somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ন্যায়পালের পে-পাল ও সুতোর প্যাচ

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত এক বছর যাবৎ প্রতি সপ্তাহে পে-পাল দিয়ে নিউ ইয়র্ক থেকে দেশে টাকা পাঠাই আমি । আমার কোনো পে-পাল একাউন্ট নেই । আমার স্ত্রীরও কোন পে-পাল একাউন্ট নেই । আমরা খুব ভালো ভাবেই টাকার আদান প্রদান করি । আমি আমার ডেবিট কার্ড দিয়ে মোবাইল থেকে মুহূর্তের মধ্যে এই কাজটি সেরে আসছি গত একটা বছর। ঠিক কি কারণে এখন ঘটা করে এই সার্ভিসটির এতো আয়োজন আমার বোধগম্য নয় । অনেক কিছুই হয়তো আমার বোধগম্য হচ্ছে না বেশ কিছুদিন ধরে । ঠিক কিভাবে দেশে নীল তিমির গেমটা খেলে সবাই বা ঠিক কিভাবে উবার এর মতো সার্ভিসে চলে দেশের রাস্তায় ? অনেক কিছুই ।

আমার বোধের উপর বোধ করি দেশ চলেনা । বোধের কথা না হয় বাদই দিলাম । যেখানে সুবোধ থাকে দৌড়ের উপর । আমার বোধ তো নস্যি । দেশ চালানোর জন্য অনেক মন্ত্রণলায় আছে । আছে বেশ জ্ঞানী গুণী বোধ সম্পন্ন মানুষজন । জ্ঞানী মানুষের সমস্যা হলো উনারা চোখ বন্ধ করে ভাবেন । আর তাতেই উনাদের মনে হয় কেওই কিছু দেখছেন না । নিজের বন্ধ করা চোখের অন্ধ বিশ্বাসে দেশে ঢুকে পরে উবার , নীল তিমি অথবা জুম এর নামে পে-পাল । আর সাধারণ মানুষ জন অজ্ঞান অবস্থায় উঠে পড়েন উবারে বা খেলে ফেলেন নীল তিমির মতো ডার্ক ওয়েব এর গেম গুলো ।

পে-পাল নিয়ে সরকারের আই সি টি মন্ত্রনণালয়ের উচ্ছাসের শেষ নেই । এই পে-পালের মাদ্ধমেই নাকি আমাদের উঠতি প্রজন্মের স্মার্ট জেনেরেশনরা বাইরে থেকে রেমিটেন্স এনে দিবে দেশকে । যে জেনেরেশন রিয়েল আই পি ছাড়া ডার্ক ওয়েভ এর নীল তিমি গেম খেলে ছাদ থেকে লাফিয়ে মরে তারা এনে দিবে দেশে রেমিটেন্স ? তাহলে আমি কি করছি নিউ ইয়র্কে ? গত এক বছর এতোগুলু টাকা জুম পে-পালের মাধ্যমে কোথায় পাঠালাম ? খুব সম্ভবত আগামী সপ্তাহ থেকে আমি হুন্ডি দিয়ে কিভাবে দেশে টাকা পাঠাতে হয় তা নিয়ে আগ্রহী হতে পারি । কারণ নিউ ইয়র্ক থেকে আমার কিঞ্চিৎ অপমান বোধ হতেই পারে । বোধ করি এতে কারো আপত্তি থাকার কথা না ।

