আমার শ্বশুর গত সপ্তাহে অসুস্থ ছিল, প্রিপারেশন নিতে পারি নাই
- ও আচ্ছা (বাবা অসুস্থ থাকলে মনে হয় পার পাওয়া যায়, শ্বশুর অসুস্থ হলে মনে হয় কোনও মাফ নাই !), কোর্সের যে কোনও টপিক নিয়ে কিছু একটা বল
- বললাম না স্যার, শ্বশুর অসুস্থ ছিল
- আচ্ছা, অন্য একদিন এসে ভাইভা দাও তাহলে
- স্যার, সেটা পারব না । বাচ্চাটা অসুস্থ এই সপ্তাহে
- বল কি ? ঘরে সুস্থ কেউ আছে, নাকি সবাই পালা করে অসুস্থ হয় ?
- বাচ্চার বাবার হাঁপানির ধাত আছে (প্রশ্নটা যে রেটোরিকাল ছিল, এটা মেয়েটা বুঝে নাই)
- তোমাদের ফ্যামিলি দেখি রোগ বালাইয়ের মিউজিয়াম !
মেয়েটা সত্যি কি মিথ্যা বলছে জানি না । যদি সত্যি বলে থাকে, আমার রসিকতাটা যথেষ্টই নির্দয় ছিল । আবেগহীন বা অত্যন্ত স্বল্প আবেগি (স্টিল ডিবেটেবল) মানুষ হিসেবে আমি সেটা নিয়ে মোটেই বিচলিত হলাম না । সবার ভাইভা শেষে এসে মেয়েটা অনুরোধ করে গেল ল্যাব টেস্ট আর ভাইভাতে কিছু না পারার পরও তাকে যেন পাস করায়ে দেই । ফেল করালে তাকে আবার এই কোর্স রেজিস্ট্রেশন করতে হবে । তাতে যে পয়সা লাগবে শ্বশুরবাড়িতে থেকে সেটা তার জন্য ম্যানেজ করা মুস্কিল । এসব কথা শুনতে ভাল লাগছিল না । “ঠিক আছে, দেখব” বলে তাকে বিদায় করে দিলাম ।
সপ্তাহ দুই বাদে মেয়েটা আমার সাথে দেখা করতে আসল । অফিস রুমে বসে এমএস থিসিস বইটা সাইজ করার কথা, কিন্তু মুভি দেখতেছিলাম । দরজায় নক করে, মেয়েটা সালাম দিল, নাম বলল । রেগুলার কথা হয় না এমন মানুষের নাম আমার কখনই মনে থাকে না । আমার কতগুলা কাজিন আছে আমি যাদের নাম লিটারেলি ভুলে যাই, এদের বাচ্চা-গাচ্চার কথা তো ছেড়েই দিলাম । পিচ্চি, বাবু, হাবু এসব দিয়ে কাজ চালায়ে দেই । দরজার দিকে তাকায়ে জিজ্ঞেস করলাম
- হ্যাঁ বল
- স্যার, ভাল আছেন ?
- আমি ভাল আছি কিনা জানার জন্য দেখা করতে আসছ ?
- না স্যার, আপনাকে থ্যাংকস দিতে আসছি
- কি জন্য ?
- ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সে পাস করানোর জন্য
- ও আচ্ছা, তা কি গ্রেড পাইলা ?
- বি মাইনাস
- বি মাইনাস পাইয়া এত খুশি ? বল কি ?
- ভাবছিলাম ফেল করায়ে দিবেন, কিছু পারি নাই
- ও আচ্ছা, ইউ আর ওয়েলকাম
বলে আবার কানে হেডফোন লাগায়ে বসতে যাচ্ছিলাম ।
- স্যার, আর একটা কথা
- আবার কি ?
- আপনি নাকি চলে যাচ্ছেন ?
- হুম, যাচ্ছি তো । কেন ?
- আমার আর আমার বাবুটার জন্য দোয়া কইরেন
- দোয়া চাওয়ার আর মানুষ পাইলা না ? আমি জুম্মার নামাজ ছাড়া নামাজ তেমন পড়ি না, ঠেকায় পরলে মাঝে মধ্যে মাগরিব পড়া হয়, যে রেগুলার নামাজ পড়ে তার দোয়া নিলে ভাল হয় না ?
- নামাজ ছাড়াই দোয়া কইরেন স্যার
- আচ্ছা করবোনে
মেয়েটা যেমন আসছিল, তেমন চলে গেল । আমি আবার কানে হেডফোন লাগায়ে বসলাম । মুভি শেষ করেই থিসিস বইটা নিয়ে বসতে হবে । মরার থিসিস !!!



