somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই রমজানে ঢাকায় তৈরি হয়ে যাক আরো কিছু মন্দির

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দিল্লীর কোন এক আওলিয়ার কাছে একজন খুশিমনে বলছিলেন। হযরত, দিল্লীতে বড়বড় অনেক মসজিদ হয়ে গেছে। সেই হযরত আফসোসের দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, দিল্লীর মুসলমানদের মসজিদে নিয়ে আস, সব বড় মসজিদই অপ্রতুল মনে হবে। বহু বছর পরের ঢাকার রমজানে হটাৎ করে সেই ঘটনাটিই মনে পড়ে গেল। সারা ঢাকা সেহরী আর ইফতারের বাজারে পরিণত হয়েছে, মসদিগুলো আবার একমাসের জন্য মুসল্লী দিয়ে ওভারলোডেড হয়ে গেছে। জনগণ যদি এই চান্সে মসজিদ কি জিনিষ শিখে নিত, সারা জীবনের জন্য জিতে যেত। এই কয়দিনেই ঢাকায় কয়েকটা নতুন নির্মিত মসজিদে নামাজের সুযোগ হল। রমজান বলেই জনারণ্যে পরিণত হচ্ছে প্রতি বেলাতেই, কিন্তু বাকি এগারো মাসের খবর জাননেওয়ালাই জানেন।

ঢাকা শহরে শেষ কবে নতুন মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছে আমি ঠিক জানিনা, কিন্তু সময়ের সাথে কিছু মন্দির আর কিছু অমুসলিম পরিবারের ভিটেমাটি খেয়ে ফেলা হয়েছে বিসমিল্লা বলে সেটা মোটামুটি ধরে নেয়া যায়। এই ধরণের আকাম যেই কুতুবেরা করেন, তাদের যদি কিঞ্চিত ধারণাও থাকত, সংখ্যালঘুর ওপর অন্যায় সুবিধা নিয়ে জাহান্নামে কি বিরাট প্যালেস তৈরি হচ্ছে, তাহলে আমাদের দেশ সর্বধর্মের জন্যই আরো আরামের থাকত। সম্রাট আলমগীরের সময়ে তার কোন এক সেনাপতি নারায়ে তকবীর দিয়ে পাঞ্জাবের কোন এক গ্রামের প্রাচীন মন্দির ধ্বংস করে দিয়ে সেখানে দিব্যি আজান দিয়ে মসজিদ তুলে কেল্লা ফতে করে ফেলল। সেই মন্দিরের পুরোহিত, বহু খড়কাঠ পুড়িয়ে দিল্লী এলেন বিচার চাইতে, এবং এক সুযোগে রাজদরবারে পৌছে নিজের অভিযোগও উপস্থাপন করলেন। ন্যায়পরায়ণ সুশাসক সম্রাট তদন্ত করে দেখলেন অভিযোগ সঠিক। তাই খোঁজ করলেন এই অবস্থায় কি করা যায়। এই সম্পর্কিত মাসায়ালায় পাওয়া গেল, কোন স্থান মসজিদ হিসেবে ব্যাবহৃত হলে সেখানে ভিন্ন প্রয়োজনে ব্যাবহার নিষিদ্ধ। তাই সেই পুরোহিতকে ডেকে নিজে ক্ষমা চেয়ে নিজের অক্ষমতার কথা জানালেন পূর্বস্থানে মন্দির পুনর্নির্মাণের। তবে এই সুযোগ দিলেন, যে পুরো মোঘল সম্রাজ্যের যেকোন স্থানে সে চাইলে মন্দির নির্মান করতে পারবে। সেই পুরোহিত তখন চাইল দিল্লীর মুসলিম ক্ষমতা আর শৌর্যের কেন্দ্র দিল্লী জুমা মসজিদের সিড়ির কাছেই যায়গা দেখিয়ে জানালো এখানেই চাই তার মন্দির। পরবর্তীতে সেখানেই নির্মাণ হয় সরকারী খরচে মন্দির। আমি নিজেও দিল্লী গিয়ে মনে হয় দেখেছিলাম সেই মন্দির। আজকে ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি যারা করে, তাদের ধমকানোর মত আল্লাহওয়ালাদের আর দেখিনা। হযরত ওমর (রাঃ) যখন গেলেন জেরুজালেমে সেখানকার অধিবাসীদের সাথে চুক্তির জন্য, সেই অধিবেশন ডাকা হয়েছিল সিনাগগ ( অথবা গীর্জা ঠিক মনে নেই) এর ভেতরে। আলোচনা চলাকালীণ নামাজের সময় হলে তিনি এই কারণে সেখানে নামাজ আদায় করেন নাই, যে পরবর্তীতে মুসলিমরা সেটার অন্যায্য সুবিধা নিয়ে সেই স্থান দখল করে নেবার চেষ্টা করতে পারে। আর একই সাথে আল্লাহর রাসুল (সঃ) মদীনার মসজিদে খ্রীস্টান প্রতিনিধিদের মসজিদের ভেতরেই তাদের উপাসনা করার সুযোগ দিয়েছিলেন বলে পড়েছিলাম কোথাও।

ঢাকার দেড়কোটি জনসংখ্যার মাঝে লাখ দশ পনের তো হিন্দু ধর্মাবলম্বী হবারই কথা, প্রতি বছরেই যেমন এক দুই ডজন নতুন মসজিদ গজিয়ে ওঠে নানা হাউজিং, প্রোজেক্ট আর কলোনিতে, একই সাথে বছরে তো এক আধটা মন্দিরও হবার কথা। কই কখনো তো শুনিনি সেই কথা। নিজে অনাহারী থেকে অমুসলিম কয়েদীদের খাদ্যের ব্যাবস্থা করা ছিল সেই সময়ের মুসলিমদের ক্যালিবার, আর নারাবাজী করে অসহায় মানুষের ওপর যুলম হল আজকের জমানার। তবে যেসব যালিমদের এসব সুকীর্তি, তারা যে নিজ স্বজাতির ওপরেও খুব সদয় তা নয়। নেকড়ের তো মেষবালকের রক্ত চোষার জন্য ছুতো লাগবেই।

বাবা আদমের দুনিয়ার ক্র্যাশ ল্যান্ডিং এর পরের বেশিরভাগ সময়েই কাটিয়েছেন এই ভারতে, আর নবীদের এক অংশ তাদের কর্মক্ষেত্র হিসেবে পেয়েছিলেন ভারতকে। কিছু গবেষকের মতেই প্রাচীন বেদের ভিত্তি ছিল নূহ নবীর ওপর পাঠানো সহীফার ওপরে। পরবর্তীতে কালে কালান্তরে গঞ্জিকার ধোঁয়ার সাথে বহু কূপমন্ডুকতা ঢুকে এখন কল্পনা, প্রতিমাপূজা আর বাগাড়ম্বরের এক আশ্চর্য মিশ্রণ আজকের হিন্দুধর্ম যার একনিষ্ঠ অনুসারী আমি লম্বা সময় ভারতে কাটিয়েও খুব বেশী পাইনি। তার পরেও প্রতিটি মানুষেরই এই পৃথিবীর জীবনে অধিকার আছে তার পরিচয় আর বিশ্বাসকে বেছে নেবার। আসল খেলা ফাইনাল চোখ বন্ধ হবার পরে।

রমজান রহমতের মাস, হকদারের হক বুঝিয়ে দেবার মাস আর আত্মশুদ্ধির মাস। তাই রমজানের আমেজে বলা যায় ঢাকার জনসংখ্যার হিসেবে মন্দিরগুলি কোথায় হওয়া উচিৎ একটু খোঁজ নেয়া যাক।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ২:০৮
৪১টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×