আই সি টি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয় আমার অসম্ভব প্রিয় একজন মানুষ । বেশ সাদা মনের । উনি মন্ত্রী হয়ে এখনো থাকেন এম পি হোস্টেলে । চড়েন ট্যাক্সি-রিক্সায় । এই অসম্ভব ভালো মানুষটি আমার কাছে একজন ন্যায় পালের মতো ব্যাক্তিত্ব । আদর্শের কাছে জিতে যাওয়া এই মন্ত্রী মহোদয় স্বাভাবিক ভাবেই উবার বা নীল তিমি অথবা পে-পালের মতো ভার্চুয়াল জগতের মার্ প্যাচ নিয়ে বেশ যন্ত্রনায় থাকতে পারেন । কিন্তু উনাকে যারা ডিটেইলিং দেন উনারা বেশ জটিল ধরণের মানুষ জন । আছেন দেশ সেরা আই টি বিশেষজ্ঞ ।আছেন নামকরা বিজ্ঞানীরা । তাহলে প্রশ্ন হলো কিভাবে এবং কেন আমি যে জুম পে-পাল গত এক বছর যাবৎ ব্যবহার করছি তা এতদিন পর দেশে উদ্ভোধন হচ্ছে ?অথবা ঠিক কোন লিংক এ দেশে নীল তিমি জাতীয় গেম খেলা হচ্ছে ? অথবা উবারের ভাড়া বাবদ কেটে রাখা টাকার ট্যাক্স সরকার ঠিক কিভাবে পাচ্ছে ?

আমার দুই মেয়ে । একজন এর বয়স ৭ আর একজনের ২ বছর । বড় মেয়ের ডিটেইলিং এর অবস্থা খুবই বাজে । ও একসাথে অনেক্ষন ধরে বসে কিছু করতে পারে না । অস্থির হয়ে উঠে । যেটাকে আমরা ধৈর্যের অভাব বলি । ওর জন্য একটা খেলা বানানো হলো । ছোট জনকে দিয়ে একটা সুতোতে প্যাচ লাগিয়ে দেয়া হবে আর বড় জন ওই প্যাচ খুলবে আমার সামনে । আমি আই পি ক্যামেরা দিয়ে দেখবো কতটা ডিটেইলিং এর মাধ্যমে আমার বড় মেয়ে সুতোর প্যাচ খুলতে পারে । সুতোর প্যাচ খোলার এই ধৈর্য পরীক্ষা আমরা অনেকেই পারবো না । কারণ আমরা পত্রিকার শিরোনাম পড়ে বাকি খবরটা চোখ বন্ধ করে নিজেরা বানিয়ে ফেলি । যেহেতু বেশীর ভাগ আমরা জ্ঞানী ধরণের মানুষ । আমরা চোখ বন্ধ করলেই আমাদের দুনিয়া শুরু হয়ে যায় । সুতোর প্যাচ খোলাটা জরুরি কিছু না । বিষয় হলো কত তাড়াতাড়ি আমরা নিজেদের গল্প বানাতে পারি । হোক উবার , হোক নীল তিমি অথবা পে-পাল ।

আমরা যারা দেশের বাইরে থাকি তারা দেশ নিয়ে সব সময় গর্ব করার চেষ্টা করি । দেশের কিছু গর্ব করার মতো থাকলে তা আসে পাশের সবাইকে বলি । কিন্তু দেশ যখন বাতিল জিনিস নিয়ে এতো মাতামাটি করে তখন এই রকম লেখা ইংরেজিতে লিখতে ভয় হয় । এখানে আমার আসে পাশের মানুষ গুলু যদি বুজতে পারে অবশ্যই এরা আমার দেশ নিয়ে হাসবে ।

সুতোর প্যাচ খোলাটা বেশ জরুরি । আর এর মধ্যেই অভিজ্ঞতা আর চঞ্চল তারুণ্যের পার্থক্য । ন্যায়পাল হতে সুতোর প্যাচ খুলতে হয় না । কিন্তু দেশের জন্য কিছু করতে সুতোর জট অবশ্যই খোলা জরুরি ।

পরিশেষে সকল ক্ষার এই ক্ষারক কিন্তু সকল ক্ষারকই ক্ষার না । এই সূত্র মতে জুম পে- পালের একটা অংশ হলেও কিন্তু পে -পাল না । এখন এই সুতোর প্যাচ খোলার দায়িত্ব আপনাদের ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:১৫
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×