পানাম নগর
হাজার বছরের প্রাচীন নগর সূবর্ণগ্রাম ছিল পূর্ব বাংলার অন্যতম রাজধানী ও নদীবন্দর। আজকের সোনারগাঁ প্রাচীন সূবর্ণগ্রাম বলে ঐতিহাসিকগণ মনে করেন। এই সূবর্ণগ্রামেই তের শতকের স্থানীয় হিন্দু রাজা দনুজমাধব দশরথদেব তাঁর শাসনকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গ অঞ্চল মুসলিম শাসনে আসার পর থেকে ১৬১০ সালের পূর্ব পর্যন্ত সোনারগাঁও ছিল স্বাধীন সুলতানী বাংলার অন্যতম রাজধানী ও প্রশাসনিক কেন্দ্র। ঔপনিবেশিক সময়কালে ও এই এলাকায় বাণিজ্যিক, আবাসিক, ধর্মীয় কেন্দ্রিক স্থাপত্য কর্ম নির্মিত হয়েছে।
রাজধানী ঢাকা থেকে ৩০ কি.মি. দক্ষিণ পূর্বে পানাম নগরের অবস্থান। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে ধনাঢ্য হিন্দু বণিক দ্বারা পানাম নগরের গোড়া পত্তন ঘটে। পূর্ব দক্ষিণে বিস্তৃত প্রায় ৬০০ মিটার দীর্ঘ ও ৫ মিটার প্রশস্ত একটি সড়কের দুইপাশে সুরম্য মোট ৫২ টি ভবন নিয়ে পানাম নগর। ভবনগুলির অধিকাংশ আয়তাকার এবং উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত। উচ্চতা একতলা থেকে তিনতলা। স্থাপত্যশৈলিীতে ইউরিপীয় শিল্পরীতির সাথে মুঘল শিল্পরীতির মিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া নির্মাণ শৈলীতে স্থানীয় কারিগরদের শিল্প কুশলতার প্রয়োগ ও ঘটেছে। বিভিন্ন পরিমাপের ইটের সঙ্গে চুন সুরকীর আস্তর দিয়ে নির্মিত ভবন সমূহে ব্যবহৃত হয়েছে মোজাইক, রঙিন কাঁচ, চিনিটিকরী, ছাদে কাঠের বীমবর্গা। চমৎকার স্টাকো অলংকরণে সমৃদ্ধ ভবনসমূহের দুইপাশে পরিবেষ্টিত পরিখা, ঘাটসহ পুকুর ও অনেকগুলো কূপ রয়েছে। ভবনসমূহের মধ্যে প্রাপ্ত লিপি অনুযায়ী কাশীনাথ ভবন (১৩০৫ বঙ্গাব্দে নির্মিত), নীহারিকা ভবন এর নামকরণ পাওয়া যায়। পানাম নগরীর পার্শ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে বড় সর্দারবাড়ি, ছোট সর্দারবাড়ি, পানাম সেতু, গোয়ালদী মসজিদ, মঠ, পোদ্দারবাড়ি টাকশাল, গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের সমাধি উল্লেখযোগ্য।
ছবিঃ ০১
ছবিঃ ০২
ছবিঃ ০৩
ছবিঃ ০৪
ছবিঃ ০৫
ছবিঃ ০৬
ছবিঃ ০৭
ছবিঃ ০৮
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৯