আমি যে ধারায় কবিতা লিখেছি, এরকম ছন্দ ও অন্তমিল দিয়ে কোন কবিতা এর আগে সৃষ্টি হয়েছে কিনা আমার চোখে পড়েনি।
বহু মাত্রিক অন্তমিল , ১ম লাইন এর পর প্রতি তিন লাইন এ চারটি করে শব্দের প্রত্যেক শব্দে অন্তমিল রেখে এবং কবিতার ১ম লাইন ও প্রত্যেক প্যারার শেষের লাইনে অন্তমিল এর ছান্দিক একটি কবিতা ।
বিঃদ্রঃ অনেকেই আছেন যারা ভালো কবিতা লেখেন। আমার কবিতা হয়তো সেরকম হয়নি। আমার জানার বিষয় হলো আমার আগে আমার এই কবিতাটির মত অন্তমিলে কোন কবি কোন লিখেছেন কি? লিখে থাকলে কবিতা সহ তাঁর নাম উল্যেখ চাই।
অনেকের জন্য সুবিধা ভেবে আমি কবিতার সাথে ব্যবহৃত শব্দার্থ এবং কবিতাটির ভাবার্থ সংযুক্ত করেছি (ভিন্ন প্যারার ভাবার্থ ভিন্ন প্যারা করে দেয়া হয়েছে)।
আধুনিক কাল
মরণ পথে চলছে জীবন,
সুখ গতি যাচ্ছে কমে
দুঃখ অতি বাড়ছে দমে
বক্ষ ব্যাধি আসছে নেমে
ক্ষিতির শান্তি হচেছ হরণ ।
মানুষ শুধু সুখকে খুঁজে
ফানুস মধু চক্ষে মুজে
মানস বধু রক্ষে কুঁজে
চাইছে বৃথাই আনতে রতন ।
রাজা লুটে প্রজার কড়ি
সাজা খাটে পূজার পরি
মাজা টুটে লাচার হরি
এমনি ঘটছে সময় গড়ন ।
যতই চায় পেতে সুখ
ততই যায় বেধে দুখ্
কতই হায় কাঁদে বুক
হয়না তবু সুখকে বরণ ।
খুনে সারা রাঙা ধরা
ঘুণে ধরা চাঙা ঘোড়া
গুণে ফেরা ডাঙা থোরা
হয়, খুজে পায়না তোরণ ।
(১৬/০৯/০৭)
জেগে উঠুক বাঘের দল
দেখে ভাগুক ছাগের খল
চোখে আসুক সুখের জল
যাহোক ভালে, জীবন মরণ ।। (সংস্করণ ০৫/০১/০৯)
শব্দার্থঃ
বক্ষ = বুক ।
ব্যাধি = রোগ, জরা ।
ক্ষিতি = পৃথিবী ।
ফানুস = স্বপ্ন ।
মানস = মন, মানব-হৃদয় ।
কুঁজ = পিঠের উপর উঁচু অংশ ।
মাজা = কোমর ।
টুটা = ভেঙে যাওয়া ।
লাচার = অসহায় অবস্থ ।
হরি = শিব, ত্রাণকর্তা ।
গড়ন = পরিক্রমণ, অতিবাহিত হওয়া ।
ছাগ = ছাগল, এখানে নীচ প্রকৃতির নরপশুকে চিহ্নিত করা হয়েছে ।
খল = অতি দুর্বৃত্ত লোক, দুর্জন ।
তোরণ= দ্বার, প্রবেশ পথ দরজা।
ভাল = কপাল, এখানে ভাগ্য ।
ভাবার্থ সংক্ষেপঃ মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে সে ধাবিত হতে থাকে মৃত্যুর পথে । শুধু মানুষই নয় সকল প্রাণীর ক্ষেত্রেই একথা ধ্রুব সত্য । এক কথায় সমগ্র পৃথিবীটাই দিনে দিনে এগুচ্ছে ধ্বংসের দিকে । এই পরিক্রমণের বর্তমানকালে মানুষের মনে সুখ-শান্তির ঘাটতি দেখা দিচেছ এবং ক্রমশ তা আরো হ্রাস পাচ্ছে । নিশ্বাসে নিশ্বাসে যেন বৃদ্ধি পাচ্ছে মানুষের দুঃখ-কষ্ট । কলুষতা গোটা পৃথিবীকে গ্রাস করেছে । মানব-মনের আনন্দ আস্তে আস্তে উবে যাচ্ছে ।
তথাপি মানুষের চিরদিনের কাম্য সুখকে মানুষ অন্বেষণ করেই যাচ্ছে শুধু, কিন্তু নেই তাদের সঠিক ও উৎকৃষ্ট চেষ্টা-সাধনা । চোখের মাঝে সে প্রতিনিয়ত গড়ছে রঙিন সুখের স্বপ্নরাজ্য । সবাই নিজের মত করে নিজ মনোবাসনা যতনে সাজিয়ে সংরক্ষণ করছে বুকে, যাতে সুযোগে সে মনোবাঞ্ছনা সঠিক রূপে রূপায়ণ করতে পারে । কিন্তু মানব-মনের সে ভাবনার, চোখের সে স্বপ্নের ও বুকের সে আশার কিঞ্চিৎ পরিমাণই বাস্তব রূপ লাভ করছে । সিংহভাগই হয়ে যাচ্ছে বৃথা ।
তামাম বিশ্বে চলছে অন্যায়, অবিচার আর ধ্বংসের কাল ছোবল । ধনী ও প্রভাবশালীরা গ্রাস করছে হতদরিদ্র ও বলহীনদের সম্পদ । যাঁরা সমাজে শ্রদ্ধার পাত্র তাদের মুল্যায়ন ব্যতিরেকে অশ্রদ্ধা ও অবহেলাই করা হচ্ছে । যাঁরা ছিল যুগে যুগে মানব-কল্যাণ ও শান্তিকামি ত্রাণকর্তা, তাঁরাই আজ পদদলিত ও চরম অসহায় ।
এখন মানুষের সুখ চাওয়ার সমানুপাতিক হারে শুধু দুঃখই বেড়ে চলছে । তাই তারা শুধু নিষ্ফল রোদন করেই যাচ্ছে, মিলছেনা কোন কাম্য আশ্বাস বাণী ।
পৃথিবীটা এখন রুধির রঙে রঞ্জিত । হানাহানি, দ্বন্দ্ব আর খুনের উৎসব আজ চারদিকে । পৃথিবীতে যাঁরা উদ্ধারকারী ও মুক্তির পথ প্রদর্শক ছিল তাঁরা আজ স্তিমিত ও নিস্তেজ হয়ে পরেছে । সাধারণ মানুষ শুধু সন্তরণ করে যাচ্ছে মুক্তি-ভুমিতে আরোহণের জন্য। অবশেষে তারা খুঁজে পাচ্ছেনা শৃঙ্খলহীন পথ ।
তাই কবি বীর ব্যাঘ্রের দল কে তথা তরুণ দল কে জেগে উঠতে বলেছে । যাতে করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারি নীচ প্রকৃতির নরপশু, অসাধু ও দুর্বৃত্তরা দমে যায় এবং বীরেরা যেন এই বিপর্যয়ের মধ্য থেকে পৃথিবীকে উদ্ধার করে । যাতে করে এই ধরার বাসিন্দাদের চোখের কোনে গড়িয়ে পরে সুখের অশ্রু ।
অনেক কষ্ট করে পড়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। আরেকটু কষ্ট করুন। অন্তত একটা মন্তব্য দিয়ে গন্তব্যে যান।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




