কথাচ্ছলে মহাভারত - ১৪
জরৎকারু পত্নীকে রেখে চলে গেলেন। জরৎকারী অশ্রুজলপূর্ণ চক্ষে, বুকে করাঘাত করতে করতে ভ্রাতৃগৃহে আশ্রয় নিলেন।
বোনকে কাঁদতে কাঁদতে ফিরে আসতে দেখে বাসুকি চমকে উঠলেন। মুখে কথা খুঁজে পেলেন না।
বাসুকি কান্নার কারণ জানতে চাইলে জরৎকারী বললেন –মুনি আমায় ছেড়ে বনে চলে গেছেন।
শুনে বাসুকি বিষণ্ণ হয়ে গেলেন। একে মায়ের শাপে সব সময় ভীত, তার উপর এই দূর্ঘটনা!
বোনকে বললেন –তোমায় জিজ্ঞাসা করতে লজ্জা করছে। তবু তুমি দয়া করে বল, তোমার গর্ভে জরৎকারুর পুত্র এসেছে কিনা। তার কারণেই তোমায় চিরদিনের জন্য জরৎকারুকে দিলাম। এদিকে সন্তান এখনও হয়নি, অথচ মুনি চলে গেলেন। মাতৃশাপের কি হবে! লজ্জা করলেও আমরা সব ভাইরা চিন্তিত, সত্য কথা বল, বোন!
সলজ্জ ভাবে জরৎকারী জানালেন –তোমাদের দুঃখের সব কথাই জানি। মুনি চলে যাচ্ছেন দেখে আমি তার পায়ে পড়ি। তিনি ‘অস্তি, অস্তি’ বলে আমার গর্ভে আশির্বাদ করেন। এবং বলেন দুই কুলেরই সে রক্ষা করবে। এই বলে তিনি বনে যান। তোমরা চিন্তা ত্যাগ কর, মুনির বাক্য মিথ্যা হবে না।
জরৎকারীর কথা শুনে খুশিতে সব নাগ ভাইরা উৎসবে মেতে উঠল। আনন্দিত বাসুকি রাজা বোনকে পূজা করে, নানা অলঙ্কারে সাজালেন।
শেষে সব উৎসবের পর একান্তে বোনকে ডেকে কি কারণে মুনি ছেড়ে গেলেন জানতে চাইলেন। জরৎকারী সমস্ত ঘটনা দাদাকে বললেন। সব শুনে বাসুকি অবাক হলেন।
শেষে বললেন –ভালই হয়েছে ব্রাহ্মণ বনে গেছে। বোন তুমি দুঃখ করো না। এই গৃহ নিজের ভেবে সুখে থাক। তুমি আমার গৃহে দেবীর মত থাকবে। সহস্র ভ্রাতা এবং তাদের স্ত্রীরা তোমার সেবা করবে।
এই বলে বাসুকি সবাইকে ডেকে সে আদেশ দিয়ে সবাইকে তার সেবায় নিযুক্ত করলেন।
এভাবে জরৎকারী সব দুঃখ ভুলে ভাইদের সাথে থাকতে লাগলেন।
নির্দিষ্ট সময়ে কোল আলো করে তিনি একটি শিশুপুত্র জন্ম দিলেন। শিশুটি খুবই সুন্দর, পূর্ণ শশীর মত তার রূপ। সব নাগরা তাকে দেখে আনন্দিত হল। রূপে গুণে অনুপম শিশুটির নাম রাখা হল –আস্তীক। যেহেতু গৃহ ত্যাগের সময় পিতা এ কথাই উচ্চারণ করেন, তাই এই নামকরণ।
শৈশব থেকেই পুত্র সর্ব গুণে গুণান্বিত। বেদ, বিদ্যা, ব্রতে পারঙ্গম।
আস্তীকের জন্মকথা অপূর্ব ভারত গাঁথা। তা শুনলে সব অধর্ম নাশ হয়। কমলাকান্তের পুত্র কাশীদাস এই গাঁথা রচনা করেন।
মনসা/জরৎকারী
..........................................
উৎসর্গ: সকল ব্লগার বন্ধুকে
..........................................
আগের পর্ব:
কথাচ্ছলে মহাভারত - ১৩
Click This Link
সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো
রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন
যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে
ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মসজিদ না কী মার্কেট!
চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷
আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন