সুমন আর অধরার সম্পর্কের আট বছর হয়ে গেছে। সুমন আর অধরা দু’জন দু’জনকে অনেক ভালবাসে। প্রতিদিন ধানমন্ডি লেকে তাদের দেখা হয়। রবীন্দ্র সরোবরের কাছে কফি খেতে খেতে প্রতিদিন দু’জন সন্ধ্যা পর্যন্ত গল্প করে। এটা তাদের নির্দিষ্ট ডেটিং প্লেস বলা যায়। মাঝে মাঝে অবশ্য টি.এস.সি বা বসুন্ধরা সিটির রুফটপ রেস্টুরেন্টেও দেখা করে দু’জন।
-- সুমন অধরার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
-- অধরা বলল, এই কি দেখ এমন করে?
-- কেন ? তোমাকে দেখি।
-- আমাকে বুঝি আজই প্রথম দেখলে? আগে কখনও দেখ নাই? ইশ কি ঢং যেন নতুন দেখলা!
-- সুমন বলল, আরে তুমিতো আমার কাছে সবসময়ই নতুন।
-- ইশ কথা যেভাবে বলনা ! অধরা মুখ ভেংচাল।
-- এই তুমি মুখ ভেংচাও কেন?
-- ভেংচাবো নাতো কি করব? আমাকে এত পাম দেয়া লাগবেনা।
-- আরে পাম দিলাম কই? তোমাকে যত দেখি ততই নতুন করে তোমার প্রেমে পড়ি।
-- অধরা সুমনের কথা শুনে খিল খিল করে হেসে ফেলল। ইহ তাই না ??
-- হু তাই ।
-- সুমন বলল, এই তোমার হাতটা দিবা?
অধরা সুমনের হাতে হাত রাখল। মেয়েটার স্পর্শে কি যাদু আছে কে জানে? আট বছর হয়ে গেল তবু যতবারই সুমন অধরার হাত ধরে ততবারই এক ধরণের শিহরণ অনুভব করে, যেন আজই প্রথম সে অধরার হাত ধরল।
-- সুমন, তুমি কবে তোমার বাসায় আমাদের বিষয়টা বলবা?
-- কেন এত তাড়া কিসের?
-- অধরা বলল, বারে তাড়া নাইতো কি হয়েছে তাই বলে কি বলবা’না?
-- সুমন বলল, ওকে বাবা বলব।
-- কবে বলবা? সুমন, তুমি আজই বলবা।
-- ওকে ঠিক আছে বাবা, আজই বাসায় গিয়ে মাকে সব বলব।
সুমনের কথা শুনে অধরা বলল, হেহ! তুমি বলবা!? তোমার মত একটা আস্ত ভীতুর ডিম?
অভিমানী কণ্ঠে অধরা সুমনকে বলল, তুমি আমাকে বলতে পারনি সুমন। আমি যদি তোমাকে না বলতাম তাহলে দেখতা, আজ আমি অন্য একটা ছেলের হাতে হাত রেখে পার্কে বসে বাদাম আর ফুচকা খাচ্ছি, আর তুমি দেবদাস হয়ে মাতাল হয়ে রাস্তায় পড়ে আছ। আমারতো মনে হয়, তোমাকে ভালবাসি - বলার মত তোমার মাকেও সব কিছু বলার দায়ীত্বটাও আমাকেই নিতে হবে । অধরা আবার খিল খিল করে হেসে ফেলে।
সুমন মনে মনে ভাবে, সত্যিই তাই, অধরাই সেদিন যদি নিজ থেকে মনের কথাটা না বলত, তাহলে তার নিজের কোনদিনই সাহস হোতনা মনের কথা বলার।
-- অধরা সুমনের বুকে মাথা রেখে অভিমানী কণ্ঠে বলে, তুমি আমাকে কতটা ভালবাস?
-- সুমন বলল, অনেক অনেক অনেক বেশি, যা পরিমাপ করা যায় না।
-- অধরা বলল, আমাকে কখনও ছেড়ে চলে যাবে-নাতো তুমি সুমন?
-- এই দেখ পাগলিটা বলে কি! এই সব কি বল না বল তুমি অধরা! তোমাকে ছেড়ে কই যাব আমি?
শেষ বিকেলের মৃদু হাওয়ায় অধরার এলোমেলো চুল তার গালের উপর এসে পড়ে, সুমন হাত দিয়ে অধরার গাল থেকে চুল সরিয়ে দেয়। এই কাজটা করতে সুমনের খুব ভাল লাগে। :#>
( দ্বীন মুহাম্মদ সুমন -- ১০ এপ্রিল, ২০১৪ )
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:৩৮