ভাষার জন্য রক্ত দয়া শহীদ এবং বীর শ্রেষ্ঠরা সবাই মুসলিম নামধারী হবার পরেও এই উপমহাদেশে মুসলিমরাই বাঙালি হবার দৌড়ে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে, বিতর্কিত হয়ে আছে তার কারণ গুলো নিচে দেয়া হলো
১. আরবি-ফারসি নামকরণ ও ব্যবহার
হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির উপর আঘাত এনে যে বর্বর আরব-পারসিয়ানরা বাংলার মাটিতে আগ্রাসন চালিয়েছে, তার প্রমাণ স্বরূপ আরবি-ফারসি নামকরণ চারিদিকে । বাঙালির নিজস্ব সমৃদ্ধ ভাষা-সংস্কৃতি থাকা সত্ত্বেও বাঙালি মুসলিমরা কেন আরবি/ফারসি ভাষায় সন্তানের নাম রাখবে এটা গাত্রদাহের যথার্থ কারণ। বাবাকে আব্বু বা আব্বা বলা, মাকে বলা আম্মা--আরবি-ফারসি ভাষার দাপটটা হাজার বছরের বাঙালি ভাষা-সংস্কৃতির জন্য গ্লানিকর ।
২. অতিরিক্ত গরুর মাংস প্রীতি
এমনকি আরবের লোকগুলোও কুরাবানিতে ভেড়া, ছাগল, দুম্বা দেয়, কিন্তু বাঙালি মুসলিমের গরু ভোজন ছাড়া চলেনা। এই গরু ভোজন আবহমানকালের বাঙালি সংস্কৃতির সাথে যায়না। সনাতন ধর্মকে চ্যালেঞ্জ বা তাচ্ছিল্য করতেই এই গরু ভোজনের সংস্কৃতি। পয়লা বৈশাখে পান্তার সাথে ইলিশের চাইতে গরুর মাংস বেশি সুস্বাদু হবার কথা । সেটি করলে বরং ভয়াবহ সাম্প্রদায়িকতা হয়ে যাবে।
৩. বাঙালি কিংবদন্তীদের সঠিক সম্মান না করা
রবি বাবুকে ব্রাহ্মণবাদী বলে অপছন্দ করা, অথচ রবিবাবুর সঙ্গীত আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। বঙ্কিমবাবুকে সাম্প্রদায়িক বলে ঘৃণা করা, স্বামী বিবেকানন্দের অসাম্প্রদায়িকতার ডাককে উপলব্ধি করতে না পারাটা মুসলিমদের মৌলবাদী ধর্মাচারের কারণেই হয়েছে।
৪. মসজিদ-মাদ্রাসাতে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে না পারা
মসজিদ-মক্তবগুলো বাংলার মাটিতে অদ্ভুত কারণে সংগীত, শিল্প থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়। যত প্রগতিশীল হোন না কেন, বাঙালি মুসলিম মসজিদে বাদ্যযন্ত্র নেয়া বা শিল্প-ভাস্কর্য চর্চাকে পাপ মনে করে । এ ধরনের ধারণা-মানসিকতা বাঙালি সংস্কৃতির পুরোপুরি বিরুদ্ধ ।
৫. ধর্মের নামে, ধর্মের দোহাই দিয়ে বাঙালি সংস্কৃতিকে অগ্রাহ্য করা
শহীদ মিনারে ফুল না দেয়া, শিখা চিরন্তনের সামনে দাড়িয়ে সম্মান না দেখানো, মৃতের প্রতিকৃতিতে ফুলনা দেয়া, মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ধর্মের নামে বর্জন করে এক প্রকার লোক যারা সরাসরি বাঙালি হতেই অস্বীকৃতি জানায়।
৬. খেলার নামে পাকিস্তান সাপোর্ট করা
এটা বাঙালি মুসলিমের বিবেকে বাধেনা যে খেলার নামে তাদের পূর্বপুরুষের গণহত্যাকারীদের সমর্থন দেয়া যায়না। তারপরেও তারা বিবেক ভুলে পাকিস্তান ক্রিকেটকে সমর্থন দেয়, পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে মাঠে গিয়ে বাঙালি জাতির চূড়ান্ত অবমাননা করে । ধর্মের দোহাই দিয়ে পাকিস্তানের সাথে ভাই পাতায়। এই অপকর্মটা হিন্দুদের পক্ষে কখনই করা সম্ভব না।
৭. কারণে অকারণে ভারত বিদ্বেষ
বাঙালি মুসলিমদের মাঝে কারণে অকারণে ভারত বিদ্বেষটা ফ্যাশনে দাড়িয়েছে। অথচ এই ভারত নিঃস্বার্থভাবে আমাদের সাহায্য করেছে বলেই দ্রুত স্বাধীনতা পেয়েছি । ভারতকে অস্বীকার করা মানে একপ্রকার মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা, যেটা বাঙালি মুসলিমরা তাদের পূর্ব পাকিস্তানি ভূতের কারণে প্রায়ই করে থাকে ।
এবার ভেবে বলুন মধ্যযুগীয় আরবের ধর্ম বিশ্বাস বুকে নিয়ে আপনি কতটা বাঙালি হবার ভন্ডামি করতে পেরেছেন? শক্তপোক্ত নিষ্ঠাবান বাঙালি হবার প্রয়াসে আপনি কতটুকু পিছিয়ে আছেন?
নাকি বাঙালি হওয়াটা শুধু একটা রাজনৈতিক দলের ফায়দা আদায়ের অস্ত্র মাত্র?