মুসলমানেরা তাদের কথায় খলিফা ওমরের গল্প করে, কিন্তু ওবামা, মারকেল, ক্যমেরণের দেশে যাবার জন্য ভিসা বা বিনা-ভিসায় রওয়ানা হয়ে যায়; সিরিয়ার সিভিল ওয়ারের ভিকটিমরা লন্ডন যেতে চায়, কিন্তু সৌদী আরব, ইরান, পাকিস্তান বা বাংলাদেশে আসতে চায় না। ব্যাপারটা কি?
তারা গল্ল করে কোন এক বিচারক 'শুরাইয়া'র, যিনি খলিফা ওমর ও ঘোড়া বিক্রেতার বিচার করেছিল; তারা শরীয়া আইনের প্রয়োগ চায়, কিন্তু পুলিশে ধরলে, নিজের পক্ষে বৃটিশ উকিল নিয়োগ করতে চায়; অথবা ঢাকার বিচার বাদ দিয়ে হেগের বিচার কক্ষে যেতে চায়।
অসুস্হ হলে, তারা তাবিজ তুমারের কথা বলে; যখন চিকিৎসার দরকার হয়, তখন চলে যায় নিউিয়র্ক, কানাডা, লন্ডন বা সিংগাপুর।
কোন খৃস্টান থাকার জন্য, চিকিৎসার জন্য, বিচারের জন্য মুসলিম দেশে আসে না।
এগুলোর কারণ কি?
কারণ বোধ হয় সহজ; ইসলামের শুরুতে মক্কা, মদীনায় ছিল সামন্তবাদ, জমিদারী; তারপর, আরবেরা রাজতন্ত্রের স্বাদ পায়; রাজতন্ত্রে মুসলামানেরা ভালো করেছিল, ১ম বিশ্ব যুদ্ধ অবধি এক বিরাট সাম্রাজ্য টিকে ছিল। ২য় বিশ্ব যু্দ্ধের পর রাজতণ্ত্র টিকানো মোটসমুটি অস্ভব।
সমস্যা হলো, রাজতন্ত্রের বিলোপের পর, বিশ্বে যখন গণতন্ত্র এলো, তারা নিজদের নতুন করে গড়ে তুলতে পারেনি। সাধারণ মানুষ যত তাড়াতাড়ি বদলাচ্ছে, তাদের রাজনীতিবিদরা বদলাচ্ছে না, তাদের সরকারগুলো বদলাচ্ছে না; তারা এখনো খলিফা ওমরের যুগে থাকতে চায়, ঘোড়ার বদলে মার্চেডিস গাড়ী চালায়ে; কিন্তু বুঝতে পারে না যে, ওমর কাঁধে আটার বস্তা নিয়ে রাতে হাঁটতে পেরেছিলেন; শেখ হাসিনা দিনে হেঁটেও মতিঝিল থেকে পল্টন যেতে পারবে না।
আর কাজী শুরাইয়া'র ঘোড়ার বিচারের দিন শেস হয়ে গেছে, দরকার হলো, মালয়েশিয়া ফ্লাইটে যারা মরেছে, তাদের জন্য কারা কিভাবে ক্ষতিপুরণ দেবে তা নির্ধারণ করার মতো সুক্ষ্ম ক্ষমতা সম্পন্ন বিচারক।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৫