somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাঁচতারা হোটেলে নিউইয়র্কের ভিক্ষুক আর আমার অংক

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



তীব্র শীতে গৃহহীনদের নিউইয়র্ক সিটি মেয়র হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন । যার প্রতি রাতের ভাড়া ৬০০ ডলার বা ৪৮০০০ টাকা ।তাও আবার টাইমস স্কয়ারের মতো জায়গায় । আমার পুরো মাসের বাসা ভাড়া ১০০০ ডলার যা কিনা সম্ভবত ৮০০০০ টাকার মতো । এর মানে আমার জীবন মান এখানকার গৃহহীনদের থেকে প্রায় ১৮ থেকে ২০ গুন্ খারাপ বা নিচে । কিন্তু প্রশ্ন জাগতে পারে মেয়র এদের হোটেলে না রেখে কোন বাসা ভাড়া করে রাখতে পারতো বা আরো কম দামের কোন হোটেলে রাখতে পারতো । তা না করে নিউইয়র্কের সবচেয়ে দামী হোটেলগুলোর একটির প্রায় ৮০০ রুম এক সাথে ভাড়া নেয়া হলো এই গৃহহীনদের জন্য । কেন ? বড় বড় দেশের বড় বড় ব্যাপার । টাইমস স্কয়ারের ফকির কি আমার বাসায় থাকবে । মোটেও না ।



এখানে মেয়র চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে । একদিকে যেমন রাস্তার ভিক্ষুককে তুলে নিয়ে পাঁচ তারা হোটেলে রাখতে পারে । ঠিক তেমনি নিজে মুহূর্তে সেই ভিক্ষুকের চেয়ে নিচে নেমে আরো বাজে ভাবে ভিক্ষে করতে পারে ।

সম্প্রতি নিউইয়র্কের মেয়র ওবামা প্রশাসনের কাছে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ডলার এক্সট্রা বাজেট চেয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প এর নিরাপত্তার জন্য । এর কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প এই নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারের পাশেই থাকেন । সুতরাং বাড়তি পুলিশ আর নিরাপত্তার জন্য বাড়তি ৩৫ মিলিয়ন ডলার মেয়র চাইতেই পারে ।কিন্তু ওবামা প্রশাসন মেয়রের চাওয়ার মাত্র ২০ ভাগ বাজেট অনুমোদন করে । আর এতেই মেয়র মহোদয় আমার মতো গৃহহীনদের চেয়েও অধমের মতো আরো অনেককে ইমেইল করেন । যার ভাষা অনেকটা এই রকম ।"ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তার কারণে নিউ ইয়র্কের অপরাধ গেলো নভেম্বর মাসের চেয়ে ১০ ভাগ বেড়ে গেছে । এখন এই ৩৫ মিলিয়ন ডলার না পেলে আরো খারাপ অবস্থা হতে পারে । সুতরাং ওবামা প্রশাসনকে চাপ দেবার জন্য একটা পিটিশন করতে হবে ।"



আমার ঠিক মাথায় আসে না যেখানে প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার জন্য মেয়রের কাছে টাকা নেই সেখানে রাস্তার ভিক্ষুকদের পাঁচ তারা হোটেলে রাখার বিল কে দেবে ? গরিব আর বড়লোকের সংজ্ঞা যে পুরোপুরি আপেক্ষিক তা হয়তো এখন বুজতে পারছেন . ক্ষনিকের জন্য হলেও আত্মতৃপ্তি পেতে পারেন এই ভেবে ।

এবার আসুন আসল ঘটনা জানি কিভাবে বা কেন রাস্তার ভিক্ষুকদের এতো দামী হোটেলে রাখলো নিউইয়র্কের মেয়র ?

মার্কিন প্রশাসনের কোন কাজ প্রশাসনের লোকজন করে না । এদের কাজ কন্ট্রাক্ট দেয়া । মানে এই রাস্তার ভিক্ষুকদের সাময়িক শেল্টার বা আবাসন দেবার জন্য সিটি মেয়র স্ট্রিংগার নামের এক কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয় । যেখানে বলা থাকে টাইমস স্কয়ার এলাকার ভিক্ষুকদের এই এলাকাতেই রাখতে হবে ।এখন টাইমস স্কয়ার এলাকার আসে পাশে যেহেতু কম দামী কোন হোটেল বা বাসা নেই অজ্ঞতা এই ব্যবস্থা ।

আমেরিকানরা প্রায় সব কাজেই কন্ট্রাক্টর দিয়ে করায় । মানে ধরুন হটাৎ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর ইডিয়ান ফুড খেতে ইচ্ছে হলো । এরপর এর জন্য একজন কন্ট্রাক্টর নিয়োগ করা হবে । যার কাজ আরেকজন কাওকে নিয়োগ করা যে ইন্ডিয়ান খাবার কোথায় আছে তা খুঁজে বের করবে । এভাবে অনেকগুলো কন্ট্রাক্ট এর পর হয়তো আমার মতো কোন একজন বাঙালি সেই ইন্ডিয়ান খাবার পৌঁছে দেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প এর সামনে । খুব সম্ভবত এটাই কসমোপলিটান শহরের বাস্তবতা । যেখানে মানুষের আসল পরিচয়ই হারিয়ে যায় বাস্তবতার ধাক্কায় ।এটা একটা উধাহরন । আমেরিকার প্রায় সব কাজেই অনেকটা এই রকম ।

আর ঠিক এই কারণেই আজ ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো লোক সাধারণ আমেরিকানদের কাছে এতো প্রিয় । লাল ফিতার দৌরাত্ম কি জিনিস সেটা যারা এই দেশে কাজ কর্ম করে খায় তারা জানেন । তবে আপনি যদি রাস্তায় ভিক্ষে করেন তবে নিঃস্বন্দেহে আপনি সবার চেয়ে ভালো থাকবেন । অন্তত এই দেশে । কারণ আপনাকে পুঁজি করে অনেক কন্ট্রাক্টর বেঁচে আছে । অনেকটাই আমাদের দেশের মতো ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:০১
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×