ফল সেমিস্টারে ডিজিটাল ইমেজ প্রোসেসিং টিএ করার পর মেজাজ ভীষণ খারাপ হইছিল । যা পারি না তাই ধরায়ে দিছে । মনে মনে কয়েক হাজার গাল দিছিলাম । স্প্রিং সেমিস্টারে যখন সলিড স্টেট ডিভাইস থিওরির টিএ দেয়, খুশিতে মনে চাইছিল গ্র্যাড কোঅরডিনেটরের সাথে কোলাকুলি করে আসি । যখন জানলাম কোর্সে স্টুডেন্ট ৬০+, খুশির লেভেল একটু নীচে নেমে গেল, কোলাকুলি করার ইচ্ছেও আর ওতটা থাকল না । তারপরও আগের মত বুগিচুগি দিয়ে তো আর সেমিস্টার পার করা লাগবে না, এতেই চলবে ।
কোর্সের প্রফেসর কোরিয়ান । মহিলা বেশ প্র্যাকটিকাল মানুষ । একদিন লাঞ্চ করাতে চাইল, ভদ্রতা করে বললাম “না থাক” । ভাবছিলাম জোরাজুরি করবে, কিসের কি ! “ওকে” বলে একলা খাইতে চলে গেল । এদের কালচারে মনে হয় জোরাজুরি জিনিসটা নাই । অ্যান্ড আই লার্নড দ্যাট উইথ সাম কস্ট । ফাও লাঞ্চ খাওয়াতে চাইল, আজাইরা ভদ্রতা করতে গিয়ে ধরা খেলুম । খালি পেটে ভদ্র হয়ে লাভ আছে ?
একদিন মহিলা মেইল দিল দেখা করার জন্য । গেলাম অফিসে,
- ওয়ান অফ দ্য স্টুডেন্টস কমপ্লেইন্ড অ্যাবাউট ইউ, এ ফিমেইল ওয়ান
- ওহ ক্র্যাপ (বলতে চাই নাই, মুখ ফস্কে বের হয়ে গেল) ! বল কি ?
এই দেশে হ্যারাসমেন্ট বিশাল ইস্যু । একটা কেস খাইলে হোমরাচোমরাদেরই হালুয়া টাইট হয়ে যায়, আর আমি তো পুরাই দুধভাত, একটানে খেয়ে গিলে ফেলবে । ছাত্রীদের সাথে টুকটাক কথা তো হয়ই, কিন্তু কে কোন চিপা দিয়ে হ্যারাসড হয়ে গেল মনে করার চেষ্টা করতে থাকলাম, কিছুই মনে আসল না ।
- শি সেইড, ইউ গ্রেড টু জেনারাসলি
- হোয়াট ? আই থট ইউ সেইড সামওয়ান কমপ্লেইন্ড
- ইয়াহ, দ্যাট ইজ দ্য কমপ্লেইন
পুরাই মদনা হয়ে গেলাম । গ্রেড বেশি পাওয়া কেমনে কমপ্লেইন হয় ? খুশি হয়ে বাড়ি গিয়ে পার্টি দে, অপশন থাকলে আমারে ইনভাইট কর ।
- শি ক্লেইমড, সাম স্টুডেন্টস গেটিং সেম গ্রেড লাইক হার উইথ লেস এফোরট
- আউচ, আই ডোন্ট নো হাও টু রেস্পন্ড টু দ্যাট
- নাইদার ডু আই, বাট ইউ আর দ্য টিএ । ইউ হ্যাভ টু হ্যান্ডল ইট
নিজে কম পাইলে কাঁদাকাটি করা দেখছি, অন্যে বেশি পাইলে কাঁদাকাটি করাও দেখছি । কিন্তু কাঁদাকাটি অফিস পর্যন্ত এসে করতে কখনও দেখি নাই । এমনই বেকুব হইছিলাম, গাল দিতেও ভুলে গেলাম । টারশিয়ারি লেভেল এর মদনা হয়ে চলে আসলাম । জীবনে কি আর দেখেছ বালক, আরও কত কিছু দেখবা !
টার্ম প্রায় শেষ তখন । একদিন মেইল আসল একটা । কেউ একজন দেখা করতে চায় । বলে দিলাম অফিস আওয়ারে আসতে । আমার যে একটা অফিস আওয়ার আছে সেটাই ভুলতে বসছিলাম । অফিস আওয়ারে কেড ল্যাবে বসে হয় খেলা দেখি নাইলে ইউটিউব । পোলাপানের দেখা করতে আসা মানে হল, সামনের অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর মিলাইতে আসা । মামী (প্রফেসর) এমন বই টেক্সট বুক হিসেবে সিলেক্ট করছে, অনলাইনে ফুল সলিউসন পাওয়া যায় না । যেটুকু পাওয়া যায়, সেখান থেকে সে কোনও প্রশ্ন দেয় না । মামী ঝানু পাবলিক, ঘাস খেয়ে তো আর প্রফেসর হয় নাই !
