পৃথীবিতে হিন্দু-মুসলমান বা অন্যসব ধর্মের মধ্যে যে ভেদাভেদ তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে এর চেয়ে ভালো উদ্যোগ আর হয় না৷
একেই বলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি।
ভারতের রাজস্থানে ক্ষুদে কৃষ্ণকে মাখন খাওয়াচ্ছেন মুসলিম মা।
সাম্প্রদায়িকতার গুমোট আবহে সম্প্রীতির খোলা হাওয়া। গেরুয়া শিবিরের নানা সাম্প্রদায়িক উস্কানিকে যখন দেশজুড়ে একের পর এক বিতর্ক, তখনই ভারতের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়ল বিহারের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। বিশ্বের বৃহত্তম মন্দির তৈরির জন্য জমি দান করলেন প্রায় ৪০টি মুসলিম পরিবার। পূর্ব চম্পারনে মূল রাস্তার ধারে তাঁদের দান করা জমিতেই তৈরি হবে সুবিশাল হিন্দু মন্দির।
ভারতে দক্ষিণ মুম্বাইয়ের কোলাবায় ঈদুল আজহায় এক সম্প্রীতির দৃষ্টান্তই যেন স্থাপন করলেন সেখানকার হিন্দু-মুসলিমরা। মুসলমানরা এদিন ঈদের নামাজ আদায় করলেন গণপতি (গণেশ দেবতা) মন্দিরে। আর এতে সহযোগিতা করলেন সেখানকারই হিন্দুরা।
সকাল ঠিক ৭টায় মন্দিরের পার্শ্ববর্তী মাদরাসা রাহমাতিয়া তালিমুল কোরআন মসজিদের বাইরে ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়। কিন্তু স্থানীয় মুসল্লিদের স্থান সঙ্কুলান হচ্ছিল না। আর কী করা! পরে আগত মুসলমানরা নামাজ আদায় করেন গণপতি মন্দিরে।
মন্দিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় ১৩শ মুসল্লি এদিন ঈদের নামাজ আদায় করেছেন মন্দিরের ভেতর।
বিশ্বের বৃহত্তম মন্দির তৈরির জন্য জমি দান করলেন প্রায় ৪০টি মুসলিম পরিবার। পূর্ব চম্পারনে মূল রাস্তার ধারে তাঁদের দান করা জমিতেই তৈরি হবে সুবিশাল হিন্দু মন্দির।
বিশ্বের বৃহত্তম মন্দিরটি নির্মাণের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। মন্দির প্রাঙ্গন এতটাই বড় করা হবে যে, ২০ হাজার মানুষ একসঙ্গে বসতে পারবেন। এহেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে স্বাভাবিক ভাবেই খুশির হাওয়া বিহার প্রশাসনে। পাটনার মহাবীর মন্দির ট্রাস্টের সচিব আচার্য কিশোর কুণালের কথায়, ‘মুসলিমরা শুধু জমি দানই করছেন না, বিশ্বের বৃহত্তম মন্দির তৈরির জন্য আরও প্রয়োজনীয় জমিও তাঁরা খুব সামান্য অর্থেই দিচ্ছেন। মুসলিম সম্প্রদায়ের সাহায্য ছাড়া এই স্বপ্নের প্রকল্প বাস্তব হওয়া সম্ভব ছিল না।’
হিন্দু মন্দির তৈরিতে মুসলিম সমাজের অভূতপূর্ব সাড়ায় অবাক মন্দিরের অছি পর্ষদ। পর্ষদের সদস্যদের বক্তব্য, মুসলিমরা পাশে না দাঁড়ালে কোনও দিনই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করা যেত না।
প্রায় ২০০ একর জমির উপর ওই মন্দিরটি তৈরি করতে খরচ পড়ছে ৫০০ কোটি টাকা। মন্দিরের উচ্চতা হবে আড়াই হাজার ফুট। চওড়ায় ১ হাজার ৩০০ ফুট। কুণালের কথায়, ‘যেহেতু প্রায় নেপাল সীমান্তের কাছে এই মন্দির তৈরি হচ্ছে, তাই মন্দিরটি আর্থকোয়েক প্রুফ করা হচ্ছে।’ মোট প্রয়োজনীয় জমির ৫০ একর দান করেছে হিন্দু ও মুসলিমরা। বাকি জমি কেনা হচ্ছে।’
দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে আছেন তাঁরা। সবাই রোজাদার দরিদ্র মানুষ। ধর্মপ্রাণ এই মুসলমানরা একে একে এগিয়ে আসছেন আর তাঁদের হাতে ইফতারের প্যাকেট তুলে দিচ্ছেন বৌদ্ধ ধর্মগুরু।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ এক বিরল দৃষ্টান্ত! সম্প্রীতির বন্ধনে ইফতার বণ্টনের এমন সুন্দর দৃশ্য দেখা গেল রাজধানীর বাসাবোর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে।
এই বৌদ্ধ মহাবিহারে মাঝেমধ্যেই আসেন সিঙ্গাপুরের নাগরিক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ব্যবসায়ী মি. ভিক্টর লি। বিহারের এতিম শিক্ষার্থী ও এলাকার দরিদ্র মানুষের জন্য তিনি চাল, ডালসহ নানা খাদ্যদ্রব্য দান করেন প্রায়ই।
সারা দিন রোজা রেখে এলাকার গরিব মানুষগুলো ভালোভাবে ইফতার খেতে পারে না শুনে দয়ার্ত হয় ভিক্টরের মন। তাই তিনি এবার দরিদ্রদের মাঝে ইফতার বিতরণের এই ব্যবস্থা করেন।
যে মানুষ এমন ব্যবস্থা করে দিয়ে গেছেন তিনি নিশ্চয়ই দয়ালু ও দানশীল। তাই তিনি যে ধর্মেরই হোক, আল্লাহ তাঁকে পছন্দ করেন। আল্লাহ তাঁকে ভালো রাখুন, আরো সম্পদ দিক, এভাবে আরো দান করার তৌফিক দান করুক।’
এক হিন্দু সাধু মুসলিম ছেলেদের সাথে ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত।
এই ছবিটা আমাদের দেশের সম্প্রীতি আর সৌহার্দের কথাই মনে করিয়ে দেয়।মত এবং পথের ভিন্নতা থাকতেই পারে কিন্তু দেশের স্বার্থে আমাদের সবাই কে এক হতে হবে।
ধর্ম যার যার উৎসব সবার। মানুষের সমাজ চাই। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ চাই না, বৈষম্য চাই না, হিংসা-বিদ্বেষ চাই না।
পরিশেষে এতটুকুই বলতে চাই, এই পৃথিবীতে হিন্দু,মুসলমান, ইহুদী, বৌদ্ধ,খ্রীস্টান এবং অন্যান্য ধর্মালম্বী সব ধর্মের মানুষই আমরা, তাই আসুন কারো ধর্মকে ঘৃনা না করে ধর্ম-বর্ন,ধনী-গরীব সকল ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে আগে মানুষকে ভালবাসতে শিখি । বিপদে-আপদে, সুখ-দূঃখে মানুষের পাশে দাড়াই,হিংসা-অহংকার, লোভ-লালসা, ঘৃনা সব কিছু ভূলে গিয়ে মানুষের সেবা করি,সত্য কথা বলি, সততার সহিত চলি তবেইতো আমরা সত্যিকারের মানুষ হতে পারবো এবং সেই দিনই হবে পৃথিবী স্বর্গীয়ময়।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