somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাল ও গম আমদানি কমলেও পেঁয়াজ আমদানি বাড়ছে

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে চাল ও গম আমদানি কমছে। বাড়ছে পেঁয়াজ আমদানি। মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির দিকেও ব্যবসায়ীরা নজর দিয়েছেন। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের ঋণপত্রের (এলসি) ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, ছয়মাসের ব্যবধানে চাল ও গম আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার কমেছে ২৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ। পাশাপাশি পেঁয়াজ আমদানিতে ঋণপত্র খোলার হার অর্ধেকেরও বেশি বেড়েছে। এছাড়া মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে ২৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার কমলেও নিষ্পত্তির হার বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে ৬৬৪ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭১৩ কোটি ৭ লাখ ডলার। সে হিসাবে অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলার হার ১ দশমিক শূণ্য ৪ শতাংশ কমেছে। তবে এ সময়ে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র নিষ্পত্তি বেড়েছে ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এদিকে চাল আমদানিতে ঋণপত্র খোলা ও নিষ্পত্তির হার কমলেও পেঁয়াজ আমদানি বেড়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময়ে খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি তেল আমদানিতে ঋণপত্র খোলার হার অনেক কমে গেছে। তবে শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর এই ছয়মাসে খাদ্যপণ্যের মধ্যে চাল ও গমের আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৬৪ কোটি ৬১ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮৮ কোটি ৫০ লাখ। সে হিসাবে খাদ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলা কমেছে ২৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ। একই সঙ্গে খাদ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র নিষ্পত্তি কমেছে ৮ দশমিক শূণ্য ৮ শতাংশ। গেল ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তার আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে খাদ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলা ও নিষ্পত্তি বেড়েছিল ৩০ দশমিক ৩২ শতাংশ ও দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ সময়ে পেট্রোলিয়াম তথা জ্বালানি তেল আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে ১১৮ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৩ শতাংশ কম। গেল অর্থবছরের একই সময়ে এই পণ্যটির এলসি খোলা হয়েছিল ২০৭ কোটি ডলারের। এ সময়ে পেট্রোলিয়াম পণ্যের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ১৪৪ কোটি ডলার, যা গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৯ শতাংশ কম।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব মতে, আলোচ্য সময়ে চাল আমদানিতে এলসি খোলার হার কমেছে ৬৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ ও নিষ্পত্তির হার কমেছে ৬২ দশমিক ১৮ শতাংশ, গমের ক্ষেত্রে এলসি খোলা কমেছে ৪ দশমকি ৯০ শতাংশ ও নিষ্পত্তি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ, মুসরের ডালে খোলার হার কমছে ১২ দশমকি ৫৪ শতাংশ নিষ্পত্তির হার কমেছে ২২ দশমিক ৬৪ শতাংশ, দুগ্ধজাত পণ্যে কমছে ৩১ দশমকি ৮২ শতাংশ এবং চিনিতে কমছে ৩১ দশমকি ৪৭ শতাংশ। চালের আমদানি কমার কারণ হিসেবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকার চালের ওপর ২০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করায় পণ্যটির এলসি খোলার হার কমছে। এছাড়া সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে কঠোর নজরদারিতে রেখেছে। এর ফলে এলসি খোলা ও নিষ্পত্তির হার কমেছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

এদিকে চালের আমদানি কমলেও বেড়েছে পেঁয়াজ আমদানি। আলোচিত সময়ে পেঁয়াজ আমদানিতে এলসি খোলা হার বেড়েছে ৫৯ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং নিষ্পত্তি বেড়েছে ৫৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর এই ছয়মাসে পেঁয়াজের আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছে ১৭ কোটি ২৩ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১০ কোটি ৮২ লাখ।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ঋণপত্র খোলা হয়েছে ২৪০ কোটি ডলার, যা গেল অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে ছিল ১৮৬ কোটি ডলার। সে হিসাবে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ঋণপত্র খোলা বেড়েছে ২৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আর এ সময়ে ১৬৯ কোটি ডলারের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি নিষ্পত্তি হয়েছে, যা গেল অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৪৭ কোটি ডলার। এ হিসাবে মূলধনী যন্ত্রপাতির নিষ্পত্তি বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক জায়েদ বখত বলেন, পদ্মা সেতু, মগবাজার-মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল এবং কয়েকটি বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শুরু হয়েছে। এ সব ‘মেগা প্রকল্পের’ কাজ শেষ হলে দেশে শিল্প খাতের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। এ সব বিবেচনায় নিয়েই আমাদের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা বিদ্যমান শিল্প প্রতিষ্ঠানের পাশপাশি নতুন নতুন শিল্পের জন্য মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করছেন। ভবিষ্যৎ ব্যবসা মাথায় রেখেই তারা এটা করছেন। আর দেশে ‘স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশে’ বিরাজ করায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে সেই আস্থা ফিরতে শুরু করেছে বলে মনে করেন অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত।

প্রতিবেদনে আরো দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে শিল্পের কাঁচামালের আমদানি ঋণপত্র খোলা ও নিষ্পত্তি বেড়েছে যথাক্রমে ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ ও দশমিক ৫২ শতাংশ। এ সময়ে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৮২৫ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, যা গেল অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭৯১ কোটি ৮২ লাখ। আর এ সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতির এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ৭৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, যা গেল অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭৬২ কোটি ৬০ লাখ। আলোচ্য সময়ে খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের ভোগ্যপণ্য আমদানিও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এ সময়ে ভোগ্যপণ্যের আমদানিতে মোট ২৩২ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম। একই সময়ে ২৩৩ কোটি ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ কম।

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×