অফিস আওয়ারের আগেই মহিলা এসে হাজির । কেড ল্যাবের পিসিতে লগ ইন করতে করতেই
- হায় মেইডি (এরা আমার নামের কোনও অংশই বলতে পারে না, শুরুতে কারেক্ট করতাম, এখন আর করি না, বল যা মন চায় !)
- হেই, (ভ্রু জোড়া কিঞ্চিৎ উচু করলাম, যার মানে হয় “কি চাও”)
- আই মেইলড ইউ
- ও ইয়াহ, উত্তর মিলাতে আসছ ?
- কিসের উত্তর ?
- কিসের আবার, অ্যাসাইন্মেন্টের নিশ্চয়ই
- ও না না, অ্যাসাইন্মেন্ট দেওয়া হয় নাই
- ও আচ্ছা, শেষেরটা দাও নাই ?
- না, কোনটাই দেওয়া হয় নাই
মহিলার কাহিনী শুনলাম । শি হ্যাজ এ নিউবরন বেবি, অ্যান্ড ইটস হার থার্ড ওয়ান । ভ্যাকেসন সেমিস্টার নিল না কেন জিজ্ঞেস করলাম । পর পর দুই সেমিস্টার ভ্যাকেশন নিবে না । আমার ধারণা ভার্সিটি নিশ্চয়ই কনসিডার করত । সে নিজেই নেয় নাই । বলল মাস্টার্স নিয়া জলদি বের হইতে চায় । বাচ্চা পালা তো আছেই, টাকাও দরকার, এত পড়ে কি ঘোড়ার ডিম হবে ? “ইটস নট দ্য টাইম টু স্টাডি, দ্য ফ্যামিলি নিডস মানি” ।
ইউটাহ মরমনদের সবার কাহিনীই এরকম । ৩০ বছর আগেও গড়ে প্রত্যেক মহিলা ৫ জন বাচ্চার জন্ম দিত । ৫০ বছর আগে সংখ্যাটা ছিল ৬/৭ । ২০০৮ সালে ইউটাহতে মোট ৫৬ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করে । ২০১৪ সালে কমে ৫১ হাজার । এই ৫ হাজার কমে যাওয়ায় তাদের দুশ্চিন্তার শেষ নাই । তারা বিশ্বাস করে ঈশ্বরের সাথে সাথে তারাও এই সমস্ত সন্তানের কো-ক্রিয়েটর । সন্তান (ফিজিকাল বডিস) হচ্ছে অমরত্ব ও শাশ্বত গৌরবের একমাত্র উপায়, যা তারা ঈশ্বরের সাথে ভাগাভাগি করতে পারে । এরা নিজেদের Latter-day Saints (LDS) বলে । ফ্যামিলি ইজ দ্য কোর অফ এলডিএস চার্চ । যা হোক, ওদের দেশ, ওদের ফ্যামিলি, ওদের চার্চ । ওরা বাচ্চা পয়দা করে মাঠ ঘাট সয়লাব করে ফেলবে নাকি জঙ্গলে নিয়ে বলি দিয়ে আসবে, এসব নিয়ে আমার কিসের মাথাব্যথা । এসব বাচ্চা উৎপাদন জনিত কচকচি আবার অন্য কোন সময় হবে ।
ছাত্রী তিন শিশু নিয়া ছ্যারাবেড়া অবস্থায় পড়েছে । বাচ্চাগাচ্চা সামলানো নিশ্চয়ই কঠিন কাজ, সহানুভূতিশীল হবার চেষ্টা করলাম । যদিও বাচ্চা পালন বিষয়ে ফার্স্ট হ্যান্ড এক্সপেরিএন্স না থাকায় পর্যাপ্ত এমপ্যাথি দেখাতে পারলাম না । বললাম ৪/৫ টা অ্যাসাইনমেন্ট করে জমা দিতে পারলেও প্রফেসরকে ম্যানেজ করে দিব । বাচ্চা সামলায়ে যতটুকু পারে করতে বললাম । তিন বাচ্চার অন্তত একটাও যদি আমার মত হয়, তাইলে তো পুরাই কাম সারছে । বেস্ট অফ লাক !
