ডেড-লাইনের চাপে এক মাস দাড়ি কামানো হয়নি জনাথনের । সহকর্মীর এই দশা থেকে মুচকি হাসলেন ডেইভেড (ডেভিডকে ওরা ডেইভেড উচ্চারণ করে),
'লুকিং কুল ম্যান! ডাজ এইমি কমপ্লেইন?'
দাড়ির ব্যাপারে জনাথনের বউ এইমির অনাপত্তির কারণ হিসেবে জানা গেল এইমির বাবা সেই যুবক বয়স থেকেই শ্মশ্রুধারী । দাড়ি রাখাটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার তার পরিবারে।
ডেইভেডের দাড়ি মুগ্ধতার কারণ হিসেবে তার গোলগাল মুখের সাথে বছরে ৩৬৫ দিনের মাঝে ৩০০ দিন দাড়ি ঝুলে থাকাটাও কারণ হতে পারে।চার্চে যেতে অসম্মতি জানানোর অপরাধে ডেইভেডের গার্ল ফ্রেন্ড তাকে এক প্রকার ছেড়েই দিয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো কারণে-অকারণে দাড়ির দিকে ঝুকছে সেটা ফ্রেঞ্চ কাট, বলিউডি খোচা খোচা বা ইমরান এইচ সরকার কাট নয়। মুখ ভর্তি জঙ্গল এবং সেটা তাদেরকে মানায় হয়তো শ্বেত বর্ণের চামড়ার কারণে।
একমাস পর দাড়ি কামিয়ে জনাথন যখন হাজির, খুশিতে আলহাদিত হয়ে প্রায় চিৎকার করে উঠে দাড়ালো গোড়া আওয়ামী প্রেমী বাঙালি সুজন।
'ওয়াও ইউ আর লুকিং সো হ্যান্ডসাম !'
আলী যাকের আগে দাড়ি রাখতেন, কিন্তু হয়তো উপলব্ধি করলেন তার দাড়ি জঙ্গীদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এখন আর দাড়ি রাখার ঝামেলা করেন না। আসাদুজ্জামান নূরকেও ভাল প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছিল তার দাড়ি নিয়ে । তিনি এত কট্টর দাড়িপন্থী যে ছোট মির্জা কিংবা মাস্তান বাকের ভাই চরিত্রের খাতিরেও ক্লিন সেভ করেননি। তাকে কেউ দাড়ি ফেলতে দেখেনি ।
দৈনিক জনকন্ঠের টেলিভিশন মুখপাত্র ৭১ টিভি খুব পরিষ্কারভাবেই দেখিয়ে দিল দাড়ি দেখে কীভাবে মানুষের ধর্ম, জাত, বর্ণ সনাক্ত করা যায়।
গোঁফওয়ালা দাড়ি প্রগতিশীলদের, আর গোঁফমুক্ত দাড়ি অশুভ-অসুর মৌলবাদী মুসলিমের ।
মানুষের সিদুঁরের দিকে হাত তুলে, পৈতার দিকে আঙ্গুল তুলে, লুঙ্গির ভিতরে মুখ ঢুকিয়ে জাত-ধর্ম সনাক্ত করার মতই চাপ দাড়ি দেখে জঙ্গি বাছাই করা যায়।
জর্জ বুশ আর ইজরায়েলকে শুধু শুধু গালি দেই আমরা । পৃথিবীর সব নিকৃষ্ট ঘটনার মাঝে মুসলিমের চুল, ডি এন এর সন্ধানের কাজটা প্রগতিশীল বাঙালিরাও যথার্থতার সাথেই করতে পারেন ।
শত শত দাড়ি চাছা বৈশাখ প্রিয় লম্পট যুবকের ভিড়ে এক গোঁফহীন দাড়িওয়ালা জীবের ঘিন ঘিনে অবাঞ্ছিত উপস্থিতি সানন্দে, সাগ্রহে উপস্থাপিত হলো।
কালো দাড়ি দেখতে তো ধর্মের মতই কুৎসিত আর অন্ধকার, মৌলবাদের উকুন ছাড়া আর কী চাষ হতে পারে সেখানে?