টার্ম শেষ । সামার শুরু, ক্যাম্পাস খালি হয়ে গেছে । আমাদের কমিউনিটির লোকজন মোটামুটি সবই আছে । তাই খালি ক্যাম্পাসও যা, ভরা ক্যাম্পাসও তা । একদিন মেইল আসল একটা । দুই লাইনের একটা মেইল । এক লাইনে লেখা “থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ” । আরেক লাইনে লেখা “গড ব্লেস ইউ”। নাম দেখে কিছুই বুঝতে পারলাম না (আগেই বলছি নাম জিনিসটা মোটেই মনে থাকে না) । কে রে ভাই ব্লেসিং পাঠাচ্ছিস, তার চেয়ে দুই একবেলা দাওয়াত দিয়ে খাওয়াইলে ............ :P
প্রফেসরের সাথে টার্ম পরবর্তী বিদায়ী সাক্ষাৎ । কিছুক্ষন আজাইরা আলাপ ।
- তোমাদের দেশ থেকে তো ভালই স্টুডেন্ট আসে এখানে
- অত কই আসে ? আমি এই করিডোরটা চক্কর মেরে আসলেও তোমাদের দেশের অন্তত ৫ টা দেখা যাবে
- আহা, হবে আস্তে আস্তে । ভাল কথা তোমার কথা বলে এক স্টুডেন্ট মেইল করছিল
- এবার আবার কি হল ? বেশি মার্ক পেয়ে দুঃখিত ? নাকি কম মার্ক পেয়ে আনন্দিত ?
- আরে না না । বলল তুমি খুব হেল্পফুল ছিলা ।
- ও আচ্ছা (আমাকে কেউ ভরে ভরে নাম্বার দিলে আমিও তাই বলতাম)
- সে তার বেবি সামলায়ে অল্প সময়ে ভাল পরীক্ষা দিছে
- ও (আচ্ছা ওই মহিলা)
ডিপার্টমেন্ট থেকে বের হলাম । ইউনিয়ন যাই, টেবিল টেনিস খেলব । বিচ্ছিরি রোদে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল ।
- শালার সূর্য, দূর হ
- হুম, তোমার কথায় আমি দুপুর তিনটায় ডুবে যাই এখন, তুমি দূর হও



ঈশ্বর নিয়ে আমার একটা থিওরি ছিল । খুবই ছেলেমানুষি থিওরি । এই ভদ্রলোক বা ভদ্রসত্ত্বা (জানিনা কি বলা উচিৎ) একটা সিস্টেম তৈরি করে সেটা চালু করে দিছে । সিস্টেমের অরিজিন পয়েন্ট বিগ ব্যাং হইতে পারে বা তার আগেও হইতে পারে । সেটা কথা না । কথা হল, এই সিস্টেম চালু করার পর সে সিস্টেমের কোনও কিছুকে এফেক্ট করতেছে না, কোনও কিছুকে ইনফ্লুএন্স করতেছে না । এটা এক রকমের এক্সপেরিমেন্ট, অনেকটা “দেখি কি হয়” টাইপ এক্সপেরিমেন্ট । এই দেখি কি হয় করতে করতে দুনিয়া আই মিন ইউনিভার্স এতদূর চলে আসছে । শুরুতে যখন এক-দুইটা মানুষ ছিল (অ্যাডাম-ইভ/আদম-হাওয়া) তখন সে ভাবছে “আরে বেকুব দুইটা, দেখি তোরা কি করিস”, আজকে যখন সেখানে সাড়ে সাত বিলিয়ন মানুষ তখনও সে ভাবতেছে, “আরে বক্সদের গুষ্টি, আরেকটু দেখি এরা কি করে” । নিতান্তই ছেলেমানুষি থিওরি । এটা পড়ে কেউ না আবার কোপাইতে চলে আসে !
এই সব মানুষকে একটা রেখার মত চিন্তা করা যায় । অবভিয়াসলি, স্টার্টিং পয়েন্ট জন্ম, এন্ড পয়েন্ট ডেথ । কিছু রেখা একটা আরেকটাকে ইন্তারসেক্ট করে ( সহজ ভাষায় “আওয়ার পাথ ক্রসড” ) । কিছু রেখা করে না, কিছু রেখার কোনোদিন দেখা হয় না (যেমন বাংলাদেশের মেয়েটা আর ইউটাহর মরমন মেয়েটা, এদের কোনওদিন দেখা হবে না) । এইসব রেখা সমান্তরাল । এই সমান্তরাল রেখাকে অন্য কোনও রেখা ইন্টারসেক্ট করে (যেমন আমি) । সমান্তরাল রেখার ইন্টারসেকশনের ফলাফল সমান, সমান একান্তর কোণ সমান অনুরূপ কোণ ।

প্যারালেল কজ,
প্যারালেল এফেক্ট,
প্যারালেল সিচুএশন,
প্যারালেল লাইফ,
প্যারালেল লাইন,
সমান্তরাল ।

জুলাই ৩, ২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৫৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×